আজ বৃহস্পতিবার, ২রা মাঘ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

‘ভারতে চলছে স্বৈরতন্ত্র

সম্প্রতি ভারতের লোকসভার অধিবেশনে এভাবেই বলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য মহুয়া মৈত্র। তুখোড় ইংরেজিতে নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর দলকে তুলোধুনো করেন তিনি। গত মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত টানা তিনদিন মহুয়া মোদি সরকারকে টার্গেট করে বিভিন্ন ইস্যুতে সরব হন।

প্রথমবারের মতো লোকসভা নির্বাচনে অংশ নিয়েই জয়ী হন মহুয়া মৈত্র। আর প্রথমবারের মতো বলার সুযোগ পেয়েই তাঁর বক্তব্য বেশ সাড়া ফেলেছে আন্তর্জাতিক মহলে। ওই বক্তব্যের ফুটেজ এরইমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে সামাজিক মাধ্যমে বলা হচ্ছে এটি বর্ষসেরা বক্তব্য।

মহুয়া সংসদে বলেন, ‘ভারতে বিশেষ সম্প্রদায়কে টার্গেট করে এনআরসি এবং নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে আসা হচ্ছে। ভারতের বুকে ৫০ বছর ধরে যারা রয়েছেন, বারবার নিজেদের ভারতীয় বলে যারা প্রমাণ দিয়েছেন, আর এই কেন্দ্রীয় সরকার তাদের অনুপ্রবেশকারী বলছে।’

মহুয়া বলেন, ‘ভারতীয় সেনার সাফল্যকে একজন ব্যক্তির সাফল্য হিসেব তুলে ধরা হচ্ছে মোদি সরকারের জমানায়।’ তিনি দাবি করেন, ‘এই সরকারের জমানায় জঙ্গি হানার ঘটনার পাশাপাশি জম্মু-কাশ্মীরে সেনা জওয়ানের মৃত্যুর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

মহুয়া শুরু করেছিলেন মাওলানা আবুল কালাম আজাদের উক্তি দিয়ে। তারপর তিনি বলেন, ‘‌দেশে স্বৈরতন্ত্র চলছে।’

সেই সঙ্গেই মোদি সরকারের আমলে গণপিটুনির মতো জঘন্য হিংসাত্মক অপরাধ ক্রমশ বাড়তে থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মহুয়া বলেন, ‘‌রাজস্থানের আলোয়ারে পেহলু খান থেকে সদ্য ঝাড়খণ্ডে আনসারিকে পিটিয়ে খুনের ঘটনা ঘটছে। ‌দেশজুড়ে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। যা অনেকটা ছোটবেলার কালো ভূত আতঙ্কের মতো।‌ দেশে সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা ও বিজ্ঞাপনে বিপুল টাকা খরচ করা হচ্ছে।’ বুদ্ধিজীবী, লেখক, কবিদের কণ্ঠরোধের প্রসঙ্গও তোলেন তিনি।

মোদি সরকারের ‌জাতীয়তাবাদের সংজ্ঞার বিরোধিতা করে মহুয়া বলেন,‘‌দেশপ্রেমের প্রমাণ দিতে কোনো একটি বিশেষ স্লোগান আওড়ানো বাধ্যতামূলক হতে পারে না। দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করছে আপনাদের কাল্পনিক উগ্র জাতীয়বাদ।’

এরপর‌ বহুত্ববাদের প্রসঙ্গও তোলেন মহুয়া মৈত্র। তিনি বলেন, ‘‌আপনারা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন ঠিকই। কিন্তু, আমার দেশের সংবিধান আমাকে আপনাদের মতের বিরোধিতা করার অধিকার দিয়েছে। তা করবই।‌ এই প্রসঙ্গেই নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মহুয়া বলেন, ‘‌এবার লোকসভা নির্বাচনে ৬০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। তার প্রায় ৫০ শতাংশ টাকা খরচ করেছে শাসক দল বিজেপি। যা ২৭ হাজার কোটি টাকা। এটাই স্বৈরতন্ত্র।’