সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
বিগত বছরগুলোতে দুর্গাপূজা এলে মামলার ভয়ে লুকিয়ে থাকতেন বলে জানিয়েছেন । তিনি বলেন, মনে হতো এই বুঝি একটি পক্ষ আমাদের বিরুদ্ধে মন্ডপে হামলার মামলা দিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, আপনারা (হিন্দুরা) সবসময় কাদের দ্বারা নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছেন, তা আপনারা জানেন। কিন্তু সেগুলোর দায় আমাদের উপর দেওয়া হয়েছে। যখনই দুর্গাপূজা আসতো তখন আমরা ভয়ে লুকিয়ে থাকতাম। এই মনে হয়, মণ্ডপে একটি ঘটনা ঘটিয়ে, একটি পক্ষ আমাদেরকে আসামি করিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে। আর বলা হতো, বিএনপি ও জামায়াত হলো ধর্ম-বিদ্বেষী রাজনৈতিক দল। কিন্তু আপনাদের জমি-জমা-সম্পদ ওরাই দখল করেছে বেশি। কোন বিএনপি, জামায়াত নেতা আপনাদের জমি দখল করে নাই। বুধবার সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভায় তিনি একথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “গত বছর সিদ্ধিরগঞ্জের আটটি পূজামণ্ডপের মধ্যে ছয়টিতে গিয়ে আমার ব্যক্তিগত সামর্থ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করেছি। আমি একটি কথা বলেছিলাম যে, সনাতন ভাই-বোনেরা পুরোনো কাপড় পরে অন্তত দশমীর দিন যাতে আসতে না হয় সেই ব্যবস্থা আমি করে দিবো এবং তা করে দেই।
তিনি আরও বলেন, “কিছুদিন আগে লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলের ওইখানে একটি মাঠে খেলার অনুষ্ঠানে গেলে ওইখানকার নেতারা বক্তব্যের মাধ্যমে কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এইটার সমাধান করা উচিত।”
হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে উদ্দেশ্য করে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক বলেন, “হিন্দু ভাইদের জন্য সকলে মিলে কাজ করে। কিন্তু আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালনের জন্য তো প্রশাসনের এতো লোক পাই না। আপনারা অনেক সৌভাগ্যবান। সকলে মিলে কাজ করে এবং ধর্মীয় উপসনালয়ে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়। কই আমাদের মসজিদে তো কোনো অনুদান দেয় না। আপনারা এদেশের নগরিক, ভোটার, আমিও এদেশের ভোটার, নাগরিক। কিন্তু আপনি বাড়তি সুবিধা নিচ্ছেন তারপরেও আপনারা কারও দ্বারা অতি-উৎসাহিত হয়ে এমন কোন ন্যারেটিভ তৈরি করবেন না যে, আপনাদের উপর জুলুম বা অন্যায় করা হয়েছে। এসব থেকে বিরত থাকবেন।”
জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতিমূলক সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সচিব নূরে কুতুবুল আলম, সেনাবাহিনীর মেজর আয়াজ উদ্দিন, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জামায়াতে ইসলামী মহানগরের আমীর মাওলানা আবদুল জব্বার, সাবেক আমীর মাওলানা মাঈনুদ্দিন আহমাদ, ইসলামী আন্দোলন মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহ, গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়কারী তরিকুল সুজন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জেলা সমন্বয়কারী আব্দুল্লাহ আল-আমিন, দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক শওকত আলী, জেলা সংগঠক আহমেদুর রহমান তনু, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক বীর মুক্তিযোদ্ধা শংকর কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন, পূঁজা উদযাপন ফ্রন্ট জেলার আহ্বায়ক বিপ্লব কুমার সাহা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সদস্য সচিব জাবেদ আলম প্রমুখ।

