অনলাইন রিপোর্ট: কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আবদুর রহমান বদিকে পিতা দাবি করে আদালতে মামলা করেছেন ইসহাক নামের এক যুবক। পাশাপাশি সাবেক এই এমপিকে পিতা প্রমাণে আদালতের কাছে ডিএনএ টেস্টের দাবিও করেছেন তিনি।রোববার টেকনাফ সহকারী জজ জিয়াউল হকের আদালতে আবেদনটি করেন মো. ইসহাক (২৬) নামে ওই যুবক। পরে অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালত বদির বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দীন বলেন, অভিযোগ আমলে নিয়ে আদালত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন। পাশাপাশি আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে সমনের জবাব দিতে বিবাদী আবদুর রহমান বদিকে বলা হয়েছে। মামলার বাদীপক্ষের আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট কফিল উদ্দীনও মামলার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
আদালতে দেয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯২ সালের ৫ এপ্রিল মামলার বাদী ইসহাকের মা সুফিয়া খাতুনকে কালেমা পড়ে বিয়ে করেন আবদুর রহমান বদি। ওই সময়ে বিয়ে পড়ানোর আয়োজন হয় বদির পারিবারিক আবাসিক হোটেল নিরিবিলিতে। তখন বিয়ে পড়ান কর্মরত মৌলভী আবদুস সালাম। বিয়ের সাক্ষী ছিলেন ওই হোটেলের দারোয়ান এখলাছ।
মো. ইসহাক জানান, ছোটবেলা থেকে তিনি মায়ের কাছে শুনে এসেছেন তার বাবা আবদুর রহমান বদি। কিন্তু কখনও তিনি বাবার স্নেহ-ভালোবাসা পাননি। বাবার স্বীকৃতির দাবিতে মায়ের সঙ্গে তিনি অসংখ্যবার আবদুর রহমান বদির কাছে যান কিন্তু আবদুর রহমান বদি তার রাজনৈতিক শত্রু ও সামাজিক অবস্থানসহ নানা সমীকরণ দেখিয়ে তাকে এবং তার মাকে বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখতে বলেন। এ কারণে তার মা স্বামীর (আবদুর রহমান বদি) কথার অবাধ্য হননি। তাই তার মা সুফিয়া খাতুন এতদিন চুপ ছিলেন। কিন্তু দিনের পর দিন স্বীকৃতি দেয়ার আশ্বাসে কালক্ষেপণ করায় আদালত পর্যন্ত এসেছেন বলে জানান মামলার বাদী মো. ইসহাক।
ইসহাক আরও জানান, দীর্ঘ এ সময় ধরে মা-ছেলে মৌলভী আবদুস সালামের কাছে আশ্রিত আছেন। অভাব-অনটনে চলছে তাদের জীবন। তবুও নিষ্ঠুর বাবার মন গলছে না।
ইসহাকের দাবি, বিষয়টি নিয়ে তারা মা-ছেলে আবদুর রহমান বদির ছোটবোন শামসুন নাহারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা ঘরোয়াভাবে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন কিন্তু বদি কৌশলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।
ইসহাক জানান, সম্প্রতি দুদকের মামলায় হাজিরা দিয়ে টেকনাফে ফুলেল সংবর্ধনা গ্রহণকালে বদি তার একমাত্র ছেলে শাওন ছাড়া আর কোনো ছেলে নেই দাবি করে বক্তব্য দেন। এরপর ইসহাক সিদ্ধান্ত নেন তিনি আর চুপ থাকবেন না। তাই তিনি আদালতের আশ্রয় নেন। এছাড়া এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে আবদুর রহমান বদির ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। পাশাপাশি সাবেক এমপি বদির আরেকটি নম্বরে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।