#জনপ্রতিনিধির কারণে সংবাদ বন্ধ থাকবে নাঃ মাহবুবুর রহমান মাসুম
#জনপ্রতিনিধিদের উচিৎ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলা : আবু আল মোরছালিন বাবলা
# দেশের স্বার্থে উচিত সাংবাদিকদের সহযোগিতা করা: মুন্না খাঁন
সংবাদচর্চা রিপোর্ট
এ পি জে আবদুল কালাম ছিলেন ভারতের ১১তম রাষ্ট্রপতি (২০০২-০৭)। মূলত তিনি ছিলেন একজন বিজ্ঞানী। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে শিলংয়ে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ছিলেন চিরকুমার। মৃত্যুর পর যে সম্পদ তিনি রেখে যান তা হলো-কতগুলো বই, ব্যবহৃত কাপড়চোপড়, তাঁর প্রিয় বাদ্যযন্ত্র বীণা, একটি ল্যাপটপ ও একটি সিডি প্লেয়ার। তাঁর কোন টেলিভিশনও ছিল না।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মানিক সরকার। দীর্ঘ ২০ বছর (১৯৯৮-২০১৮) ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর পদে আসীন ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি যে বেতন পেতেন সবই দান করে দিতেন তাঁর দল ‘কমিউনিষ্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া’র তহবিলে। তবে বিনিময়ে পার্টি থেকে তাঁকে ১০ হাজার টাকা মাসিক ভাতা দেওয়া হতো। গত নির্বাচনে পরাজিত হলে তিনি সরকারি বাসভন ছেড়ে দেন এবং বর্তমানে দলের অতিথিশালায় থাকছেন। কারণ তাঁর নিজস্ব কোনো বাড়িঘর নেই। এমনকি তাঁর কোন ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোবাইল ফোনও নেই। মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছেড়ে আসার সময় তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে মাত্র দুই হাজার ৪১০ টাকা পাওয়া যায়। তাঁকে কখনো আয়কর হিসাব জমা দিতে হয়নি।
এই উদাহরণ দুটি উদ্ধৃত করার পেছনে এমন কোন আশা বা উদ্দেশ্য নেই যে নারায়ণগঞ্জের জনপ্রতিনিধিরাও তাঁদের মতো হবেন। এমনটা ভাবার তেমন সুযোগ নেই যে, এ জেলার জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের মতোই এতটা কৃপণ ও নিজেদের প্রতি উদাসীন হবেন? বলাই ষাট! নারায়ণগঞ্জ জেলার মানুষ স্বপ্নেও এমনটা ভাবেননা। এমনটা ভাবলে অন্যরা সন্দেহ করতে পারে যে, এ দেশের মাটিতে তাদের জন্ম কি না।
হাদীস শরীফে আছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা) থেকে বর্ণিত বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, জেনে রেখো! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। প্রত্যেককেই নিজ নিজ দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। জনগণের ওপর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি জনগণের দায়িত্বশীল, সে তার দায়িত্ব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। (বুখারী)
অন্যত্র হযরত মা’কাল (রা) বর্ণনা করেন, আমি বিশ্বনবী (সা)-কে বলতে শোনেছি, তিনি বলেছেন, কোন লোক যদি মুসলিম জনগণের শাসনের ক্ষমতা লাভ করে আর সে তাদের দায়িত্ব পালনে প্রতারণার আশ্রয় নেয় এবং মৃত্যুবরণ করে তাহলে মহান আল্লাহ তার ওপর জান্নাত হারাম করে দেন।
নারায়ণগঞ্জের পূর্বের ও বর্তমানের জনপ্রতিনিধি যারা রয়েছেন তারা কি উপরোক্ত হাদিসকে অনুকরণ করে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্বভার পালন করছেন?
সমাজের সাধারণ জনগণ তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে যেই লোকগুলোকে নির্বাচিত করেন, জনগণ তাদেরকে কী উদ্দেশ্যে নিয়ে ভোট দেন? কেনো তাদেরকে নির্বাচিত করা হয়? প্রকৃতপক্ষে সেই লোকগুলোর কাজ-ই-বা কী? যারা নির্বাচন এলে বাড়ি বাড়ি ভোটভিক্ষা করতে বের হয়, তারা কি জানে কোন সে দায়িত্বভার কাঁধে নিতে নির্বাচন এলে তাঁরা ভিক্ষে চেয়ে বেড়ায়? তারা কি বুঝে না তাদের জিম্মাদারিটা আসলে কী?
