সামিতুল হাসান নিরাক
বিশুদ্ধ পানি সংকট শহরময়। এদিকে ওয়াসার পানিতে দুর্গন্ধ, পান করার মতো উপযোগী নয়। এই পানি দিয়ে গোসল করলে শরীরের মধ্যে দুর্গন্ধ থেকে যায়, মুখ ধৌত করলে চোখ জ্বলে। দুর্গন্ধযুক্ত এই পানির কারণে পেটে পীড়া ও চর্মরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নগরবাসী।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সাদা পাত্রে পানিকে স্বচ্ছ দেখা গেলেও ওয়াসার পানি দেখা যায় কালো ও ময়লা। এই পানি দিয়ে রান্না করা যায় না। রান্না করার জন্য দূর থেকে ব্যাক্তি মালিকানা পাম্পে ভির জমাচ্ছে এলাকাবাসী। পানি সংগ্রহ করার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাড়াতে হচ্ছে। এতে করে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কেউ কেউ দোকান থেকে পানি কিনে ব্যবহার করে। তার জন্য সাধারণ মানুষকে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা।
দেওভোগের স্থানীয় বাসিন্দা লিজা আক্তার বলেন, ওয়াসার পানিতে খুব দুর্গন্ধ। এই পানি দিয়ে কোনো কাজ করা যাচ্ছে না। রান্না করার জন্য আশপাশের এলাকা থেকে ডিপ টিউবওলের পানি সংগ্রহ করে রান্না করতে হয়। খাবার পানি কিনে খাই। এর জন্য সংসারে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হচ্ছে। বাসা ভাড়ার সাথে পানির জন্য আলাদা টাকা দিতে হয়। এটা এক ধরনের জুলুম বলা যায়। যেখানে পানি পাচ্ছি না সেখানে পানির বিল দেয়ার কোনো মানেই হয় না। এর একটা ব্যবস্থা হওয়া দরকার। সে জানায়, ‘এ পানি দিয়ে মুখ ধুইলে চোখ জ্বলে।’
ওই বাড়ীর মালিক ইসমাঈল হোসেন জানান, ওয়াসার দুর্গন্ধময় পানি পান করার মতো না। এই পানি দিয়ে কোনো কাজ করা যায় না। অথচ মাস শেষে পানির বিল ঠিক সময়ে গুনতে হচ্ছে। দেখলাম ওয়াসার ওয়েবসাইটের বিজ্ঞপ্তিতে পানির দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। কেনো দাম বাড়িয়েছে সেটি উল্লেখ করেনি। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ দাম বাড়াচ্ছে ঠিকই কিন্তু সে অনুযায়ী সার্ভিস দিচ্ছে না। ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এভাবে যদি আমাদের উপর সবকিছু চাপিয়ে দেয়া হয়। তাহলে আমরা কার কাছে গিয়ে অভিযোগ করবো।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. আবুল আমিন বলেন, ওয়াসা সবে মাত্র নাসিকের আওতায় এসেছে। গত বছরের ৩১ অক্টোবর আমরা দায়িত্ব বুঝে নিয়েছি। আমাদের ৩১টা পানির পাম্প আছে। সেগুলো নিয়ে কাজ চলছে। নতুন বিল্ডিং, কোথাও কোনো লাইনে ছিদ্র আছে কিনা, কোনো অবৈধ লাইন আছে কিনা সব বিষয়েই আমরা তদারকি করছি। আশা করি খুব শীঘ্রই এর একটা সুফল দেখবে নগরবাসী।