সংবাদচর্চা রিপোর্ট :
গত ২৫ জুলাই আড়াইহাজার পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের নির্বাচন শেষ হয়েছে। নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে বশীর উল্যাহ ১৫০৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে।তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়া পেয়েছেন ২৯০ ভোট।
নির্বাচনের দিন বিজয় মিছিল করা কেন্দ্র করে স্থানীয় আবু তালেবের ছেলে সিয়াম (১০)কে হত্যা করা হয়েছে বলে অপ্রচার চালিয়ে পরাজিত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়ার বাড়িতে বিজয়ী প্রার্থী বশীর উল্যাহ সমর্থকরা হামলা করে বিপুল পরিমাণ মাল লুট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নির্বাচনের পাঁচদিন পর সোমবার রাতে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের লোকজন জিম্মি দশা থেকে মুক্ত হয়ে থানায় ৩৭ জনের নাম উল্লেখ্য করে অজ্ঞাত আরও ২০০ জনকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে পুলিশ মামলা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
মুক্তিযোদ্ধার ছেলে ও থানা মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডারের সাংগঠনিক সম্পাদক নবী হোসেন জানান, তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়া আড়াইহাজার পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড থেকে ‘উটপাখী’ প্রতীকে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছেন। ২৫ জুলাই নির্বাচনের দিন দুপুর ১১টায় কারচুপির অভিযোগ করে নির্বাচন বর্জন করেন। পরে হঠাৎ করেই পাঞ্জাবী প্রতীকের বিজয়ী প্রার্থী বশীর উল্যাহ ও তার লোকজন স্থানীয় গাজীপুরা এলাকার আবু তালেব মিয়ার ছেলে সিয়াম (১০) কে হত্যা করা হয়েছে বলে এলাকায় প্রচার চালায়। এছাড়াও একই সময়ে মুকুন্দী এলাকার গাফ্ফার, গাজীপুরা এলাকার মহসিনকে হত্যার অপপ্রচার চালিয়ে ওইসব এলাকার লোকজনকে আমাদের বাড়িতে হামলার করার উস্কানি দেওয়া হয়েছে। পরে দা, কুঁড়াল চাপাতি ও লাঠিসোটা নিয়ে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০জন লোক বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় দুই ঘন্টাব্যাপী তান্ডব চালিয়ে ব্যাপকভাবে ভাংচুর করাসহ লুটপাট করা হয়।
তিনি আরও জানান, ঘটনার পর থেকে তাদের পরিবারের লোকজনকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে। এলাকাবসীর সহযোগীতায় জিম্মি দশা থেকে সোমবার রাতে মুক্ত হয়ে ৩৭জনের নাম উল্লেখ্য করাসহ অজ্ঞাত আরও ২০০ জনকে আসামি করে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু পুলিশ কোন ব্যবস্থাই নেয়নি। নবী আরও জানান, এক সময় যারা বিএনপির ও জায়াতের রাজনীতি করতেন তারাই এখন প্রকৃত আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ওপর হামলা চালিয়েছেন। আমি সরকারের কাছে এর বিচার দাবী করছি।
আড়াইহাজার থানা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক লাল মিয়া মুঠোফোনে জানান, ২৫ জুলাই দুপুর ১১টায় নির্বাচন বর্জন করেছি। পরে বিজয়ী প্রার্থী বশীর উল্যাহর লোকজন তার বাড়িতে তান্ডব চালায়। এসময় হামলাকারীরা ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও ৫ ভরিস্বর্ণ লুট করে নিয়ে গেছে। আমি এর সঠিক বিচার দাবী জানাচ্ছি।
এ ব্যাপরে বিজয়ী কাউন্সিলর বশীর উল্যাহ মোবাইলে সংবাদচর্চা বলেন, মুক্তিযোদ্ধা লাল মিয়ার বাড়ির উপর হামলা করে মাল লুট করার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট। নির্বাচনে পরাজিত হয়ে সে মিথ্যাচার করছে নির্বাচনকে বিতর্কীত করার জন্য। আমার সমর্থকরা মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলা করে নাই।
সিয়ামের মা দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, আমার ছেলে সিয়াম নির্বাচনের দিন বিজয়ী প্রার্থীর লোকজনের সাথে বিজয় মিছিল করতে গেছিলো ।ভয়ে আমার ছেলে অন্য জায়গায় পালিয়ে ছিলো ।আমার ছেলে কে পরাজিত প্রার্থী লোকজন মারে নাই কিন্তু অন্য ছেলেদের মারছে।
আড়াইহাজার থানার ওসি এম এ হক দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে হামলার একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে ।তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।