সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকা থেকে ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির নগদ ২ লাখ ৮৩ হাজার ৩শ’ ৫০ টাকাসহ ডিবি পুলিশের বরখাস্তকৃত এএসআই সালাউদ্দিন (৩৬)কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১ সদস্যরা। এ সময় তার সহযোগী প্রাইভেটকার চালক মোঃ রনি (৩২)কেও গ্রেফতার করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ২৪ লাখ টাকা মূল্যের অত্যাধুনিক একটি প্রাইভেটকার। এছাড়াও র্যাব সদস্যরা গ্রেফতারকৃত সালাউদ্দিনের কাছ থেকে ১টি ডিবি পুলিশের জ্যাকেট, ১টি পুলিশের আইডি কার্ড ও ৪টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করে। সোমবার ভোররাত পৌঁনে ৪টায় মৌচাক বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। সোমাবার দুপুরে সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীর র্যাব-১১ এর প্রধান কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব-১১ এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক (ভারপ্রাপ্ত সিও) মেজর আশিক বিল¬াহ এ তথ্য জানান। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- এএসপি শাহ মোঃ মশিউর রহমান ও এএসপি মোঃ নাজমুল হাসান।
র্যাব-১১ এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর আশিক বিল¬াহ জানান, গত ২৩ জুলাই র্যাব-১১ এর একটি দল নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) বরখাস্তকৃত এএসআই সালাউদ্দিনের সিদ্ধিরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের বাসায় তল¬াশী চালিয়ে ৫ হাজার ৬শ’ পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রির ৯ লাখ ৪শ’ টাকা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ ও সদর থানায় দু’টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ দু’টি মামলায় সে পলাতক আসামী ছিল।
ভারপ্রাপ্ত সিও আরও জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে গ্রেফতারকৃত এএসআই সালাউদ্দিন স্বীকার করে যে, নারায়ণগঞ্জ ডিবিতে থাকা অবস্থায় তার সঙ্গে টেকনাফের কিছু মাদক ব্যবসায়ীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর থেকে টেকনাফ থেকে নিষিদ্ধ ইয়াবা ট্যাবলেট আমদানি করে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ ও বিক্রি করে আসছিল। এছাড়াও এএসআই সালাউদ্দিন র্যাবকে আরো জানায়, বিভিন্ন এলাকায় ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে সে বিভিন্ন জায়গায় বাসা ভাড়া নিত এবং সেই বাসা ব্যবহার করে তার চালক ও অন্যান্য সহযোগিদের মাধ্যমে ইয়াবা মজুদ করে বিক্রিয় করত। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
জানা যায়, সালাউদ্দিন ২০০৩ সালে কনস্টেবল হিসেবে পুলিশের চাকুরীতে যোগ দেয়। সে এএসআই হিসেবে পদোন্নিতি পেয়েই মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ৮ মাস পূর্ব থেকেই সালাউদ্দিন চাকুরীতে অনুপস্থিত থেকে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ফলে ৮ মাস আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) থেকে সালাদ্দিনকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর থেকে সালাউদ্দিন পলাতক থাকে। পলাতক হলেও সে এখনো নারায়ণগঞ্জ ডিবির এএসআই পরিচয়ে গাড়িতে ডিবি পুলিশের স্টিকার লাগিয়ে ইয়াবা পাচার করে আসছিল। সালাউদ্দিন চাকুরীর চেয়ে মাদক ব্যবসাই তার কাছে অনেক ভালো বলে বিভিন্ন জনের কাছে অবহিত করত।। সালাউদ্দিন গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ জেলায় পুলিশে কর্মরত ছিল। সে ঢাকার নবাবগঞ্জের আগলা কালুয়াহাটি এলাকার জুমনের ছেলে। সালাউদ্দিন নারায়ণগঞ্জের কিলারপুল, সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী ও ঢাকার পোস্তগোলা এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে ইয়াবা ব্যবসা করত। প্রতিটি বাসা কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হতো। তার রয়েছে অত্যাধুনিক তিনটি প্রাইভেটকার। প্রতিটি প্রাইভেটকারের মূল্য ২৪ লাখ টাকা।