আজ সোমবার, ৩রা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

এমপির জিহাদ, এসপির জিরো টলারেন্স ঘোষণার পরও চলছে জমজমাট মাদক ব্যবসা

মাদক ব্যবসা

 

মাদক ব্যবসা

সৈয়দ মো: রিফাত, না’গঞ্জ

আগের মতো খোলামেলা না হলেও এখন ব্যবসায়ীরা কৌশল পাল্টিয়ে গোপনে চালাচ্ছে মাদক কারবার। নারায়ণগঞ্জে পুলিশের নাকের ডগায় দেদারসে বিক্রি হচ্ছে মাদক। বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত মাদকের কেনাবেচা চলে। আর নেশার টাকা জোগাতে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ছিনতাই, চুরিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ড।

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বিভিন্ন সমাবেশে মাদকের বিরুদ্ধে জিহাদ এবং নতুন পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান অবশ্য জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। প্রত্যেক থানায় থানায় মাদক ব্যবসায়ীদের ছবি ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে পাশাপাশি জেলা পুলিশ চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের ধরিয়ে দিতে পারলে পুরস্কারের ঘোষণা পর্যন্ত প্রদান করেছেন এবং কিছু মাদক ব্যবসায়ীদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য অনেককে পুরস্কার পর্যন্ত প্রদান করেছেন।

কিন্তু কই? নগরবাসীরা বলছেন, পুলিশের নিষ্ক্রীয়তার কারণেই মাদকের বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না। তাছাড়া ধরা পড়লেও সহজেই জামিন হয়ে যাওয়ায় মাদকের কারবারিদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। প্রতিদিন সকালে শহরের প্রধান সড়কের পাশের ড্রেনগুলোতে ফেনসিডিলের অনেক খালি অথবা ভাঙা বোতল পাওয়া যায়। এতো কিছুর পরও কেন মাদকের বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে ইচ্ছাকৃতভাবেই মাদকের বিস্তার রোধ করা হচ্ছে না বলে দাবী করেছেন ২নং রেল গেটস্থ পথচারী খন্দকার মোশারফ । তিনি বলেন, প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি হলেও এ ব্যাপারে পুলিশের কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই, পুলিশের সহায়তা ছাড়া প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি সম্ভব নয়। মাদক বলতে এখন দেশে একটাই নাম, আর তা হচ্ছে মরণনেশা ইয়াবা। সত্যিকার অর্থে মাদক তো আর আমাদের দেশে তৈরী হয়না। এগুুুুলো অন্য দেশ থেকে আসে, সেক্ষেত্রে মাদক প্রবেশ টা বন্ধ করলেই কিন্তু সবকিছুর সমাধান হয়ে যায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছিুক চাষাড়া এলাকার এক ব্যক্তি বলেন, সরকারী লোকদের সব ঘোষণাই এক ধরনের নাটক। মাদক বাংলাদেশে ঢোকানোর জন্য ওনারাই পারমিশন দিচ্ছেন আর ঢোকার পর মাদকগ্রস্ত মানুষগুলোকে জেলে ভরে দিচ্ছেন নইতো টাকা খেয়ে ছেড়ে দিচ্ছেন, এটাই সিষ্টেম। চলমান নাটক বন্ধ করে তিনি প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কষণ করে দেশে মাদক ঢোকার রাস্তাটি বন্ধ করার জোড় দাবী জানিয়েছেন। কারন হিসেবে তিনি বলেন, মাদক যদি দেশে প্রবেশ করে তাহলে প্রশাসন কেন, সারা পৃথিবীর মানুষ একত্রিত হয়েও কেনা-বেচা বন্ধ করতে পারবে না।

বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) সারাদিন সরজমিনে শহরের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখা যায়, যথা তথাই। মানে সেই পুরনো রুপেই চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। যদিও আগের মতো খোলামেলা না তবে, ব্যবসা চলছে এখন নতুন নতুন কৌশলে।

গোপন অভিযানের সূত্রে জানা যায়, শহরের চাষাড়া বালুরমাঠ, রেললাইন বস্তি, চাঁদমারী বস্তি, গলাচিপা-উকিলপাড়া রেললাইন, জামতলা, পাইকপাড়া, মন্ডলপাড়া পুল, জিমখানা বস্তি, আমলাপাড়া, মাসদাইর, ইসদাইর, বাবুরাইল, দেওভোগ, জল্লারপাড়, বেপারীপাড়া, ভুঁইয়ার বাগ, জিউসপুকুর পাড়, নন্দিপাড়া, নাগবাড়ী, মাছুয়াপাড়া, হাজীগঞ্জ, পাঠানতলী, শিবু মার্কেট, লামাপাড়া, নয়ামাটি কোতালেরবাগ, সস্তাপুর, র‌্যালি বাগান, ডনচেম্বার, ব্যাংক কলোনি, খানপুর, তল্লা, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, নিতাইগঞ্জ এলাকা সহ আরও বেশ কিছু এলাকায় প্রকাশ্যে না হলেও কৌশলে চলছে মাদক কেনাবেচা।