আজ সোমবার, ২৪শে আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

শামীম ওসমানের বক্তব্যে ক্ষুব্দ আকরাম কাশেমী

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ভোটের বাকি আর মাত্র ১৪ দিন। জেলা জুড়ে প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন অনেক প্রার্থী। অনেক প্রার্থী ভোটের মাঠে নামতেই পারছেন না বলে জানান দলীয় সমর্থক ভোটাররা। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে সকাল থেকে সন্ধ্যা আবার রাতেও চলে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা বেশ গতিতেই।

ভোটারদের মাঝে আশার আলো জাগছে। নিজেদের ভোট প্রয়োগ করতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা। সে পরিবেশ সৃষ্টিতে প্রশাসন প্রসংশার দাবীদার বলছেন জেলা শহরের অনেক এলাকার ভোটারগণ। আবার অনেকেই বলছেন তার উল্টো কথা। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের বক্তব্য ও মন্তব্য প্রশাসন আমলে না নেয়ায় আচরণবিধি লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে মনে করছেন ভোটাররা।

প্রার্র্থীদের সেসব বক্তব্য বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হলেও তা আমলে না নেয়ায় সাধারন ভোটারদের মধ্যে বেশ আলোচনা সমালেচনার ধুম চলছে। প্রশাসন এসব বিষয়ে খেয়াল করেন কি করেন না তা নিয়েও আলোচনা বইতে শুরু হয়েছে। একজন অপরজনকে ঘায়েল করার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ছে। নির্বাচনীয় আচরণবিধি না মানায় এক প্রার্থী আরেক প্রার্থীকে ঘায়েল করার জন্য নয়ত সাধারন ভোটারদের কাছে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টায় প্রার্থীদের ব্যক্তিগত জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে অনেকে বক্তব্য দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

গতকাল নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বন্দর উপজেলায় সমরক্ষেত্রে সেলিম ওসমানের নির্বাচনীয় সভায় শামীম ওসমান ধানের শীষের প্রার্থীকে জঙ্গি বলেছেন। একটি স্থানীয় পত্রিকায় এ সংবাদটি প্রকাশিত হয়েছে। তিনি আরও বলেছেন, গিরগিটির মতো এত রং বদলায় তা ভাবাই যায় না। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করা কোন সৈনিক আকরামকে ভোট দিবেন না। বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান ১৪ নভেম্বর একেএম সেলিম ওসমানের বক্তব্যে বলেছেন, নির্বাচনের পরে আকরাম সাহেব উত্তরায় চলে যাবেন। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন এলেই আকরাম সাহেবরা বক্তব্যর ফুলঝুড়ি দিয়ে বৈতরনী পাড় হয়। এ কথাগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী জমিয়াতে উলামায়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী ও নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ঐক্যফ্রন্টের আরেক প্রার্থী নাগরিক ঐক্যের উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এসএম আকরাম। নির্বাচনীয় প্রচার প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে তাদের উদ্দেশ করে কঠোর সমালোচনার সংবাদ নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে।

গত ১৪ ডিসেম্বর বন্দরে উঠন বৈঠকে বলেন, বিএনপির নেতারা কার পিছনে থাকবেন ? যার পিছনে থাকবেন তারে তো নির্বাচনের পরদিনই আর পাবেন না। তিনি চলে যাবেন উত্তরা ক্লাবে মদ খেতে। মদদীর কাজ মদ খাওয়া। এসব কথা বলেন, শামীম ওসমান। গত ১২ ডিসেম্বর ফতুল্লার এনায়েত নগরে এক উঠন বৈঠকে একেএম শামীম ওসমান বলেন, এখন আমার নির্বাচনীয় মিটিং না করলেও চলে। কারণ বিএনপি এমন একজন প্রার্থী দিছে আমি তাঁকে খুঁজেই পাই না। তাকে বিএনপিও চিনে না। শুনতে পাওয়া যায় জঙ্গী নিয়ে আসছে নারায়ণগঞ্জে।

১২ ডিসেম্বর বিকালে আরও একটি উঠান বৈঠকে প্রশাসনকে হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, গোফে তাও দিয়ে বসে থাকবেন না। শিবিরের ৫০ জঙ্গী ঢুকেছে, সাবধান। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জে ব্যাপক জঙ্গি তৎপরতা শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন শামীম ওসমান। নারায়ণগঞ্জ-২ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ধানের শীষ নিয়ে লড়বেন নজরুল ইসলাম আজাদ। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ আর্ন্তজাতিক বিষয়ক সম্পাদক। নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের সংসদ আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কার প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুকে হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, আপনার নেতাকর্মী প্রশাসন দিয়ে হুমকি ধামকি দেয়া বন্ধ করুন। প্রার্থীদের ও তাদের সমর্থকদের এতসব বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশ পাওয়ার পরও এখন পর্যন্ত কোন প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা নেয় নি বলে অভিযোগ সাধারন ভোটার থেকে শুরু করে যেসব প্রার্থীদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে।

নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধির ১১ তে বলা আছে, উষ্কানিমূলক বক্তব্য বা বিবৃতি প্রধান, উচ্ছৃংখল আচরণ বা বিস্ফোরক বহন সংক্রান্ত বাঁধা নিষেধ (ক) নির্বাচনী প্রচারণাকালে ব্যক্তিগত চরিত্র হনন করিয়া বক্তব্য প্রধান বা কোন ধরনের তিক্ত বা উষ্কানিমূলক বা মানহানিকর কিংবা লিংঙ্গ, সম্প্রদায়িকতা বা ধর্মানুভূতিতে আঘাত লাগে এমন কোন বক্তব্য প্রধান করিতে পারিবেন না। উপরে আলোচিত বক্তব্য আচরণবিধি লঙ্গন হচ্ছে কি ? এমন প্রশ্ন প্রার্থীদের ও ভোটারদের। এ বিষয়ে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন আমলে নিবেন বলে দাবিও জানান তারা।

ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের এসএম আকরামকে মদুদী ও উত্তরায় ক্লাবে চলে যাবেন মদ খেতে, এমন বক্তব্য দিয়েছেন তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তার সমর্তকরা। বন্দরের কলাগাছিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন প্রধান ১৪ নভেম্বর একেএম সেলিম ওসমানের বৈঠকে তার বক্তব্যে বলেছেন, নির্বাচনের পরে আকরাম সাহেব উত্তরায় চলে যাবেন। তিনি আরও বরেন, নির্বাচন এলেই আকরাম সাহেবরা বক্তব্যর ফুলঝুড়ি দিয়ে বৈতরনী পাড় হয়। এ কথাগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়।

এ বিষয়ে এসএম আকরামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি আইনী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রস্তুতি চলছে। জেলা রির্টানিং অফিসারের বরাবর এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছি। আমি মনে করি আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।

এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কমিশন আতাউর রহমান এর সাথে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের কাছে লিখিত কোন অভিযোগ আসে নি। অভিযোগ আসলে রির্টানিং অফিসারের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। যদি আচরণবিধি লঙ্ঘনের মধ্যে পড়ে। এ বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট দেখবেন বলে জানান তিনি।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