আজ শুক্রবার, ১৭ই মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শীতবস্ত্র কেনাকাটায় জমে উঠেছে ফুটপাত

শীতবস্ত্র

 

শীতবস্ত্র
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাইছা লন ২’শ, দেইখা লন ২’শ, একদাম ২’শ। শীতের আগমনী বার্তায় এভাবেই জোরে ডাকাডাকি করে ফুটপাত মাতিয়ে তুলছেন হকাররা। শীত যতই ঘনিয়ে আসছে ততই গরম ও ভারী কাপড়ের চাহিদা বাড়ছে। ইতিমধ্যেই নারায়ণগঞ্জ চাষাড়া থেকে শুরু করে ২নং রেল গেট পর্যন্ত জমে উঠেছে ফুটপাতের কেনা বেচা। ফুটপাত থেকে অভিজাত বিপণিকেন্দ্র পর্যন্ত শীতের পোশাকের চাহিদা বেড়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত নিম্নমধ্যবিত্তের ভরসা ফুটপাতে ক্রেতাদের চাপ বেশী লক্ষ্য করা গেছে।
গতকাল রবিবার সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সারা দিনব্যাপি মানুষের চাপ কম থাকলেও সন্ধ্যার পরপরই ক্রেতাদের আনাগনা বেড়ে যায়। বিক্রেতার হাঁকডাক আর ক্রেতা সমাগমে নগরীর শীতের পোশাকের বাজার গরম হয়ে উঠছে। কেউ বলছে এই দোকানের পোশাক ভালো তো কেউ বলছে এই দোকানেরটা ভালো। এভাবেই পাল্লা দিয়ে যে যার মতো বিক্রী করছেন শীতের পোষাক। আর ক্রেতারাও উৎফুল্ল হয়ে কম দামে ভালো পোষাক ক্রয় করছে।
তবে ব্যবসায়ীদের ধারণা, কনকনে ঠান্ডা পড়লেই নতুন শীতের পোশাকের বিক্রি আরও বেড়ে যাবে।
এ বিষয়ে ফুটপাতে ব্যবসায়ী জামাল তালুকদার বলেন, শীত পুরোপুরি না আসতেই লোক সমাগম অনেক বেশী লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবার। শীতের আভাসের কারনেই মূলত সবাই আগে আগেই ভারী জামা কাপড় ক্রয় করতে শুরু করছেন। গত বারের তুলনায় এবার ক্রেতাদের চাপ অনেক বেশী। কারন গতবার কনকনে শীত পড়ার পরে মানুষের চাপে হিমশিম খেতে হয়েছিলো। কিন্তু এবার শীত আসার অনেক আগেই মানুষের চাপ অনেক বেশী। তবে আশা করছি আর কিছু দিন পরেই যখন শীতের প্রভাব একটু বেশী পড়বে তখন আরও চাপ থাকবে ফুটপাতে।
এদিকে ফুটপাতে কম টাকায় ভালো পন্য পাওয়ার কারনে অভিজাত বিপণিকেন্দ্র গুলোতে লোক সমাগম কম থাকলেও মোটামুটি ভালোই বিক্রী হচ্ছে বলে জানিয়েছন দোকানদাররা। তবে ফুটপাতে একটু কমে শীতের পোষাক পাওয়ার কারনেই বেশীর ভাগ ক্রেতা সেদিকেই ছুটছেন। তারপরও ক্রেতাদের কমতি নেই মার্কেট গুলোতে।
এ বিষয়ে সমবায় মার্কেটের দোকানী হিমেল সরদার জানান, মাত্র শীতের আভাস মিলেছে। আর কয়েকদিন পরেই কনকনে ঠান্ডা পড়বে। তবে এখনই ক্রেতারা ভীড় জমাচ্ছেন মার্কেটগুলোতে। মার্কেটের চেয়ে ভালো পোষাক তো আর ফুটপাতে পাওয়া যায় না। ফুটপাতে পোষাকের দাম একটু কম থাকায় বেশীরভাগ মানুষ সেদিকেই ছুটছেন। তবুও শীতের পোষাক বিক্রীর কমতি নেই মার্কেটগুলোতে। আমাদেরও অনেক চাপ সামলাতে হচ্ছে ঈদানিং।
পরিবারের জন্য শীতের পোষাক কিনতে আসা হাবিবুর রহমান জানান, শীত আসলেই আমাদের জন্য ভিন্নরকম একটি উৎসবের ঋতু। কারন শীতে মানুষের স্বাভাবিক জীবন অনেকটা পাল্টে যায়। অন্য সব ঋতুর চেয়ে শীতে সবকিছুর ধরনই অনেকটা পরিবর্তন হয়ে যায়। শীত পুরোপুরি পড়ার আগেই পরিবার নিয়ে শীতের পোষাক কিনতে চলে এসেছি। মানুষের ভীড়ের কারনে যদিও হাটাচলা করতে একটু সমস্যা হচ্ছে তারপরও এটি একটি অন্য রকম আনন্দ বলে তার মনে হয়।
ফুটপাত থেকে কেন শীতের পোষাক ক্রয় করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে ইসমাইল খন্দকার জানান, আমার মতে ফুটপাত আর মার্কেটগুলোতে এক কোয়ালিটির পোষাকই পাওয়া যায়। কারন এর আগে মার্কেট থেকে বেশী দাম দিয়ে পোষাক কিনেছিলাম কিন্তু মান তেমন ভালো ছিলো না। ঈদানিং ফুটপাত থেকেই বেশী কেনাকাটা করি। কারন ফুটপাতে পন্যের দাম যেমন কম থাকে তেমনি পোষাকের মানও ভালো থাকে।
ছোট বড় সব দোকানে থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে নবজাতক আর কিশোর কিশোরীদের রঙিন সোয়েটার, লম্বা প্যান্ট, কানটুপি, জ্যাকেট, ফুলের তেরী মাফলার, হাতমোজা ইত্যাদি। মৌসুমের শুরুতেই এবার বিপণী বিতানগুলোতে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন মাধ্যমে। এক কথায় শীতের আভাসেই পল্টে গেছে নগরীর চিত্র পাশাপাশি জমে উঠেছে শহরের ফুটপাত ও মার্কেটগুলো।