আজ শুক্রবার, ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

‘বলশেভিক সম্বাদ ও গোর্কি-লেনিন দ্বন্দ্ব’ শীর্ষক সেমিনার

নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে ও ধাবমান সাহিত্য আন্দোলনের আয়োজনে ‘বলশেভিক সম্বাদ ও গোর্কি-লেনিন দ্বন্দ্ব’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০টায় নগরীর আলী আহম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনের পরীক্ষণ হলে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারে শুরুতেই রহমান সিদ্দিক ‘বলশেভিক সম্বাদ ও গোর্কি-লোনন দ্বন্দ্ব’ শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন। এরপর এ বিষয়ে আলোচনা করেন বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, শ্রুতি সাংস্কৃতিক একাডেমীর সভাপতি ধীমান সাহা জুয়েল, গণমাধ্যমকর্মী মিলটন আনোয়ার প্রমুখ।

সেমিনারে রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘পৃথিবীর কিছু মানুষ মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়েছে, সংগ্রামী, বিপ্লবী করতে পেরেছে। তাদের মধ্যে একজন ম্যাক্সিম গোর্কি। গোর্কি অনেক সময় ম্যান যখন লিখতেন তিনি বড় আকারের একটি ‘এম’ লিখে ছোট ‘এ’ লিখতেন। এটার মাধ্যমে তিনি দেখাতে চাইতেন, আমাদের সবকিছুর কেন্দ্র বিন্দু মানুষ। মানুষের দুঃখ, মানুষের কষ্ট, মানুষের স্বপ্ন, মানুষের সংগ্রাম। সাহস মানুষকে কীভাবে জাগিয়ে তোলে! আমি তো জীবন থেকে শুধু সাহস চাই। সাহস আছে বলেই তো ভীরুতা আছে। ভীরুতাকে অতিক্রম করতে পেরেছি বলেই তো আমি সাহসী। এমনটাই ভাবতেন গোর্কি।’
রফিউর রাব্বি বলেন, ‘গোর্কিকে গোর্কির মতই বিশ্লেষণ করতে হবে। গোর্কির জায়গাটি হচ্ছে মানুষের প্রতি গভীর আস্থা। লেনিন যে বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন সেটি হচ্ছে, বিপ্লবকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে প্রতি বিপ্লবকে মোকাবেলা করতে হবে। যে বিষয়টি উপলব্ধি করা গোর্কির পক্ষে সম্ভব ছিল না। কেননা ফরাসি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে এটি আমাদের কাছে এই শিক্ষাটি চলে এসেছিল। বিপ্লবের পরই এটিকে ধ্বংস করার জন্য প্রতিটি প্লট সংগঠিত হবে। সেটিকে শক্তভাবে মোকাবেলা করাই হচ্ছে একজন যথার্থ বিপ্লবীর কাজ। যা লেনিন করেছেন। সেটি তাৎক্ষণিকভাবে গোর্কির উপলব্ধি করা সম্ভব ছিল না। এটি বুঝতে তার সময় লেগেছে। গোর্কির স্বার্থকতা এখানেই যে বিভ্রান্তি, বিচ্যুতি কখনোই তাকে আকৃষ্ট করেনি। আজীবন সে অটল ছিলেন।’

মিলটান আনোয়ার বলেন, ‘বাংলার যে বিপ্লবী, প্রগতিশীল সাহিত্য রয়েছে তার অনেক লেখকরা বলেছেন, গোর্কির লেখার মধ্য দিয়ে সাহিত্যের নতুন একটি ধারা পেয়েছেন। সামাজতান্ত্রিক বাস্তবতা পেয়েছেন। ভারতবর্ষে সেই সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতার সূচনায় গোর্কির ভূমিকা রয়েছে। বাংলায় সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতা সাহিত্য বা নতুন ধরণের সাহিত্য তৈরির অনুপ্রেরণা, ক্ষেত্র গোর্কিকে উপলক্ষে করেই হয়েছিল। গোর্কি মারা যাওয়ার পর বাংলায় যে প্রথম গোর্কি স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয় তাদের আয়োজকদের মধ্যে কাজি নজরুল ইসলামও ছিলেন। নজরুল গোর্কির লেখা পড়তের। তাই তার লেখায় গোর্কির ছাপ আছে।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর রায়, জেলা বাসদের সমন্বয়কারী নিখিল দাস, নাসিক কাউন্সিলর ও বাসদ নেতা অসিত বরণ বিশ্বাস, ধাবমান সাহিত্য আন্দোলনের সম্পাদক কবি কাজল কানন, জেলা প্রগতি লেখক সংঘের সভাপতি জাকির হোসেন, জেলা গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী অঞ্জন দাস প্রমুখ।