নারায়ণগঞ্জের সচেতন নাগরিকদের মতে জনপ্রতিনিধিদের শুধু নির্বাচন এলেই এলাকামুখী হলে চলবে না। তাদের কাছে তৃণমূল মানুষ কি চায়, সেটা তাদের বুঝতে হবে। মানুষের কাছাকাছি যেতে হবে। মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ শুধু নির্বাচন এলে, নির্বাচনের পরে এলাকায় তারা অতিথি পাখি, এমন হলে চলবে না। এটা খুবই দুঃখের যে, অনেক জনপ্রতিনিধিই জনবিচ্ছিন্ন থাকেন। জনগণ তাঁদের নাগাল পায় না। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে জনপ্রতিনিধিদের। জনগণের জন্যই তাঁরা, এটা তাঁদের বুঝতে হবে। জনগণ ভোট দিয়েছে বলেই জনপ্রতিনিধি, এই কথাটা যেন জনপ্রতিনিধিরা ভুলে না যান। আর জনগণকে বুঝতে হবে তাদের ভালোমন্দ। যদি ভোট দেবেন, নিশ্চয়ই তার ভালোমন্দ বিবেচনাবোধ রয়েছে। নইলে তো আর ভোটার হতেন না। জনবিচ্ছিন্ন কেউ জনপ্রতিনিধি হলে জনগণও দায় এড়াতে পারে না। তাদেরই অদূরদর্শিতার ফল হয় তা। জনগণের বিবেচনাবোধ, দূরদর্শিতার ওপরেই নির্ভর করে দেশ ও এবং তাদের ভাগ্য।
সাংবাদিক বিল্লাল আহমেদের মতে, জনপ্রতিনিধিরাও অন্যান্যের মতো এই সমাজের সদস্য। কিন্তু তাঁরা এমন ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়ে থাকেন, যাঁদের মধ্যে সমাজকে নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলি বিদ্যমান। প্রকৃতপক্ষে জনগণ ও দেশকে সেবা করার জন্যই জনগণ তাঁদের নির্বাচিত করে থাকে। ভোটাররা ভোটদানের মাধ্যমে তাঁদেরই প্রতিনিধি নির্বাচন করে যাঁরা তাঁদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবেন বলে জনগণ বিশ্বাস করে। কিন্তু নারায়ণগঞ্জে খুব কম মানুষই এ রকমটি দেখতে পায়, যেখানে প্রতিনিধিরা জনগণের স্বার্থ পূরণে নিষ্ঠাবান হন। এ জেলার নির্বাচনে অনেক অর্থ ব্যয় করতে হয়। তাই নির্বাচিত হয়ে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মুনাফাসহ বিনিয়োগ করা অর্থ সংগ্রহ করতেই জনপ্রতিনিধিরা সর্বাধিক প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। অর্থাৎ রাজনীতিকে অনেকটা ব্যবসায় পরিণত করা হয়। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার কয়েক দিনের মধ্যেই জনগণ ওই উদ্শ্যেটা অনুধাবন করতে শুরু করে। এ দেশের রাজনীতিবিদরা এ পি জে আবদুল কালাম বা মানিক সরকার যেভাবে দেশ ও মানুষের সেবা করে গেছেন তেমন হবেন, তা আশা করার মতো দুঃসাহস কোনো মানুষের নেই। তবে তাঁদের মতো করে কিছুটা পথ এগোলেই সাধারণ মানুষ তাঁদের নিয়ে গর্ববোধ করবে। কারণ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তাঁরাই হতে পারেন দেশ ও মানুষের সেবা করার সর্ব কর্মের অনুপ্রেরণার উৎস, মানসিক শক্তি এবং অদম্য সাহসের জোগানদাতা।
অপর দিকে গণমাধ্যম নাগরিকদের বহুমুখীন যোগাযোগের পাটাতনটি তৈরি করে দেয়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র মানে যেহেতু খোলা সমাজ, তাই মানুষকে এখানে বহু স্তরের বহু পর্যায়ে বহু ধরনের তথ্য আদান-প্রদান করতে হয়। গণমাধ্যম মানুষের জন্য তথ্যের বৃহৃত্তর প্রবেশগম্যতা তৈরি হয়। সরকারকে চোখে চোখে রাখার মধ্য দিয়ে ‘গণতন্ত্রের প্রহরী’র ভূমিকা পালন করে। গণমাধ্যম পাবলিক ডিবেট উসকে, পলিসি এজেন্ডা নির্ধারণ করে, নাগরিক মতামতের ফোরাম তৈরি করেÑযেখানে জনগণ রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণে তাদের ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়। দুর্নীতির ওপর সার্চলাইট ফেলে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাজে স্বচ্ছতা নির্মাণ করে। অমর্ত্য সেন যেমন বলেছেনÑরাষ্ট্রের গণমাধ্যম স্বাধীন হলে ঠেকিয়ে দেওয়া যায় দুর্ভিক্ষও। গণমাধ্যম প্রতিনিয়ত জনপরিসর বাড়িয়ে রাষ্ট্র ও জনগণের মাঝে সেতু গড়ে। প্রতিদিনের রাজনৈতিক ইস্যু/বিতর্ক তুলে ধরে। