আজ মঙ্গলবার, ১৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৩০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ভয়ঙ্কর ডেঙ্গু, অসহায় ইউনিয়নবাসী

বরাদ্দ নেই তবে চাইলে উপজেলা দিতে পারে : ডিসি জসিম উদ্দিন

সংবাদচর্চা রিপোর্ট
সিটি করপোরেশন পৌরসভায় মশা মারতে বরাদ্দ থাকলেও ইউনিয়নের বেলায় তা নেই। আর এ জন্য ইউনিয়নভুক্ত এলাকাগুলোতে মশক নিধনে কোন উদ্যোগ নেয়া হয় না। এ নিয়ে অন্য সময় তেমন আলোচনা না হলেও সম্প্রতি ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় চিন্তিত সাধারণ মানুষ। ইতিমধ্যে বক্তাবলী ইউনিয়নে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে এক যুবক। প্রশ্ন উঠেছে, সিটি-পৌরসভায় বরাদ্দ থাকতে পারলে ইউনিয়নে কেন নেই।
ফতুল্লার বক্তাবলীর ছমিরনগর এলাকায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে জসিম উদ্দিনের ছেলে শান্ত নামের এক যুবক রোববার মারা গেছেন। শান্ত কোরিয়ার যাওয়ার জন্য ইপিএস লটারী পেয়েছিলেন। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলীর সাথে মোবাইল ফোনে কথা হয় দৈনিক সংবাদচর্চা প্রতিবেদকের। তিনি জানান, মশক নিধনের জন্য ইতিমধ্যেই অল্প কিছু স্প্রে মেশিন ও ঔষধ আনানো হয়েছে। কেউ যদি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয় সেক্ষেত্রে আমরা তাদের চিকিৎস্যর ব্যয় বহন করবো। তিনি দাবি করেন, আমরা খোজঁ নিচ্ছি কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে কি না।

সূত্র মতে, জেলায় সিটি করপোরেশন রয়েছে একটি। পৌরসভা রয়েছে ৪টি। এছাড়া বাদ বাকী সব ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়ন এলাকায় মানুষের বাস কম নয়। প্রতিটি ইউনিয়নে প্রতি বছর বাজেট হয়। সেই বাজেটে নানা উন্নয়ন কাজের জন্য বরাদ্দ থাকে। তা থেকে বছর জুড়ে খরচ হয়। ইউনিয়নগুলোর নিজস্ব আয় যেমন রয়েছে তেমনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, এলজিএসপিসহ নানা প্রকল্পের মাধ্যমেও অর্থ পায়। এরপরও মশক নিধনের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যুগ যুগ ধরে অবহেলিত হয়ে আসছে ইউনিয়ন এলাকায়। মশক নিধনে কোন প্রকার বরাদ্দ দেয়া হয় না আর চেয়ারম্যানরাও নিজস্ব আয় থেকে এ বিষয়ে কোন প্রকল্প পরিচালনা করে না। জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, ইউনিয়ন এলাকায় মশক নিধনে সরকার থেকে কোন বরাদ্দ দেয়া হয় না। তবে ইউয়িন পরিষদ চেয়ারম্যান চাইলে উপজেলা থেকে এ বিষয়ে বরাদ্দ নিতে পারে।

সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়র পরিষদের সচিব মো. আবু হানিফা জানান, মশক নিধনের জন্য সরকার থেকে কোন বরাদ্দ দেয়া হয় না। এনায়েতনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মশক নিধনে আমার ইউনিয়নে নিজস্ব অর্থায়নে স্প্রে মেশিন, ঔষধসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আমরা এনেছি। সরকার থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়নি তবে, এ বিষয়ে আমাদের মিটিং হবে। কিভাবে মশক নিধন করা যায় সে বিষয়ে দিক নির্দেশনা সেই সাথে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দেয়া হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আশা করি খুব শীঘ্রই আমরা মশক নিধন করতে পারবো।

আড়াইহাজারের ব্রাহ্মনদী ইউনিয়নের সচিব রেজাউল করিম জানান, মশক নিধনে সরকার থেকে ইউনিয়নে কোন বরাদ্দ দেয়া হয় না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে এর দায়ভার কে নেবে তা আমার জানা নেই।

বন্দরের ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. হাসান বলেন, ইউনিয়নে মশক নিধনের জন্য কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি। তবে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। ইউনিয়ন পরিষদে মশক থাকে কি না বা কেউ যদি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তাহলে এর দায়ভার নেবে কে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের যে দায়িত্ব আমরা তা যথাযথভাবে পালন করছি। মশক নিধনের জন্য আমাদের কাছে কোন স্প্রে মেশিন কিংবা ঔষধ দেয়া হয়নি।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন জানান, মশক নিধনে ইউনিয়নগুলোতে সরকার থেকে কোন বরাদ্দ দেয়া হয় না। তবে ইউনিয়ন পরিষদ চাইলে উপজেলা থেকে বরাদ্দ নিতে পারে।