সংবাদচর্চা রিপোর্ট :
বর্তমানে ক্রাইম জোন চনপাড়া । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া রূপগঞ্জ উপজেলার এই পুনর্বাসন কেন্দ্র । স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ,পঙ্গু ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা এবং বীরাঙ্গনাদের পুনর্বাসন করেছিলেন সেখানে। এলাকাটির উন্নয়নে বঙ্গবন্ধু বেশ কয়েকটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। তারপর থেকে চনপাড়ায় শুরু হয় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। মাদক ,জুয়া, চাঁদাবাজি, চুরি ,ডাকাতি এ সব অপকর্ম চনপাড়া থেকে হচ্ছে। প্রতিবছর একাধিক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। ৭৫ পরবর্তীতে জিয়া, এরশাদ , খালেদা জিয়ার শাসন আমলে চনপাড়ায় তেমন দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি। এমনকি ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের টিকেটে সংসদ সদস্য হয়ে কেএম শফিউল্লাহর উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি চনপাড়ায়। তারপরও চনপাড়াবাসী বার বার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। রূপগঞ্জ উপজেলার সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা এটি। সেখানে প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ বসবাস করে। অধিকাংশ মানুষ ভাসমান এবং দরিদ্র। তার জন্য বাড়ছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।
২০০৯ সালের আগে চনপাড়া শেখ রাসেলনগর ইউনিয়নে কোনো রাস্তা, ঘাট, গ্যাস ,পানি ছিলো না। সন্তান জন্মনিলে এবং মৃত ব্যক্তিকে শীতলক্ষ্যার দুর্ষিত পানি দিয়ে গোসল করানো হতো। বিএনপির আমলে বিদ্যুতের পরিবর্তে ছিলো শুধু খাম্বা।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে চনপাড়া। চনপাড়া শেখ রাসেলনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবু তাহের , সিনিয়র সহ-সভাপতি রশিদ মেম্বার, সেক্রেটারী আব্দুল মালেক মাস্টার , যুবলীগ নেতা হিরণ হাওলাদার, খ,ম জাহাঙ্গীর, নবকিশলয় হাইস্কুল এন্ড গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ নজিবুর রহমান, চনপাড়া শেখ রাসেলনগর ইউনিয়ন মহিলা লীগের সভাপতি ও সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার বিউটি আক্তার কুট্টি, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও চনপাড়া শেখ রাসেল নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান তাদের নাগরিক জীবনের সকল সমস্যার কথা গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের কাছে তুলে ধরেন। পরে গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক এমপি হয়ে প্রথম কাজ শুরু করেন চনপাড়া থেকে । তিনি চনপাড়াবাসীর পানির সংকট দূর করেন। গ্যাস সংযোগ দেন। শতভাগ বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেন। বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে চনপাড়ায় শিক্ষা খাতে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। নবকিশলয় হাই স্কুল এন্ড গার্লস কলেজকে জোট সরকার কোনো অনুদান দেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক নবকিশলয় হাইস্কুল এন্ড গার্লস কলেজে একটি ৫ তলা ভবন নির্মান করে দিয়েছেন। যা নারায়ণগঞ্জ জেলার মধ্যে প্রথম। ২টি ৪ তল ভবন এবং ১টি ৩ তলা ভবন নির্মানাধীন রয়েছে।
রূপগঞ্জ উপজেলার মধ্যে চনপাড়ায় শিক্ষার হার সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে প্রায় ১০টির মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের নেতৃত্বে এবং নবকিশলয় হাইস্কুল এন্ড গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ নজিবুর রহমানের সহযোগিতায় নবকিশলয় হাই স্কুলে “গালর্স” কলেজ যুক্ত করা হয়েছে। যার ফলে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে মেয়েরা শিক্ষার দিকদিয়ে এগিয়ে রয়েছে। চনপাড়ায় কোনো বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছিলো না। স্থানীয়দের সহযোগিতায় বীর প্রতীক গোলাম দস্তগীর গাজী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ নির্মান হয়েছে। চলতি বছর থেকে সেখানে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানা গেছে।
