আজ বৃহস্পতিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রশ্নপত্র ফাঁস ও অর্থ জালিয়াতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক মিজানকে বরখাস্ত

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড, একটি শিক্ষিত মানুষ অসংখ্য মানুষকে শিক্ষিত করে আলোর পথ দেখাতে পারে। প্রত্যেক বাবা-মা চায় তার সন্তান যেন ভাল ফলাফল করে একজন বড় মাপের মানুষ হয়ে দেশ ও জাতির উন্নয়নের হাল ধরতে পারে। সেজন্যেই বাবা-মা তার সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনায় কোন ভাল শিক্ষকের শরণাপন্ন হয়। আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হলে প্রয়োজন নৈতিকতা, স্বচ্ছতার মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন করা। প্রত্যেক শিক্ষার্থীই ভাল ফলাফল করতে চায়, ভাল করে পড়শুনা ও শিক্ষকের নৈতিকতার মাধ্যমে সম্ভব ভাল ফলাফল করা এসকল বিষয় আমাদের সবারই জানা, কিন্তু সেই সুযোগের অসৎ ব্যবহার করেছিলেন আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে যাওয়া নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লার মামুদপুর আদর্শ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান।

প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান শিক্ষার্থীদের উজ্জল ভবিষ্যৎ নষ্ট করে তার কাছে প্রাইভেট পড়ার জন্য শিক্ষার্থীদের চাপ প্রয়োগ করতেন , এমনকি যেসমস্ত শিক্ষার্থী তার কাছে না পড়তো তাদের কম নাম্বার অথবা ফেল করিয়ে তার কাছে পড়তে বাধ্য করতো এমন অভিযোগ ছাত্র-ছাত্রীদের। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে সকল শ্রেণির প্রশ্ন তার কাছে থাকার সুযোগে যেসকল শিক্ষার্থী তার কাছে পড়তো তাদের পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগেই প্রশ্নপত্র দিয়ে দিতেন বলে জানা যায়। অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে রেজিষ্ট্রেশন ও ভর্তির নিশ্চয়তা দিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করতেন।

তার এসকল অনিয়ম ও দূর্নিতীর অভিযোগের প্রতিবাদ করায় গত ৩০ শে জুন, ২০১৮ ইং এক সহকারী শিক্ষককে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে চাকরীচুত্য করা হয়। একই বিষয়ে অভিযোগ করায় আরেক সহকারী শিক্ষককেও চাকরীচ্যুত করা হয়। তার এই সমস্ত বিষয়গুলো অভিভাবক ও সচেতন মহলের নজরে আসলে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম (সাবেক ইউপি সদস্য) বিষয়টি খতিয়ে দেখে তাকে গত ১ লা জুন ২০১৯ তারিখ থেকে বরখাস্ত করেছেন ।

এই বিষয়ে মামুদপুর আদর্শ স্কুলের সভাপতি মোঃ নজরুল ইসলাম দৈনিক সংবাদচর্চার এই প্রতিবেদককে জানান, মিজানুর রহমান আমার বিদ্যালয়ের অনেক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। প্রশ্নপত্র ফাঁস ও নানান অভিযোগ আমি জানতে পেরেছি। তাকে একাধিকবার সতর্কও করেছি, কিন্তু সে সংশোধন হতে ব্যর্থ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের উজ্জল ভবিষ্যৎ কামনায় তাকে বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

মিজানুর রহমানের ষড়যন্ত্রের শিকার সাবেক সহকারী শিক্ষক জানান, বিদ্যালয়টি নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। নিজের সততা নিষ্ঠার সাথে পাঠদান করাচ্ছিলাম, কিন্তু মিজানুর রহমানের ষড়যন্ত্রের কারনে আমি শিক্ষার্থী প্রিয় হয়েও থাকতে পারেনি। কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার কাছে প্রধান শিক্ষকের প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি জানালে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ এর কথা চিন্তা করে আমি তার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে অভিযোগ করেছিলাম , কিন্তু সে পাল্টা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করে । মহান আল্লাহ তায়ালা পাপীদের বিচার অবশ্যই করেন। আমি বিদ্যালয়টির উজ্জল ভবিষ্যৎ কামনা করি ও আমার প্রিয় শিক্ষার্থীরা যেন তাদের স্বপ্নচূড়ায় পৌছাতে পারে দোয়া করি।