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতিশ্রুতি মনিটর করে। বহু স্বার্থ বহু কণ্ঠস্বর তুলে ধরে। সরকারের কাজের রেকর্ড, তাদের মিশন-ভিশন, নেতাদের পারঙ্গমতা তুলে ধরে। শাসন প্রক্রিয়ায় জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণকে সম্ভব করে তোলে। জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের উপর অর্পিত দায়িত্ব ভুলে গেলেও গণমাধ্যমের সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা নিজেদের ব্যক্তি জীবনকে দূরে ঠেলে দূর্যোগ, সাধারণ মানুষের দূর্ভোগ, সুখ ও শান্তিতে সমান তালে কাজ করে যায়। যে সকল গণমাধ্যমকর্মীরা নিজেদের ব্যক্তি স্বার্থ, পরিবার-পরিজননের বিষয় বস্তুকে পরিহার করে দেশ ও জাতীয় মঙ্গলের জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে সে গণমাধ্যম কর্মীদেরই পদে পদে হেনাস্তার স্বিকার হতে হয়।
বর্তমানে নারায়ণগঞ্জে যে সকল জনপ্রতিনিধিগণ রয়েছেন তাঁদের অনেকেই অলিখিত ছুটি কিংবা পরিবার-পরিজনের সাথে ব্যাপক সময় অতিবাহিত করেন। সংবাদের প্রেক্ষিতে কোন গণমাধ্যম কর্মী সেই সকল জনপ্রতিনিধিদের মোবাইল ফোন কিংবা সরাসরি বক্তব্য নিতে চাইলে তাঁরা বিভিন্ন কায়দায় তাঁদের ফিরিয়ে দেন। অনেক সময় তাঁরা গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে বিরুপ আচরণও করেন। যাদের মধ্যে অন্যতম নারায়ণগঞ্জ-৪ ও ৫ আসনের দুই সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমান। গত ২১ ফেব্রুয়ারী দৈনিক সংবাদচর্চায় প্রকাশিত একটি সংবাদের বিষয়ে ২০ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে এবং দৈনিক সংবাদচর্চা পত্রিকার পরিচয় দিয়ে তার বক্তব্য নিতে চাইলে তিনি সাংবাদিককে উদ্দেশ্যে করে বিভিন্ন কথা বলেন, তিনি সেলিম ওসমান ঐ প্রতিবেদককে বক্তব্য না দিয়ে প্রতিবেদককে প্রশ্ন করেন, আপনি আমায় ফোন করেছেন, আমার কি অপরাধ, আমি কি এমন অপরাধ করলাম যে আপনি আমাকে ফোন করলেন। অপর দিকে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে বিভিন্ন প্রতিবেদনের জন্য সাংবাদিকরা একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননা এবং সাংবাদিকদের সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে কোন প্রকার সহায়তা করেন। কোন কারনে উপরোক্ত দু’ই সংসদ সদস্যের বিরুপ কোন সংবাদ প্রকাশিত হলে তাঁরা বিভিন্ন সভা-সমাবেশে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সাংবাদিকদের এক হাত নেন। অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন মেয়র আইভীকে কোন বিষয় জানতে চেয়ে ফোন দেয়া হলে তিনি বরাবরের মতোই সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান।
নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, গনমাধ্যেম কর্মীরা কোন জনপ্রতিনিধির কারণে সংবাদ বন্ধ রাখবে না। তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালন করবেই। এছাড়া যে সকল জনপ্রতিনিধিরা ফোন ধরেনা, কথা বলেনা গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে তারা জণগনের পাশে কি করে থাকবেন?
