সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সংসদ সদস্য। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগকে শাসন এবং শোষণ করেছেন।
শামীম ওসমানের কারণে সব সময় জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগে দ্বন্দ্ব লেগেই থাকত। ওসমান পরিবারের বাইরে কোন আওয়ামী লীগের নেতা গেলেই তাকে পদচ্যুত হয়েছে অথবা হামলার শিকার হতে হয়েছে। ওসমানদের অত্যাচারে আবার কেউ কেউ দল ছেড়ে অন্য দলে চলে গেছে। বার বার মামলা হামলার শিকার হতে হয়েছে নাসিক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী ও তার সমর্থকদের। নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে পট পরিবর্তন হয়েছে।
তৈরী হয়েছে আওয়ামী লীগের একাধিক শীষ নেতা। জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগে ৩ টি পরিবারের প্রভাব রয়েছে। ওসমান পরিবার, চুনকা পরিবার ,গাজী পরিবার। চুনকা পরিবারের সাথে গাজী পরিবারের মিল রয়েছে। তবে ওসমান পরিবারের সাথে গাজী পরিবারের বিরোধ নেই। চুনকা পরিবারের সাথে ওসমান পরিবারের নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব রয়েছে।
স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর আওয়ামী লীগের মন্ত্রী পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জ বাসী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাজী পরিবার থেকে নারায়ণগঞ্জের মন্ত্রী দিয়েছেন। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ -১(রূপগঞ্জ) আসনের সদস সদস্য বিশিষ্ট শিল্পপতি গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। মন্ত্রী হওয়ার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা শামীম ওসমানের বলয় ছেড়ে গোলাম দস্তগীর গাজীর বলয়ে ভিরতে শুরু করেছেন।
শপথ নেয়ার পর গোলাম দস্তগীর কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক ভিপি বাদল,সহ-সভাপতি নাসিক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী, আরজু ভূইয়া,সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সুফিয়ান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন,সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, যুবলীগের সভাপতি আব্দুল কাদির,আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনিসুর রহমান দীপু, জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউছার আহমেদ পলাশ। এরা এক সময় শামীম বলয়ে রাজনীতি করত । দিন যতই যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রভাব ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিরসন হচ্ছে নারায়ণগঞ্জে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দ্ব›দ্ব। গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেলিনা হায়াত আইভীর সাথে প্রার্থী হওয়াকে কেন্দ্র করে দ্ব›দ্ব লাগে মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের ।
সেই দ্বন্দ্বের মহানায়ক ছিলেন শামীম ওসমান। শামীম ওসমান আনোয়ার হোসেন কে সমর্থন দেয়। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইভীকে গণভবনে ডেকে নিয়ে দলীয় মনোনয়ন দেয়। আর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন কে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করা হয়। জেলা পরিষদের চেয়াম্যানের পদ থেকে বাদ পরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই। সেই থেকে আনোয়ার হোসেনের সাথে আব্দুল হাই ও আইভীর বিরোধ তৈরী হয়। তারা কেউ কারো সাথে কথা বলেন না। কিন্তু গোলাম দস্তগীর গাজী মন্ত্রী হবার পর ওই দুইজনকে দেখা গেছে পাশাপাশি বসতে, সুখের হাসিও দিতে।
৭ জানুয়ারী সোমবার রাতে রাজধানীতে গোলাম দস্তগীর গাজীর বাসায় যান আবদুল হাই, আনোয়ার হোসেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য আনিসুর রহমান দিপু, মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিএম আরাফাত সহ আরো অনেকেই।
গাজীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পর তারা বসেন এক চেয়ারে। সেখানে পাশাপাশি বসেছিলেন আবদুল হাই ও আনোয়ার হোসেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে দুইজন ছিলেন বেশ প্রাণবন্ত। হাস্যোজ্জল অবস্থায় ছিলেন দুইজনই। ফলে তাদের মধ্যে পূর্বের যে অন্তর্গত বিরোধ সেটার ছাপ ছিল না। আর সে দিন থেকে দুর হয় দীর্ঘ দিনে বিরোধ । যে বিরোধ শামীম ওসমান মেটাতে পারেন নাই, সেই বিরোধ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী মিটিয়েছেন। মন্ত্রীর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ।