আজ সোমবার, ৩রা চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

মহানগর বিএনপিতে জনপ্রিয় যারা

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জ বিএনপিতে পরিবর্তনের হাওয়া লাগতেই শুরু হয়েছে আগামীর নেতৃত্ব নিয়ে গুঞ্জন। জেলা ও জেলার বাইরে সকল কমিটিতেই সক্রিয় নেতার নেতৃত্ব এখন অন্যতম দাবী হয়ে উঠেছে। সেই ধারাবাহিকতায় জেলা কমিটির পরেই অবস্থান মহানগর বিএনপির। নিষ্ক্রিয় নেতৃত্বের কারনে পুরো কমিটির মেরুদন্ড অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছে। ফলে কমিটি বিলুপ্ত করে দিয়ে সম্ভাব্য নতুন নেতৃত্বে কারা আসতে পারেন তা নিয়েই চলছে আলাপ আলোচনা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, মহানগর বিএনপির কমিটি পূর্নাঙ্গ হবার পূর্বে যেসকল নেতারা বিভিন্ন কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করতেন তাদেরকেই পরবর্তী সময়ে কমিটি স্থাগিতাদেশে যাবার পরেও কোন না কোন ভাবে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করেছেন। কখনও খালেদা জিয়া মুক্তি আন্দোলন কিংবা ভিন্ন কোন ব্যানারে কর্মসূচী পালন করেছেন নেতৃবৃন্দরা। কমিটির স্থাগিতাদেশে নিষ্ক্রিয় থাকার সুযোগ বর্তমান সভাপতি লুফে নিলেও তার ব্যতিক্রম উদাহরণ হয়েছেন অনেকেই। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই কর্মীদের কাছে জনপ্রিয় এবং কেন্দ্রীয় কমিটিতে ব্যতিক্রমী হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছেন তারা।
তৃণমূলের কর্মীরা বলছেন, মহানগর বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত হলে নতুন মুখে এগিয়ে থাকবেন বেশ কয়েকজন সক্রিয় নেতা। এদের ভেতর বর্তমানে স্থগিতাদেশে থাকা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, সহ সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন খান ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুবদলের সভাপতি মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ উল্ল্যেখযোগ্য।
কারন হিসেবে বলছেন, কমিটির ভেতরে এটিএম কামাল ও কমিটির বাইরে আলাদা ভাবে সাখাওয়াত হোসেন খান যেভাবে পুরো দলটিকে চাঙ্গা রেখেছেন সেটি সকলেরই দৃষ্টি কেড়েছে। এনিয়ে নিন্দুকরা বিষেদাগার করলেও কর্মসূচীতে সক্রিয় অবস্থান নিয়ে কোনভাবেই প্রশ্ন তুলতে পারেনি। একই ভাবে মহানগর যুবদলকে নেতৃত্ব দিয়ে আসা মাকছুদুল আলম খন্দকারকে মহানগর বিএনপিতে নিয়ে আসলে সে নিজেও চমক দেখাতে সক্ষম বলে মনে করছেন অনেকেই।
বিএনপির বেশ কিছু নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মামলার সুবাদে অনেকেই সভাপতির কাছ থেকে ধীরে ধীরে সরে যাচ্ছেন। যোগ দিচ্ছেন সাখাওয়াত বলয়ে কিংবা এটিএম কামাল বলয়ে। কেউ কেউ উভয় বলয়েই যোগাযোগ রেখে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করছেন। তবে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও কমিটির কার্যক্রম পুনরুদ্ধার করতে না পারায় বর্তমান সভাপতির ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কর্মীরা। স্বাভাবিক ভাবেই তাদের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার যে বর্তমান কমিটির নেতৃত্বের হাতে বিষয়টি সমাধান করা সম্ভব নয়।
বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বর্তমানে চলছে কমিটি বাতিলের তোরজোড়। দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করে পুরো কমিটি বাতিল করাতে চলছে তোরজোড়। একই সাথে আরেকটি খসড়া কমিটি গঠনের জন্য ইতোমধ্যে লিস্ট তৈরী করা হচ্ছে বলেও শোনা গেছে কোন কোন মাধ্যমে। তবে ঠিক কবে নাগাদ এমন কিছু প্রকাশ্যে আসতে পারে তা এখনও অজানা। এনিয়ে দলের সিনিয়ররা মুখ খুলতে নারাজ। কারন হিসেবে জানা যায় পুরো প্রক্রিয়াটিই চলছে অত্যান্ত সংগোপনে।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকা নিয়ে গঠনতন্ত্র অনুসারে নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটি গঠিত ও পরিচালিত। এই সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ থানার ৮টি ওয়ার্ড, সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অন্তর্গত ১০ টি ওয়ার্ড এবং বন্দর থানাধীন ৯টি ওয়ার্ড মিলে সর্বমোট ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির কমিটি গঠিত।
কিন্তু নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের অন্তর্গত ১-১০নং ওয়ার্ডের কোন নেতাকর্মীকে এই ১৫১ বিশিষ্ট কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এসকল বিষয়কে সামনে রেখেই মামলা দায়ের করেন ১০ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলজার খান ও একই ওয়ার্ডের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক (পৌরসভাকালীন) বিএনপি নেতা নূর আলম শিকদার। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহ নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় কমিটির র্কার্যক্রমে অন্তবর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেয় আদালত।