মোঃ রাসেল ইসলাম,বেনাপোল প্রতিনিধি: কৃষকদের আধুনিক পদ্ধতিতে দ্রুত জমি চাষের মাধ্যম হিসেবে ট্রাক্টর বা কলের লাঙ্গল অতি পরিচিত একটি কৃষিযান। যেটার পরিবর্তে পূর্বে জমিচাষে ব্যবহার করা হত গরুর লাঙ্গল।
কিন্তু সেই কৃষি কাজে ব্যবহারের ট্রাক্টর এখন জমিচাষ বাদ দিয়ে শার্শার সমস্ত জনপদ গুলি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাধাহীন ভাবে। জনজীবন হয়ে দাড়িয়েছে হুমকি হয়ে আতংকিত হয়ে পড়েছে সকল স্তরের মানুষ।প্রশাসনের চােখের সামনে এদের অবাধ চলাচল থাকলে প্রতিরোধে কার্যত তেমন কোন কার্যকারী ব্যবস্থা দেখা যাচ্ছেনা।
চাষাবাদের জন্য আমদানিকৃত ট্রাক্টর,ট্রলি এখন অবৈধ পরিবহন হয়ে গ্রামীণ জনপদে সর্বনাশ ঘটাতে শুরু করেছে। এর প্রভাবে এখন আতংকিত শার্শার জনপদ ও জনসাধারণ। কৃষির উন্নয়নে এসব ট্রাক্টর আমদানি করা হলেও মালিকরা এগুলো ব্যবহার করছে ইট, বালু, মাটি, কাপড়, কাঠ, তরিতরকারি, ফার্নিচার ইত্যাদি মালামাল পরিবহনের কাজে। ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচল জন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা-ঘাট ভেঙে চুরমার করে ধুলায় পরিণত করে দিচ্ছে। কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে ওই যন্ত্রের দ্বারা তৈরীকৃত পরিবহন দিয়ে সেই মাটি ইটভাটায় সরবরাহ করছে। প্রতিনিয়ত জমি খুড়ে মাঠ থেকে বালু এবং মাটি বহন করে নিয়ে যাচ্ছে এলাকার বিভিন্ন ইট ভাটায়। দাপিয়ে বেড়াচ্ছে শার্শার সকল জনপদ।
ট্রাক্টর,ট্রলি বিরামহীন চলাচলে গ্রাম ও শহরের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। মাঝে মাঝে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে পথচারীদের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে । সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে স্কুলগামী কোমলমতি ছোট ছেট শিশুদের পথচলা। বিশালাকৃতির চাকাওয়ালা ট্রাক্টর সনদবিহীন চালকরা বেপরোয়া গতিতে চালিয়ে যায়। ফলে রাস্তা-ঘাটে চলাচলকারী মানুষ সার্বক্ষণিক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে চলাচল করছে।
জানা যায়, দেশের কৃষি উন্নয়ন তথা চাষাবাদের কাজে ব্যবহার করার জন্য এসব ট্রাক্টর বিদেশ থেকে আমদানির সুযোগ দেয় সরকার। এসব ট্রাক্টর,ট্রলি ইটভাটার মালিক, মাটি ও বালু ব্যবসায়ী, কাঠ ব্যবসায়ী, লোহা ব্যবসায়ী, শিল্প মালিকসহ সাধারণ পরিবহন ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে এটি কৃষিকাজে ব্যবহার না করে তাদের ইচ্ছেমতো কাজে ব্যবহার করছে। বর্তমানে এই ট্রাক্টর,ট্রলির সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া ট্রাকের চেয়ে ট্রাক্টরের ভাড়া কম হওয়ায় এর চাহিদাও বেড়েছে বহু গুণ। ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রয়োজন না হওয়ায় ২০ থেকে ২৫ বছরের শিশু-কিশোররাও অদক্ষ ভাবে এসব ট্রাক্টর অবাধে চালাবার সুযোগ পাচ্ছে। বেপরোয়া গতি ও কানফাটা আওয়াজে চলাচলকারী এসব ট্রাক্টরের কারণে ব্যাপকভাবে পরিবেশ দূষণ দেখা দিয়েছে। সনদবিহীন ট্রাক্টর ড্রাইভারদের ভয়ে সচেতন মানুষ সার্বক্ষণিক আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করছে। বিশাল চাকার এই কৃষিযান রাস্তায় চলাচলের সময় কার উপর গিয়ে উঠে তা বলা মুশকিল।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কেউ কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না বলে দাবি করেছেন এলাকার সচেতন মহল। তাই এলাকার সচেতন মহলের দাবি, ওই সমস্ত কৃষিযান ট্রাক্টর কৃষি জমি চাষাবাদের কাজে আবদ্ধ রেখে জনসাধারণকে নিশ্চিন্ত চলাচলের ব্যবস্থা করা হোক।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পুলক কুমার মন্ডল বলেন ,জনগনের ভোগান্তি হয় এমন কোন কাজ বরদাশত করা হবেনা।জনগনের জান মাল নিরাপত্তায় যথাযথ সব ধরনের কার্যকারী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।