গাইবান্ধা প্রতিনিধি
সাঘাটায় যমুনা ও কাটাখালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ড্রেজার মেশিন বসিয়ে ওই দুটি নদীর তীর রক্ষা প্রকল্প এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘদিন ধরে এভাবে বালু উত্তোলন করে একটি চক্র অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে যমুনা তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এবং ত্রিমোহনী, পাকুরতলা ও সতিতলা ব্রিজসহ নদীর তীরবর্তী জনবসতি এবং ফসলী এলাকা ভাঙন ঝুঁকিতে পড়েছে। বালু উত্তোলনের বিষয়ে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার জানিয়েও কোন প্রতিকার মেলেনি।
জানা গেছে, অবৈধ বালু উত্তোলনকারিরা প্রশাসনের অবহেলা, নির্লিপ্ততার সুযোগ নিয়ে যমুনা নদী থেকে গোবিন্দী, হলদিয়া, হাসিলকান্দি, নলছিয়া, গোবিন্দপুর, দক্ষিণ উল্যা (বড়মতাইড়), কাটাখালী নদীর ত্রিমোহনীঘাট, রামনগর ঘাট, সতীতলা ঘাট, ইলিয়াছের ঘাট, শংকরগঞ্জ ঘাট ও মেলান্দহ ঘাট ফলিয়াদিগর পাকুরতলা ঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে এভাবে অবৈধ পন্থায় বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে। এলাকার প্রভাবশালী এই অবৈধ বালু ব্যবসায়ি চক্রটি যমুনা ও কাটাখালি নদীর বিভিন্ন স্থানে রাবার ড্রামের উপর ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর তলদেশ থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এলাকাবাসির অভিযোগ, সরকারি অনুমোদন ছাড়াই সংঘবদ্ধ চক্রটি যমুনা নদীর তীর রক্ষা প্রকল্প এলাকার ৪টি পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলন অব্যাহত রাখার ফলে ওই এলাকায়গুলো দেবে গিয়ে নদীর তীর রক্ষা প্রকল্পসহ বিপুল সংখ্যক জনবসতি পূর্ণ এলাকা ভাঙ্গন কবলিত হয়ে পড়েছে।
এব্যাপরে জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোন ফল পাওয়া যায়নি বলে স্থানীয় বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। বালু খেকো প্রভাবশালী চক্রটি কাঁটাখালী নদীর উপর নব নির্মিত ত্রিমোহনী ব্রিজ, মেলান্দহ ব্রিজ, সতিতলা ব্রিজ, পাকুরতলা ব্রিজ এলাকাতেও অব্যাহতভাবে বালু উত্তোলন করছে। ফলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১শ ৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনা নদীর রক্ষা প্রকল্প ও ২৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে কাঁটাখালী নদীর উপর নির্মিত ত্রিমোহনী ব্রিজ ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। শুধু তাই নয়, এসব এলাকা থেকে উত্তোলন করে ডাম্পার ট্রাকে করে তা নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। বালু বোঝাই এসব ডাম্পার ট্রাক অতিরিক্ত চলাচলের ফলে এলাকার রাস্তাগুলোর বেহাল অবস্থা দাড়িয়েছে।
নদী রক্ষা প্রকল্প এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান জানান, সাঘাটা থানায় এব্যাপারে জিডি করা হয়েছে। কিন্তু বালু উত্তোলন বন্ধ করা যায়নি। উপজেলা নিবার্হী অফিসার উজ্জল কুমার ঘোষ নদী থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে এলাকাবাসির অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে সদুত্তর দিতে পারেননি।