আজ মঙ্গলবার, ৯ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রূপগঞ্জে হাট কমিটি-ক্রেতাদের প্রতি প্রশাসনের নির্দেশনা

নবকুমার: করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন পুশুর হাটের ইজারাদার, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সচিবদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছে। বৃহস্পতিবার ( ২৩ জুলাই) রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ নুসরাত জাহান, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান ভুইয়া, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা ফেরদৌসী আলম নীলা, রূপগঞ্জ থানার তদন্ত কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সভায় পশুর হাট কমিটির প্রতি বেশকিছু নির্দেশনা ও পরামর্শ দিয়েছে রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন।
নির্দেশনা ও পরামর্শ রয়েছে হাট বসানোর জন্য পর্যাপ্ত খোলা জায়গা নির্বাচন করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই বন্ধ জায়গায় হাট বসানো যাবে না। হাট ইজারাদার কর্তৃক হাট বসানোর আগে মহামারি প্রতিরোধসামগ্রী (যেমন-মাস্ক, সাবান, জীবাণুমুক্তকরণ সামগ্রী ইত্যাদি) সংগ্রহ করতে হবে। পরিষ্কার পানি সরবরাহ ও হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ তরল সাবান বা সাধারণ সাবানের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নিরাপদ বর্জ্য নিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
পশুর হাটের সঙ্গে জড়িত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী ও হাট কমিটির সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। হাট কমিটির সবার ব্যক্তিগত সুরক্ষা জোরদার করা এবং মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। জনস্বাস্থ্যের বিষয়গুলো যেমন-মাস্কের সঠিক ব্যবহার, হাঁচি-কাশি শিষ্টাচার, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়া এবং জীবাণুমুক্তকরণ বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দিতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি সমূহে সার্বক্ষণিক মাইকে প্রচার করতে হবে।
মাস্ক ছাড়া কোনো ক্রেতা-বিক্রেতা হাটের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন না। হাট কর্তৃপক্ষ চাইলে বিনামূল্যে মাস্ক সরবারহ করতে পারবেন বা এর মূল্য নির্ধারণ করে দিতে পারবেন। প্রতিটি হাটে ডিজিটাল পর্দায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি প্রচার করতে হবে। পশুর হাটে প্রবেশের গেট (প্রবেশপথ ও বের হওয়ার পথ) নির্দিষ্ট করতে হবে।
পর্যাপ্ত পানি ও ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পশুর বর্জ্য পরিষ্কার করতে হবে। কোথাও জলাবদ্ধতা তৈরি করা যাবে না। প্রতিটি হাটে সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক এক বা একাধিক ভ্রাম্যমাণ স্বেচ্ছাসেবী মেডিকেল টিম গঠন করে সেবা প্রদানের ব্যবস্থা করা যাবে। মেডিকেল টিমের কাছে তাপমাত্রা মাপার জন্য ডিজিটাল থার্মোমিটার রাখা যেতে পারে যাতে প্রয়োজনে হাটে আসা সন্দেহজনক কোনো আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত চিহ্নিত করা যায়। এছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে রোগীকে আলাদা রাখার জন্য প্রতিটি হাটে একটি আইসোলেশন ইউনিট (একটি আলাদা কক্ষ) রাখা যেতে পারে।
একটি পশু থেকে আরেকটি পশু এমনভাবে রাখতে হবে যেন ক্রেতারা কমপক্ষে দুই হাত দূরত্ব বজায় রেখে পশু ক্রয় করতে পারেন। ভিড় এড়াতে মূল্য পরিশোধ ও হাসিল নেয়া কাউন্টারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। মূল্য পরিশোধের সময় সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়ানোর সময় দুই হাত দূরত্বে রেখে দাঁড়াতে হবে। প্রয়োজনে রেখা টেনে বা গোল চিহ্ন দিয়ে দিতে হবে। সকল পশু একত্রে হাটে প্রবেশ না করিয়ে হাটের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী পশু প্রবেশ করাতে হবে। নির্দিষ্ট সংখ্যক ক্রেতাকে প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে। অবশিষ্ট ক্রেতারা হাটের বাইরে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে অপেক্ষা করবেন। একটি পশু ক্রয়ের জন্য এক বা দুইজনের বেশি ক্রেতা হাটে প্রবেশ করবেন না।

ক্রেতা ও বিক্রেতাদের জন্য নির্দেশনা
ক্রেতা-বিক্রেতা সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। সর্দি, কাশি, জ্বর বা শ্বাসকষ্ট নিয়ে কেউ হাটে প্রবেশ করবেন না। শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থরা হাটে আসতে পারবেন না। পশুর হাটে প্রবেশের পূর্বে ও বের হওয়ার সময় তরল সাবান বা সাধারণ সাবান এবং পানি দিয়ে হাত ধৌত করতে হবে। মূল্য প্রদান এবং হাটে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় কমপক্ষে দুই হাত দুরত্ব বজায় রেখে লাইনে দাঁড়াতে হবে।
পশু কোরবানিকালীন নির্দেশনা
পশু কোরবানির সময় প্রয়োজনের অধিক লোকজন একত্রিত হবেন না এবং কোরবানির মাংস সংগ্রহের জন্য একত্রে অধিক লোক চলাফেরা করতে পারবেন না। পশুর চামড়া দ্রুত অপসারণ করতে হবে। কোরবানির নির্দিষ্ট স্থানটি বেকিং পাউডার দিয়ে ভালোভাবে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।
এসকল নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য রূপগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন মাঠে রয়েছে। টহল দিচ্ছে ভ্রাম্যমান আদালত।
এব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ নুসরাত জাহান বলেন, আমরা সবকিছু মনিটরিং করছি। জনপ্রতিনিধিসহ ইজারাদারদের বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছি।