আজ রবিবার, ১৭ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সিদ্ধিরগঞ্জে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকৌশলী হাউজিং সোসাইটির ৬২ লক্ষ টাকা আত্মসাত

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
ধর্মীয় লেবাসধারী প্রতারক আমিনুল ইসলাম সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের (পিজিসিবির) প্রকৌশলী হাউজিং সোসাইটির বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। এমনকি সমিতির ৩০ জন সদস্যের নামে থাকা জমি দখলের চেষ্ঠা করে যাচ্ছেন আমিনুল। ভুক্তভোগী সদস্যরা এ বিষয়ে আইনী ব্যাবস্থা গ্রহন করেছেন। কিন্তুু প্রতারক আমিনুল ইসলাম সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এমনকি আদালতকেও অমান্য করে চলছেন বীরদর্পে। আদালতে উপস্থিত না হয়ে মিথ্যা অযুহাত দেখিয়ে ক্ষমতা দেখাচ্ছেন।

তিনি হলেন, পিজিসিবির সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১৩২/৩৩ গ্রিড সাব- স্টেশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম। যিনি দাঁড়ি টুপি রেখে ভন্ড হুজুরের লেবাস ধরে প্রতিনিয়ত মানুষের সাথে প্রতারনা করে চলেছেন। আর তার প্রতারনার শিকার হয়ে সমিতির সদস্যরা সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় সাধারন ডায়েরী করেছেন। তাতেও কোন উপায় না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু এতেও বন্ধ হয়নি হুজুর লেবাসধারী প্রকৌশলী আমিনুলের প্রতারনা। তিনি শুধুমাত্র সমিতির টাকা বেশী আত্মসাৎ করেই থেমে যাননি। বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন মুজিববাগে থাকা প্রকৌশলী হাউজিং সোসাইটির সদস্যদের জমি নিজের দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

ভুক্তভুগী বেশ কয়েকজন সরকারী চাকুরীজীবি জানান, সরকারী চাকুরীর পর নিজের একটি আবাসন সবারই প্রত্যাশা। সেই প্রত্যয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ২৯ জন সদস্য নিয়ে একটি সমিতি গঠন করা হয়। ২০১১ সালের ২৫ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে এই সমিতি। এরপর সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বর্তমান ও সাবেক প্রকৌশলীদের দ্বারা পরিচালিত এই সমিতির মাধ্যমে একটি আবাসিক ভবন নির্মানের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। সমিতির প্রত্যেক সদস্যের জমানো অর্থ সংগ্রহ করে এরজন্য যৌথ মালিকানায় পর্যায়ক্রমে ২৪ শতাংশ জমি ক্রয় করা হয়। তারপর জমির সীমানা নির্ধারনের পর ইমারত নকশা পাশ করিয়ে কয়েকটি পিলারও স্থাপন করা হয়। কিন্তু প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামের প্রতারনার কারনে সমিতির সদস্যরা তাদের আত্মসাতকৃত অর্থ ফেরত চাওয়ায় এখন ঝুলে আছে সেই ভবন নির্মান কাজ।

জানাগেছে, সমিতির সদস্যদের কাছ থেকে আদায়কৃত চাঁদার ৩৬ লক্ষ টাকা, চার লাখ টাকার চেক তার ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে জমা করে এবং জমি ক্রয়ে অতিরিক্ত ব্যয় এবং অডিট রিপোর্টে আরো বিশ লক্ষ টাকাসহ সর্বমোট ৬২ লক্ষ টাকা ভুয়া খরচ দেখিয়ে আত্মসাত করেন প্রতারক আমিনুল ইসলাম। প্রকৌশলী হাউজিং সোসাইটির বর্তমান সভাপতি ইসমাইল হোসেনও সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন।

এই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সমিতির সদস্য ইসমাইল হোসেন গং বাদী হয়ে আদালতে ১টি মামলা দায়ের করেন। অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট এর আদালতে ৬৪০/১৮ নম্বার মামলা দাখিল করেন। গত ২৮ জানুয়ারীর পর ২বার উক্ত মামলার দিন ধার্য থাকলেও বিবাদি আমিনুল ইসলাম গংরা আদালতে হাজির হননি। তারা অপকৌশলের মাধ্যমে সময় ক্ষেপন করছেন বলে অভিযোগ মামলার বাদী পক্ষের। উক্ত মামলার পরবর্তী তারিখ ৯ মে ২০১৯ইং নির্ধারন আছে। মামলার বাদী ও সমিতির সদস্যদের দাবী প্রতারক আমিনুল ইসলামকে আইনের আওতায় এনে আদালতে হাজির করলে সত্য উৎঘাটন এবং বিচার কার্য সহজ হবে।

পাশাপাশি এই প্রতারক আমিনুল ইসলামের উপযুক্ত বিচারের পাশাপাশি আত্মসাতকৃত অর্থ ফিরে পাওয়ার দাবীতে পুলিশ প্রশাসনের আশু পদক্ষেপ দাবী করেছেন সমিতির ভুক্তভুগী সদস্যরা।

এ বিষয়ে প্রতারক আমিনুলের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক সংবাদচর্চা পত্রিকার প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বলেন, ৬২ লক্ষ টাকা টাকা আমি আত্নসাত করেছি এ বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এছাড়াও জমিদখলের বিষয়েও আমি কিছুই জানি না। আদালতের বিষয়টিও আমার জানা নেই।

এ ব্যাপারে সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অডিট রিপোর্টে আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিশাল অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ মিলেছে। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আমরা এই প্রতারক আমিনুলের সুষ্ঠু বিচার ও আমাদের আত্মসাতকৃত আমানত ফেরত দেয়ার দাবী জানাচ্ছি।