আজ সোমবার, ২২শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শামীম ওসমানের ইন্ধনে আইভীর উপর হামলা-মাসুম

শামীম ওসমানের

শামীম ওসমানের

সংবাদচর্চা ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জ শহরের ফুটপাতে হকার বসানোকে কেন্দ্র করে ১৬ জানুয়ারি নাসিক মেয়রের শান্তিপূর্ণ মিছিলে অতর্কিত একটি চিহ্নিত রাজনৈতিক সন্ত্রাসী মহল অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এবং পরিকল্পিতভাবে আমার উপর ও শরীফ উদ্দিন সবুজের উপর হামলা চালানো হয়। সেদিন মানবঢাল না করা হলে হয়তো সন্ত্রাসীদের হামলায় মেয়র মহোদয়ের জীবননাশ হতে পারতো। এ ঘটনার নেপথ্যে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধন ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটির কাছে জমা দেয়া লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মাসুম।

লিখিত বক্তব্যে মাহবুবুর রহমান মাসুম বলেন, আপনার তদন্ত কমিটির কাছে বিগত ১৬/১/২০১৮ইং তারিখের ঘটনার বিষয়ে এই মর্মে জানাচ্ছি যে, ১৬/১/২০১৮ইং তারিখে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের জনপ্রিয় ও নির্বাচিত মেয়র ডাঃ সেলিনা হায়াৎ আইভীর নেতৃত্বে ফুটপাত হকারমুক্ত রাখার জন্য ফুটপাতের উপর হাজারো জনতাকে নিয়ে শান্তিপূর্ণ মিছিলে অতর্কিত একটি চিহ্নিত রাজনৈতিক সন্ত্রাসী মহল অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এ সময়ে আমি মেয়রের পাশে ছিলাম।

উল্লেখ্য গত ১৫/১/২০১৮ইং তারিখে গডফাদার হিসাবে চিহ্নিত শামীম ওসমান সভাকরে হকারদের ফুটপাতে বসার জন্য নির্দেশ দেন এবং মেয়রকে বিব্রত করার অপচেষ্টা চালান। শান্তিপূর্ণ মিছিলটি সায়াম প্লাজা অতিক্রমকালে শামীম ওসমানদের প্রধান ক্যাডারদের একজন নিয়াজুল পিস্তল হাতে মেয়রের দিকে তেড়ে আসে এবং তাকে লক্ষ্য করে গুলি করার চেষ্টা করলে উপস্থিত জনতা তাকে প্রতিরোধ করে ও গনপিটুনী দেয়। এ সময় কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাধারণ সম্পাদক এবং শামীম ওসমানের অপর ক্যাডার শাহ নিজাম হাতে পিস্তল নিয়ে শান্তিপূর্ণ মিছিলকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে এবং চাষাড়ার দিক থেকে শত শত রাজনৈতিক সন্ত্রাসীরা ইট পাটকেল লাঠি সোটা, ডাসা ও হকারদের চৌকি ভাংগা তারকাটাযুক্ত লাঠি নিয়ে ব্যাপক হামলা চালায়। এসময় একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী আমার বুকে ডাসা দিয়ে আঘাত করলে আমি রক্তাত্ব জখম হই। এ সময় মেয়র মহোদয়কে বাঁচাবার জন্য মানবঢাল রচনা করে অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি জখম হয়ে তাকে রক্ষা করেন। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শরীফ উদ্দিন সবুজ পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে রাজনৈতিক সন্ত্রাসীদের দ্বারা আক্রান্ত এবং মারাত্মক ভাবে মাথায় রক্তাত্ব জখম হয়। এছাড়া প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। আমি মনে করি সবুজের উপর আক্রোশবশত হয়ে এ হামলা চালানো হয় এবং আমি তাদের টার্গেট ছিলাম। কেননা চিহ্নিত গডফাদার মহলের বিরুদ্ধে প্রেস ক্লাব সব সময় প্রতিবাদ মূখর আছে বলে তারা সুযোগ পেয়ে পরিকল্পিতভাবে আমার এবং সবুজের উপর হামলা করে। সেদিন মানবঢাল না করা হলে হয়তো সন্ত্রাসীদের হামলায় মেয়র মহোদয়ের জীবননাশ হতে পারতো। এ ঘটনায় মেয়র তার দুই পায়ে বড় বড় দুটি ইটের ঢিলার আঘাতে আহত হন। সম্পূর্ণ ঘটনা পুলিশের উপস্থিতিতে হয়েছে। অথচ পুলিশ ছিল সম্পূর্ণ নির্লিপ্ত। বিপুল সংখ্যক পুলিশ পপুলারের ফুটপাত ধরে রাস্তার এক কোণে দাঁড়িয়ে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। হামলার প্রায় ২০/২৫ মিনিটের মাথায় মেয়রের দেহরক্ষী আকাশে ফাঁকা গুলি করলে পুলিশ অবশেষে সক্রিয় হয়। ঘটনার পরে অসুস্থ মেয়রকে নিয়ে আমরা প্রেস ক্লাবে চলে আসি।

আমার মতামত হচ্ছে এ ঘটনার নেপথ্যে নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধন ছিল।

তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জসিম উদ্দিন হায়দারের কাছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ লিখিত জবানবন্দি প্রদান করা হয় বলে জানিয়েছেন মাহবুবুর রহমান মাসুম।