আজ রবিবার, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রাজাকারপুত্রকে সঙ্গে নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নৌ-বিহার

এ লজ্জা কার? যাদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন করেছেন ,সেই মুক্তিযোদ্ধারা এখন রাজাকারের ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নৌ- বিহার করছে। শুধু তাই নয় ঐ রাজাকারের ছেলের টাকায় মুক্তিযোদ্ধারা আনন্দ ভ্রমণ করছে। এ ঘটনা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জে। শনিবার ( ১৫ ফেব্রুয়ারি) মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ড নৌ-বিহার যায়। যেখানে নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলা এলাকা থেকে প্রায় ৯৫০জন মুক্তিযোদ্ধা অংশ গ্রহন করেছেন। নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম ওসমান নৌ বিহারের নেতৃত্ব দেন। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ ৩ আসনের সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, আইনজীবী ও সাংবাদিক সহ প্রায় ১২’শ মানুষ ওই নৌ-বিহারে সঙ্গী হয়ে ছিলেন।

নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত রাজাকার পুত্র খালেদ হায়দার খান কাজল। তার বাবা ১৯৭১ সালে শান্তি কমিটির সদস্য ছিলো। সে বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি। নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিম ওসমান নৌ বিহারে সহযোগিতার জন্য রাজাকারপুত্র খালেদ হায়দার খান কাজলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন। উনি একজন সংসদ সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা হয়ে এটা কি করতে পারেন? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।

রাজাকারপুত্রকে ঘৃণা প্রদর্শন না করে উল্টো মুক্তিযোদ্ধারা নৌ-বিহারের প্রশংসা করেছেন।

নৌ-বিহারের আনন্দের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে সোনারগাঁও উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এম সামসুল হক(৮৪) আমাদের বর্তমান জেলা কমান্ডার ও সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান আমাদের আনন্দ উল্লাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন এটা স্মৃতি হয়ে থাকে।

বন্দর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা জসিম উদ্দিন আহম্মেদ গোলাপ (৬৯) বলেন, আজকে এই নৌবিহারের অংশ হিসেবে আমরা উল্লাসিত।

আড়াইহাজার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার কাজী ওয়াজ উদ্দিন বলেন, আজকের এই নৌ-বিহার আমার জন্য বিস্তর অনুভূতির। সারা জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে একত্রিত হতে পেরেছি সবার সাথে দেখা এবং হাসি আনন্দের অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়।

সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আমিনুর রহমান তাঁর বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় তৎকালীন নারায়ণগঞ্জ মহকুমা এলাকা জুড়ে তাদের সাংগঠনিক কর্মকান্ডের ইতিহাস তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ আলী বলেন, ১৯৭১ সালে আবাল বৃদ্ধ, ছাত্রলীগ কর্মী, সহ নানা শ্রেনীর পেশার মানুষ বঙ্গবন্ধুর আহবানে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতার পর ৪৮ বছরেও আমরা নারায়ণগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হতে পারিনি।