নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আজ সকাল ১০ টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা জজ কোর্টের সামানে তরুন সংবাদিক ও ফতুল্লা থানা ছাত্র ফেডারেশনের সদস্য শাহরিয়াজ মাহমুদ শুভ্র’র গ্রেফতারকৃত হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসির দাবিতে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন ফতুল্লা থানার উদ্যোগে বিক্ষেভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে সাকিব হোসেন হৃদয়ের সভাপতিত্বে ও ইলিয়াস জামানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড, নারী সংহতি নারায়ণগঞ্জ জেলার সম্পাদক পপি সরকার, জেলা ছাত্র ফেডারেশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক শুভ দেব, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি কাজী আশিক, ফতুল্লা থানার সদস্য আল-আমিন আত্তারি, সদস্য সাদিক হোসেন, শাহরিয়াজ শুভ্রর সহকর্মি শিমুল মুহাম্মদ, সহকর্মি আফ্রিন হিয়া সহ থানার বিভিন্ন নেতৃত্ববৃন্দ।
সামাশে বক্তারা বলেন, এই দেশের ষোল কোটি মানুষের মাঝ থেকে দিন দিন বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা উঠে যাচ্ছে। প্রতিদিন অসংখ্যা হত্যা কান্ড হচ্ছে কিন্তু কোনটারই সুষ্ঠু বিচার পাচ্ছে না স্বজনরা। দেশের এই পরিস্থিতি আমরা মেনে নিতে পারি না। মুক্তি যুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদ তাদের জীবন দিয়েছিলো একটি স্বাধীন দেশের জন্য, যেখানে মানুষের জীবনের নিরাত্তা থাকবে। স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি থাকবে। কিন্তু আমারা তা কোন ভাবেই এই দেশের বিচার বিভাগ আর আইন প্রশাসনের কর্মকান্ডের মধ্যে দেখতে পাচ্ছি না। আমরা এই অসুস্থ্য-অনিরাপদ ও খুনী রাষ্ট্র চাই না। আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাসা থেকে বের হই। আমরা জানি না আবার নিরাপদে জীবিত অবস্থায় বাসায় ফিরবো কি না। শাহরিয়াজ শুভ্রও বাসা থেকে বের হয়েছিলো সে জানতো না যে তাকে লাশ হয়ে ফিরতে হবে। অতীতের ঘটনা গুলোর যদি সুষ্ঠু বিচার হতো নারায়ণগঞ্জে তাহলে খুনীর শুভ্রকে হত্যা করতে পারতো না। খুনীরা প্রতিনিয়ত রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে তাদের সন্ত্রাসি কাজ অবাদে চালিয়ে যাচ্ছে।
শাহরিয়াজ শুভ্র হত্যাকন্ডের এক মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত চার্জশিট প্রদান করা হচ্ছে না। আমরা অতিতের উদাহরণে দেখেছি যে, বিচার কার্য মন্থর হয়ে গেলে তখন আর সুষ্ঠু বিচার পাওয়া যায় না। শাহরিয়াজ শুভ্রর বিচার কাজে আমরা কোন উল্লেখ যোগ্য ভুমিকা দেখছি না প্রশাসনের। আজ এজাহরের দ্বিতীয় আসামি জালালকে কোর্টে উঠানো হয় ও তার জামিন চাওয়া হয়। বিজ্ঞ আদালত তা নামঞ্জুর করে। আমরা বিচার বিভাগের কাছে দাবী জানাবো যে এই খুনী সন্ত্রাসীদের কোন ভাবেই রায় ঘোষণা না হওয়অ পর্যন্ত যাতে জামিনে বের হতে না পারে। এরা আবার মুক্ত আলো বাতাসে আসলে হয়তো আবার নতুন কোন শুভ্র নতুন কোন ডোবায় ভেসে উঠবে।
সাবেশে জেলা সভাপতি মশিউর রহমান রিচার্ড বলেন, নারায়ণগঞ্জ সহ পুরো বাংলাদেশে এখন বিচার হীনতার সংস্কৃতি বিদ্যমান। এমন অবস্থায় এক শাহরিয়াজ শুভ্র প্রত্যেক নাগরিকের প্রতিনিধি হয়ে আজ আমাদের সামনে হাজির । শুভ্রকে সন্ত্রাসীচক্র কেবল একটি মোবাইল এবং সামান্য কিছু টাকার জন্য নির্মম ভাবে হত্যা করে এবং এই হত্যা কান্ডের এক মাসের মাথায় আমরা দেখতে পেলাম খুনি আসামীরা জামিনের আবেদন করার মত সাহস দেখাতে পারে। যদি প্রশাসন এ মামলার তদন্ত কাজ গুরুত্বের সাথে করতো এবং অভিযোগ পত্র দাখিল করতো তবে আসামীরা এ সাহস পেত না। ত্বকী হত্যা কান্ড থেকে শুরু করে সকল চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের বিচার কাজ এগিয়ে নিতে আমরা প্রশাসনকে নিরব দর্শকের ভূমিকায় দেখি। যোখানে তাদের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। সেখানে আসামীদের বেলায় তাদের কার্যক্রম রহস্যজনক ভাবে মন্থর গতীতে চলে। তাদের এ আচরনে এই প্রকাশ পায় যে প্রশাসনের ছত্র ছায়ায় সন্ত্রাসীরা বেড়ে ওঠে। এই অবস্থায় আমাদের আন্দোলন আমরা জারি রেখেছি এবং ভবিষতেও তা বজায় থাকবে।
