আড়াইহাজার প্রতিনিধি: টানা ভারী বর্ষণে আড়াইহাজারে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। স্থানীয় ব্যবাসা প্রতিষ্ঠানসহ খেটে খাওয়া লোকজন বেকার হয়ে পড়েছে। লোকজন দিন ভরই অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে।
শনিবার আড়াইহাজহার পৌরসভা বাজারের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে দোকানদাররা বসে গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ সেফবুকে সময় দিচ্ছেন, কেউ আবার পত্রপত্রিকা পড়ে তাদের সময় কাটাচ্ছেন। সদ্য অনুষ্ঠেয় আড়াইহাজার ও গোপালদী পৌরসভার নির্বাচনে ভোট গ্রহণের বিভিন্ন খুটুনাটি বিষয় নিয়েও তাদের কথা বলতে শোনা গেছে। নির্বাচনের দিনও একইভাবে ভারী বর্ষণ হয়েছিল। এতে মানুষের ভোটাধীকার প্রয়োগে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। তবে ভারী টানা বর্ষণ কে অপেক্ষা করেই ভোটার কেন্দ্র উপস্থিত হয়েছিলেন বলে অনেকেই জানান।
আড়াইহাজার পৌরসভা বাজারে থানা বিএনপির প্রয়াত সভাপতি এএম বদরুজ্জামান খসরু’র মালিকানাধীন একটি দলীয় কার্যালয় রয়েছে। এখানে কার্যালয়ের সামনে একটি চত্ত্বর রয়েছে। তাতে প্রতিদিনই প্রায় ৪০টির মত দোকান রয়েছে। এসব দোকানে পাওয়া যায় কমদামে কাপড়। দিনভরই ক্রেতাদের সমগম হয়ে থাকে এস্থানটিতে। তবে ভোটের দিন থেকে টানাভারী বর্ষণের কারণে ক্ষুদ্র এ ব্যবসায়ীদের কপালে হাত। দিনভরই তারা অলস সময় পার করছেন। দোকানে কোন ক্রেতাই আসছে না। এর ওপর আবার ভারী টানা বর্ষণের কারণে খুব বেশী প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ি থেকেই বের হচ্ছে না।
অপরদিকে বাজারের গলিগলি দখল করে নিয়েছে রিকশা ওয়ালারা। একস্থান থেকে অন্যস্থানে যেতেই প্রয়োজন পড়ছে রিকশার। তারা এসুযোগটি বেশ কাজে লাগাচ্ছেন। ভারী বর্ষণে অন্যরা একটু আর্থিক চাপে থাকলেও রিকশা ওয়ালারা বেশ পোয়াবাড়–।
তারা সুযোগ বুঝে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া হাকাচ্ছেন ইচ্ছে মতই। এদিকে সবজির বাজারে যেন প্রচন্ড গরম। কোন সবজিই ৬০ থেকে ৭০ টাকার নীচে কেনা যাচ্ছে না। মাছ ও মাংস পোল্ট্রিতে ক্রেতা শূন্য। স্থানীয় মাছের উৎসগুলোতে মাছ ধরতে পারায় মাছ ব্যবসায়ীরা মাছ নিয়ে স্থানীয় বাজারগুলোতে আসতে পারেনি। এতে করে ক্রেতারা তাদের চাহিদা মাফিক মাছ কিনতে পারেনি। তবে স্থানীয় চায়ের স্টলগুলোতে ক্রেতা সমাগম পাওয়া গেছে চোখে পড়ার মতই। নানা গল্পের মধ্যদিয়ে সময় পার করার পাশাপাশি চায়ের কাপে পাচ্ছেন অ¤্রতি স্বাদ। দিনমজুররা তাদের কাজে বের হতে না পেরে বাড়িতে সময় পার করছেন। এতে তাদের চলাফেলায় বেশ কষ্ট হচ্ছে।
আমির আলী নামে এক দিনমজুর বলেন, বৃষ্টির কারনে তিনি আজ কাজে বের গতে পারেনি। এতে তার সংসারে আজ খাওয়াই কষ্ট হয়ে যাবে। তার সংসারে পাঁচজন সদস্য রয়েছে। প্রতিদিনই ৩০০টাকা খরচ হয়ে থাকে। আজ কাজে যেতে না পারায় তার আয়রোজগারও বন্ধ হয়েছে। এদিকে উপজেলার কালাপাহাড়িয়াসহ নি¤œ অঞ্চলের রাস্তাÑঘাট বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। এতে করে চলাফেরায় বেশ বেগ পেতে হচ্ছে এসব এলাকারবাসীদাদের। ফসলের জমিগুলোও পানির নীচে তলিয়ে যাচ্ছে। এতে চিন্তার ভাজ পড়েছে কৃষকের কপালে।
গবাদী পশুর খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির পানিতে চারণভূমিগুলো তলিয়ে যাওয়ায় গৃহপালিত পশুগুলোকে বাইরে বের করতে পারছে না। কাঁধা জমে যাওয়ায় খুরারোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ। সামনে কোরবানীর ঈদ। তাই অনেকের বাড়িতেই বর্তমানে পশু মোটাতাজা করণ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। আড়াইহাজার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিবছরই ঈদুল আজাহায় প্রায় ৫০ হাজার পশু মোটাতাজা করা হয়ে থাকে। উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার ফারুক আহম্দে বলেন, পশু যাতে খুরা রোগে আক্রান্ত না হয়, কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।