আজ রবিবার, ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

লঞ্চ ব্যবসায়ীদের ‘ঈদ নাই’

বিশেষ প্রতিবেদক:

ভ্যাপসা গরম। তবে নদীর পাশে বয়ে যাচ্ছে হালকা হাওয়া। লঞ্চ আছে, যাত্রী নাই। তাই এক কোণে বসে বিড়ি ফুকঁছে লঞ্চের স্টাফ। কি মামা, কি খবর? বলতেই উত্তর দিলো- আমাগো ‘ঈদ নাই’ ! শুনতে কিছুটা ব্যতিক্রমই লাগলো। পাশের খেয়াঘাটেও প্রচন্ড ভীড়।

এদিকে মার্কেটগুলোতে তিল পরিমান ঠাই নাই। সড়ক থেকে ফুটপাতেও হাঁটা যায়না। যানবাহনে বাড়তি ভাড়ায় নৈরাজ্য। ঈদ বলে কথা। আর সেখানে ‘ঈদ নাই’। হ্যাঁ, গতকাল দুপুরে ১নং টার্মিনাল লঞ্চঘাটে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা যায়।
পল্টুন জুড়ে যেন পিনপতন নিরবতা। আগের মতো যাত্রীদের নাই হই-হুল্লোড়। নেই যাত্রীদের চাপও। হরেক প্রকার মালামাল নিয়ে হকারদের নাই বিকিকিনির ব্যস্ততা। অনেকটাই ফাকা লঞ্চ ঘাট।
কিছুক্ষণ পর পর একজন দুইজন যাত্রী আসলেও লঞ্চের স্টাফরা “মোহনপুর, চাঁদপুর ” সময় মতো ছেড়ে যাবে বলে যাত্রী উঠানোর চেষ্টা করছেন। সময় মতো লঞ্চ চালু হলেও কাঙ্খিত যাএী পাওয়া যাচ্ছে না। তাই লঞ্চের স্টাফরা অলস সময় পার করছেন। লঞ্চের সুপারভাইজার, মাস্টার ও যাত্রীদের সাথে কথা বলে এসব বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এম.ভি শাহ আলী প্লাস এম-১০০৭২ লঞ্চ মালিক শাহজাহান মিজি তিনি জানান, আধা ঘন্টা যাবত বসে আছি কোন যাত্রী লঞ্চে উঠে নাই। নারায়ণগঞ্জ থেকে চাঁদপুর মতলব বাই রোডের কারণে যাত্রী কম গেছে। দাউদকান্দি ব্রীজের কারণে এই সমস্যাগুলো হচ্ছে। মতলব থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত আগের লঞ্চ ভাড়া ছিলো ১৪০ টাকা। এখন ১৮০ টাকা করা হয়েছে । ডিজেল দাম প্রতি লিটার ৬৬ টাকা থেকে বেড়ে ১১০ পর্যন্ত করা হয়েছে। বাসে যেতে সময় কম হলে ও ভাড়া ৩৫০ – ৪০০ টাকা নিচ্ছে। যদিও যাএীরা ঘরের সামনেই নামতে পারে। বীর মুক্তিযোদ্বা নাসিম ওসমান ও পদ্মা সেতু হওয়ার কারনে সমস্যা হয় নাই তেলের দামে বাড়ার কারনেই সমস্যা।

তিনি আরো বলেন, যাএীরা যদি বাসে ঢাকায় আসা যাওয়া করে তখন বাচ্চাদের জন্যও টিকিট কিনতে হবে। আবার সাধারণ যাত্রীরা অল্প টাকায় লঞ্চে ঘুমিয়ে আরামে আসা যাওয়া করতে পারবে। কিন্তু তারা যদি বাসে আসা যাওয়া করে সেক্ষেত্রে প্রায় হাজার খানেক টাকা খরচ হবে। লঞ্চ কেবিন সংখ্যা ১০০টি পুরোটাই খালি এখন।

নারায়ণগঞ্জ তোলারাম কলেজ ও নারায়ণগঞ্জ কলেজের পক্ষ থেকে রোভার স্কাউটের সদস্য সাকিব জানান, যাত্রীদের সেবার কথা চিন্তা করে আমরা এখানে কাজ করছি। যদি ও তেমন কোন চাপ নেই।

মুসফিক -২ লঞ্চ মালিক তিনি জানান, নারায়ণগঞ্জে ৭০ লঞ্চ থেকে ৩০ টাই নষ্ট হয়ে ভাঙ্গারীর কাছে বিক্রি হয়ে গেছে। এখন ৪০ টা আঁছে। তাছাড়া মতলবের যাওয়ার লঞ্চ গড়ে ২ হাজার ও চাঁদপুর লঞ্চে প্রতিদিন ৪ হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে । তারপরেও আমি কোন কর্মী ছাঁটাই করি নাই। মুক্তারপুর ব্রীজটার কারনে সবাই গাড়ি নিয়া মুন্সীগঞ্জ চলে যায়।

এ প্রসঙ্গ নিয়ে লঞ্চ মালিক কমিটির সভাপতি বদিউজ্জমান বাদলের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনিও কথা বলেন একই সুরে। লঞ্চ মালিক গো ‘ঈদ নাই’। ব্যবসা সব নষ্ট হয়ে গেছে। একদিকে তেলের দাম বেড়েছে। তার মধ্যে যাত্রীরা সড়ক পথেই চলাচল করছে। তাই এখন আর লঞ্চের ব্যবসা নাই। ভবিষ্যতে এ ব্যবসা থাকবো কিনা সন্দেহ আছে। লঞ্চও কইমা গেছে।