প্রত্যেক নাগরিকের পক্ষে সম্ভব নয় তাদের সমস্যার কথাগুলো জনপ্রতিনিধি কিংবা সংসদ সদস্যদের কাছে তুলে ধরা। যেহেতু সাধারণ মানুষ তাঁদের সমস্যাগুলোকে জনপ্রতিনিধিদের বরাবর উপস্থাপন কতে সক্ষম নয় সেহেতু গণমাধ্যমকর্মীরা সাধারণ মানুষের দূর্ভোগগুলো পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষের নজরে এনে থাকেন। বিশ্লেষণ করলে একটি বিষয় চলে আসে পুরো নারায়ণগঞ্জ শহরটি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন ও সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান এবং শামীম ওসমানের নির্বাচনী এলাকার আওতাভুক্ত। এই শহরের মানুষগুলো তাঁদের বিভিন্ন বিষয় ও সমস্যাগুলো নিয়ে তাঁদের সরনাপন্ন হতে পারে না। কেননা নারায়ণগঞ্জ-৪ ও ৫ আসনের সংসদ সদস্যদের নেই নিজস্ব কোন কার্যালয়। যেখানে তাঁরাই ভ্রাম্যমান সেখানে তাঁদের নির্বাচনী এলাকার সাধারণ ভোটার তথা সাধারণ নাগরিকরা কিভাবে তাঁদের সাক্ষাৎ পাবে সেটাই এখন চিন্তার বিষয়।
যে গণমাধ্যম সরকারের সমালোচনা করবে, যে সাংবাদিক সরকারের ভুলচুক নিয়ে রিপোর্ট করবে, সেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বা সেই সাংবাদিকের নিরাপত্তা আবার সেই সরকারকেই নিশ্চিত করতে হবে। অনেকটা সংসদে বিরোধী দলের অবস্থানের মতো, তারা সংসদে সরকারের কাজের সমালোচনা বা বিরোধিতা করবে, তারা যেন সংসদে তা সুষ্ঠুভাবে করতে পারে, সেই সুযোগ সরকারি দলকেই নিশ্চিত করতে হবে।
দৈনিক সংবাদচর্চার প্রকাশকও সম্পাদক মুন্না খাঁন বলেন, দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে জনপ্রতিনিধিদের উচিত সাংবাদিকদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা। যে সকল জনপ্রতিনিধি জনগণের কল্যাণে কাজ করে না তারা সাংবাদিকদের সাথে দূর ব্যবহার করে। এটা দেশ এবং জাতির জন্য লজ্জার বিষয়।
দৈনিক যুগের চিন্তার সম্পাদক প্রবীন সাংবাদিক আবু আল মোরছালিন বাবলা বলেন, জনপ্রতিনিধিদের উচিৎ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলা। সংবাদ কর্মীদের সাথে কথা বললে সঠিক তথ্য বেড়িয়ে আসবে। যখন জনপ্রতিনিধিরা সংবাদকর্মীর সাথে কথা বলেন তখন নির্দিষ্ট বিষয়টি তথ্য নির্ভরসহ মানুষের কাছে গ্রহন যোগ্যতাও বাড়বে। যে সকল জনপ্রতিনিধিরা ফোন না ধরে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর বলেন এটা ঠিক না। তাদের উচিৎ যখন সংবাদকর্মী ফোন করেন তখন তার সাথে কথা বলা তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা। জনপ্রতিনিধিরা যদি গনমাধ্যমে কর্মীদের সাথে কথা বলে তাহলে সেই বিষয়টি বা সমস্যাটি পরিস্কার হয়ে যায় মানুষের কাছে।
গণমাধ্যমের কাজের জায়গাটি বরাবর কঠিন। গণমাধ্যমের সঙ্গে সব সময় ক্ষমতার একটা দ্বন্দ থাকে। কখনো একটি বেশি, কখনো একটু কম-এটাই তফাত। এ ধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীরা অভ্যস্ত। যদি গণমাধ্যম হিসেবে পাঠকের সঙ্গে সম্পর্কটি আস্থা, বিশ্বাস ও অনুপ্রেরণার হয়, তাহলে বিরুদ্ধ পরিবেশে গণমাধ্যম শক্ত হয়ে দাঁড়াতে পারে। রাষ্ট্র কিন্তু সব সময় জনমতের চাপেই নরম হবেÑ এটা মনে রাখতে হবে। তাই পাঠক বা মানুষের সঙ্গে থেকে গণমাধ্যমকে কাজ করে যেতে হবে। কিন্তু পাঠক যদি বুঝে যায় গণমাধ্যমও চাপের কাছে নতি স্বীকার করে কথা বলছে, তখন সেটি খুব দুঃখের ব্যাপার হবে। তাই গণমাধ্যমকে সব সময় ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হবে।