২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিলো নাজুক। পাকা কোনো রাস্তা ছিলো না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক শেখ রাসেল নগর ইউনিয়নের প্রত্যেকটা ওয়াডের্র সংযোগ পাকা সড়ক নির্মান করে দিচ্ছে। ৬ নং ওয়ার্ডে একটি পাকা সড়ক নির্মান হয়েছে। স্থানীয়রা সড়কটির নাম দিয়েছে গাজী সড়ক। এর বাইরে নবকিশলয় হাইস্কুলের সামনে দিয়ে একটি পাকা সড়ক নির্মান হয়েছে।
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় ৪ যুগ চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিলো না। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে পুনরায় কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের দাবির পর গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক নিজেও চনপাড়ার চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বিশেষ অনুদান দিয়েছেন। একটা সময় চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের জনগণের ভোটাধিকার ছিলো না।
পরে ব্যাপারটি নিয়ে গোলাম দস্তগীর গাজীর কাছে যান বজলুর রহমান। ভোটের অধিকার আদায়ে মামলা করা হয় কোর্টে। ২০১০ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে ভোটার হন পুনর্বাসন কেন্দ্রের প্রতিটি মানুষ। ওই সময় মামলা পরিচালনাসহ সমস্ত ব্যয়ের অর্থ দেন গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত হয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। সেখানে এলাকার মানুষের অনুরোধে প্রার্থী হয়ে কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য নির্বাচিত হন বজলুর রহমান বিপুল ভোটে। সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত হন নারী নেত্রী বিউটি আক্তার কুট্টি।
নির্বাচিত হওয়ার পর তারা চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে শুরু করেন। তারা সরকার এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর দেওয়া বিশেষ বরাদ্দ যথাযথ বাস্তবায়ন করেন। ২০১৯ সালে সন্ত্রাসীরা বিউটি আক্তার কুট্টিকে কুপিয়ে হত্যা করে। কুট্টির অবর্তমানে তার কন্যা দায়িত্ব পালন করছে।
বর্তমানে মাদক, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চনপাড়ায় ব্যাপক আকার ধারণ করছে। গুটি কয়েক সন্ত্রাসীকে একটি প্রভাবশালী মহল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার জন্য সহযোগিতা করছে। প্রভাবশালীদের ধারণা চনপাড়ায় মাদক, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে গেলে তাদের রাজত্ব বন্ধ হয়ে যাবে। প্রভাবশালী মহলটির আশ্রয়ে সন্ত্রাসীরা অধরা রয়েছে। স্থানীয় সাংসদ এবং জনপ্রতিনিধিরা মাদক, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। তারা চেষ্টা করছেন চনপাড়াকে সন্ত্রাস মুক্ত করার জন্য। এ সকল বাধা উপেক্ষা করে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের নেতৃত্বে বদলে যাচ্ছে চনপাড়া।
এব্যাপারে কায়েতপাড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও চনপাড়া শেখ রাসেল নগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রহমান বলেন, চনপাড়ায় রাস্তার মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় ২৬টি গভীর নলকুপ স্থাপন করা হয়েছে। গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের সহযোগিতায় ৯ নং ওয়ার্ডে সর্বকালের সেরা উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়নকে বাধা গ্রস্থ করতে একটি মহল মিথ্যাচার করছে। তারা চনপাড়ার উন্নয়ন ঠেকাতে পারবে না। সত্যের জয় হবেই।
নবকিশলয় হাইস্কুল এন্ড গার্লস কলেজের অধ্যক্ষ নজিবুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর চনপাড়ার উন্নয়ন বন্ধ হয়ে যায়। বিএনপি জামায়াত জোট সরকার চনপাড়াবাসীর জন্য তেমন কোনো উন্নয়ন করেনি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক চনপাড়াবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। তিনি শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন।
তিনি আরো বলেন, জনকল্যাণ আদর্শ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের প্রচেষ্টায় সরকারী করণ হয়েছে। মন্ত্রীর বিশেষ বরাদ্দে ১ টা ২ তলা ভবন হয়েছে এবং ১ টা ৩ তলা ভবন নির্মাণাধীন রয়েছে।