আজ শুক্রবার, ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মাদ্রাসায় শিশুরা অনিরাপদ !

নাজিফা আনজুম প্রমি :

মাদ্রাসার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোকে বলা হয় ইসলামিক জ্ঞানের ভান্ডার। ধর্ম ও ইসলামিক বিষয়ে চর্চা করার জন্য ছোট বেলা থেকেই শিশুদের কে যুক্তকরা হয় মাদ্রাসায় শিক্ষায়। শিশুরা শারীরিক ও মানসিক ভাবে কোমল মতি হওয়ায় স্নেহ, মমতার মাধ্যমে শিক্ষাদান করাতে বলা হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। তবে সাম্প্রতি বিভিন্ন স্থানের মাদ্রাসা গুলোতে অমানবিক আচরণ, যৌন নিপীড়ন, ধর্ষন, শারীরিক শাস্তি, বলৎকার, খুনসহ ঘটে যাওয়া নানা ঘটনায় মাদ্রাসাতে শিশুরা অনিরাপদ হয়ে পড়ছে বলে গনমাধ্যমে মন্তব্য করছেন শিশু বিশেজ্ঞরা।

শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, দেশে দাখিল মাদ্রাসা রয়েছে ৬ হাজার ৫শ ৫৩টি। ২০১৮ সালের তথ্যানুযায়ী এসব মাদ্রাসায় মোট শিক্ষার্থী ছিল ১৩ লাখ ৫২ হাজার ৫শ ৯০জন। ইবতেদায়ী পর্যায়ে শিক্ষার্থী ২০ লাখ ২৭ হাজার ৪শ ৫৫জন। অপরদিকে কাওমি মাদ্রাসার পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যায়, এসব মাদ্রাসায় ইবতেদায়ী পর্যায়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৪লাখ। এখানে পুরুষ শিক্ষার্থী ৭৫ দশমিক ৭২ শতাংশ আর নারী শিক্ষার্থী ২৪ দশমিক ২৮ শতাংশ।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় মাদ্রাসা গুলতে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা কোন অংশেই কম নয়। তবুও শিশুদের শতভাগ নিরাপত্তা প্রদান নিশ্চিত করা হচ্ছে না। কতিপয় কিছু শিক্ষক নামের নরপশুদের জন্য শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের ভঁয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে প্রতিষ্ঠানে অধ্যারত কালে।

জানা গেছে, গত বছরের ১৫ আগস্ট ,ঝালকাঠি সদর উপজেলার তের আনাশাহ মাহমুদিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে ৮ম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ এর দায়ে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শিক্ষক ওই ছাত্রীকে দীর্ঘ দিন ধরে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে যৌন নির্যাতন করে আসছিল। এর আহে পাঁচ দিন পরেই ২০ আগস্ট টাঙ্গাইল পৌর এলাকার কেন্দ্রীয় কবরস্থান মসজিদদারু সুন্নাহ এতিম খানা মাদ্রাসার ১০ বছরের এক ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় প্রতিষ্ঠানটির এক শিক্ষক কে। এছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষার্থী নুসরাত হত্যার ঘটনা তো আছেই।

এদিকে গনমাধ্যমে শিশু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত এক বছরে মাদ্রাসাও এতিমখানার শিক্ষক কর্তৃক কয়েকশ ধর্ষণ, বলাৎকার ও যৌন হয়রানির ঘটনা সামনে এসেছে। শহরের মাদ্রাসা গুলোর তুলনায় গ্রামাঞ্চলের মাদ্রাসা গুলোতেই এসব ঘটনা বেশি ঘটছে। মেয়ে শিশু ছাড়াও ছেলে শিশুর উপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা আবাসিক স্কুল ও মাদ্রাসা গুলতে বেশি হচ্ছে। এসব স্থানে শিশুরা কেমন থাকে, কি আচরনের শিকার হয় তার খুব একটা প্রকাশ পায় না। অনেক মাদ্রাসায় শিশুরা অনিরাপদ ভাবে রয়েছে। এখন মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।