আজ বুধবার, ২৪শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শামীম ওসমানের বাক্স নেই

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
শামীম ওসমান ডাকলেই বিরাট জমায়েত হয়। তার দ্বারা লাভবান অনুগতরা লোক জোগাড়ে খুব দক্ষ। উপর মহলে দৌড়ঝাপ করে তিনি প্রতিপক্ষের সুবিধা আটকে দিতেও পারেন। শোনা যায়, তিনি চেয়েছেন বলেই, সদর উপজেলার অনেক ইউনিয়নে অনেকে চেয়ারম্যান হয়েছেন। শুধুমাত্র তার অনুগত হওয়ায় পদ পায় অনেকে। এত ক্ষমতার পরও শামীম ওসমানের যা নেই তা হলো-বাক্স।
দীর্ঘদেহী শামীম ওসমান ছাত্র জীবনেই নজর কাড়েন। তার কথার যাদুতে মুগ্ধ হয়ে বলয়ে ভিড়েন অনেকেই। ওই সময় থেকেই লোক জড়ো করতে জুড়ি ছিলো না তার। এ কারনে খুব কম সময়ে দলের কাছে গ্রহনযোগ্য হয়ে উঠেন বলে মনে করে রাজনীতি বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, তিনি যখন সরকারী তোলারাম কলেজের ভিপি তখনই তার অনুগতরা সুবিধা ভোগ করতে থাকেন। এরপর নিজে ভিপি থেকে সরে গেলেও তার বলয়ের কেউ না কেউ ভিপি-জিএস হতো। এতে করে কলেজে ভর্তি, বিভিন্ন প্রকল্পের নানা সুবিধাগুলি তাদের হাতে ছিলো। এরশাদ যখন ক্ষমতায় তখন তার বড় ভাই নাসিম ওসমান জাতীয় পার্টির এমপি হওয়ায় আরও কিছু সুযোগ জুটে তাদের। ওই সময়ের সুফল ভোগ করে শামীম ওসমানের কতিপয় ঘনিষ্ঠ ধনী বনে গেছেন। কেউ কেউ শুধু মাত্র রাজনীতি করেই ঢাকায় ফ্ল্যাট, প্লটের মালিক হয়েছেন। কারও নামে অর্ধ শতাধিক সিএনজি সড়কে চলে। তবে ‘৯৬তে নিজে এমপি হয়ে অনুগতদের সবচেয়ে বেশী সুযোগ দিয়েছেন শামীম ওসমান। সে সময়ে তিনি যা চাইতেন তা হতো। তার ক্ষমতার কাছে স্থানীয়তো বটেই অনেক কেন্দ্রীয় নেতাও তখন নস্যি ছিলেন। যদিও ২০০১ এ দেশের বাইরে চলে যাওয়ার পর সেইসব লাভবান নেতাদের মধ্যে কেউ কেউ শামীম ওসমানের ফোন ধরেননি বলে শোনা যায়। এমনকি বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল বক্তৃতার জন্য ৩শ’ টাকার কার্ড রিচার্জ করতেও কেউ কেউ অনীহা প্রকাশ করতেন।
তবে এখন আর শামীম ওসমানের সেই দুঃসময় নেই। এখন তিনি নিজের ছেলের বিয়েতে অঢেল খরচ করার মতো সামর্থ রাখেন। তিনি নিজ থেকে বিশস্ত দুই আওয়ামীলীগের নেতাকে গাড়ি কিনে দিয়েছেন বলে জানা যায়। তবে এত কিছুর পরও তার বাক্স নেই যা সেলিম ওসমানের রয়েছে। শামীম ওসমানের নির্বাচনী এলাকার অনেকে এ নিয়ে আক্ষেপ করেন।
উল্লেখ্য, শহর-বন্দর নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ- ৫ আসনের এমপি সেলিম ওসমান ঈদুল ফিতরের সময়ে তার নির্বাচনী এলাকায় ৩৮হাজার প্যাকেট ঈদ সামগ্রী দেন। প্রতি প্যাকেট ১টি শাড়ি অথবা ১টি লুঙ্গি, ১ কেজি চিনিগুড়ো চাল, ১ কেজি চিনি, ১ লিটার সয়াবিন তেল, ৪০০ গ্রাম গুড়ো দুধ, ৪০০ গ্রাম লাচ্ছা সেমাই। উল্লেখ্য সেলিম ওসমান ২০১৪ সালে উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মানুষের মাঝে ঈদ উপহার দিচ্ছেন। যার মধ্যে ২০১৪ সালে ২০ হাজার প্যাকেট, ২০১৫ সালে ২৬ হাজার প্যাকেট, ২০১৬ সালে ৫০ হাজার প্যাকেট, ২০১৭ সালে ২০ হাজার প্যাকেট এবং ২০১৮ সালে ২০ হাজার প্যাকেট ঈদ উপহার দেন। চলতি বছর তা বাড়িয়ে ৩৮ হাজার করেন তিনি। তার এই উপহার পেয়ে অনেক মানুষ খুশী। এমনকি তার নিন্দুকেরাও এ বিষয়ে তার সুনাম করেন।
তবে এ নিয়ে আক্ষেপ দেখা যায় তার ছোট ভাই ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের এমপি শামীম ওসমানের এলাকার জনগণের। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলেন, সেলিম ওসমানের মতো আমাদের এমপি হলে ভালো হতো। ওই এমপির বাক্স উপহার পেতাম। শামীম ওসমানের তো কোন বাক্স উপহার নেই। তিনি শুধু বড় বড় সমাবেশ করেন।

সর্বশেষ সংবাদ