আজ বুধবার, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

না’গঞ্জে রমজানে ফলের বাজারে স্বস্তি

ফলের বাজারে স্বস্তি

ফলের বাজারে স্বস্তি

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:
এবার রমজান শুরু হয়েছে মৌসুমি ফলের ভর মৌসুমে। যে কারণে সরবরাহ থাকবে প্রচুর। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের ফল আমদানিও বেড়েছে। সব মিলে রমজানে দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকবে বলেই জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে ডলারের দাম বেশি হওয়ায় আমদানির খরচ কিছুটা বেশি পড়ছে। এ কারণে বিদেশি ফলের দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
সারাদিন রোজা রাখার পর সন্ধ্যায় ইফতারি সামনে নিয়ে বসবে রোজাদাররা। তেল জাতীয় খাবারের পাশাপাশি নানা ধরনের ফল স্থান পায় রোজাদারদের ইফতারে। দেশীয় ফলের মধ্যে আম, লিচু, তরমুজের মৌসুম হওয়ায় দাম রয়েছে নাগালের মধ্যেই। অন্যদিকে আমদানিকৃত ফলের মধ্যে খেজুর, আপেল, মাল্টা, নাশপাতি, বেদেনাও রয়েছে বেশ। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন ফলের বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
ইফতারের অন্যতম অনুষঙ্গ খেজুর। ইফতারে খেজুর খাওয়া সুন্নাত, তাই রোজাদাররা এ ফলটি ছাড়া ইফতার করার কথা কল্পনাও করেন না। বাজারে নানা ধরনের খেজুর পাওয়া যায়। এর প্রায় সব অংশই মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমদানি করা। মধ্যপ্রাচ্যে এবার খেজুরের ফলন কম হওয়ায় দাম একটু বেশি বলে জানালেন ফল বিক্রেতারা। প্রকারভেদে খেজুরের দামে রয়েছে পার্থক্য। খেজুরের দাম সম্পর্কে পাইকারি বিক্রেতা মো. মানিক বলেন, দাবাস ১৮০ টাকা, নাগাল ১৬০ টাকা, বড়ই খেজুর ১৭০ টাকা, সায়ার ১২০ টাকা, ফরিদা ২৫০ টাকা, ডেসটিনি ২৪০ টাকা, সুপ্রি ২৫০ টাকা, জাহেদী ১২০ টাকা, ডেট ক্রাউন ২১৫ টাকা, মরিয়ম ৬৯০ টাকা, তিউনিশিয়া ঢালা ২৮০ টাকা, তিউনিশিয়া ক্রাফট ৩৯০ টাকা প্রতি কেজি পাইকারি মূল্যে বিক্রি হচ্ছে।
আমের মৌসুম হওয়ায় ইফতারের প্লেটে আমও বেশ স্থান করে নিবে।
কালীরবাজারের পাইকারি ফল ব্যবসায়ী মাইনুল ইসলাম জানান, এবার আমের উৎপাদন বেশ ভালো। দাম মোটামুটি স্থিতিশীল থাকবে বলা যায়।
আমের দাম সম্পর্কে তিনি বলেন, হিমসাগর, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, গুটি, গোবিন্দ পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। এগুলোর দাম ১ শ’ থেকে ৩ শ’ টাকা কেজি।
খুচরা আর পাইকারি বাজারে আমের দামে প্রায় দ্বিগুণ পার্থক্য থাকা বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী ফরিদ আহমেদ বলেন, এখান থেকে আম কিনে নিতে খাজনা, কুলি, যাতায়াত ভাড়াসহ প্রতি কেজি আমে খুচরা ব্যবসায়ীদের প্রায় ২০ টাকা খরচ হয়। আর ১০-১৫ টাকা কেজিতে লাভ করতে চাইলেই দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়।
আমের পর আপেলের চাহিদাও বেশ থাকে রমজানে। প্রকারভেদে আপেল বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন দামে।

 

ফলের বাজারে স্বস্তি

আপেল ব্যবসায়ী আলম বলেন, বাজারে এখন ফুজি আপেল ১২০ টাকা, গোল্ডেন ১১৫ টাকা, গালা ১৩৫ টাকা, জাহানী ১৪০ টাকা আর হানী আপেল বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা প্রতি কেজি দরে। আপেলের পাশাপাশি প্রকারভেদে মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯৫ টাকা কেজি। অন্যদিকে প্রকাভেদে নাশপাতি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকা প্রতি কেজি দরে। অন্যদিকে বেদেনার দাম আকার অনুযায়ী নির্ভর করে। ছোট আকারের বেদেনা ১২৫-১৩০ টাকা , মাঝারি আকারের বেদেনা ১৬০-১৮০ টাকা আর বড় আকারের বেদেনা বিক্রি হচ্ছে ২১০-২৩০ টাকা কেজি।
আমের মতো এখন চলছে লিচুর মৌসুম। কাঠফাটা রোদের এ আবহাওয়ায় সারাদিন রোজা রেখে অনেকেইে ঝুঁকবে রসালো এই ফলটির দিকে। সাধারণ মানের বেলোরি লিচু বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৫০ টাকা প্রতি শত। চায়না-৩ লিচু বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকা প্রতি শত আর বোম্বাই লিচু বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩৫০ টাকা প্রতি শত। বাটখারা লিচু চায়না-৩ লিচুর মতো ৪০০-৫০০ টাকা প্রতি শত বিক্রি হচ্ছে। আম, লিচুর মতো তরমুজেরও চলছে মৌসুম। বাদামতলী বাজারে আকারভেদে তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে ৫০-৩০০ টাকায়। অন্যান্য ফলের মধ্যে পেয়ারা, আনারস, বাঙ্গি, কাঁঠাল প্রভৃতি ফলের চাহিদা থাকবে পুরো রমজানজুড়ে।
ফল ব্যবসায়ীরা জানান, রমজানে ফলের চাহিদা ৪০-৫০ শতাংশ বেড়ে যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাড়ে খেজুরের চাহিদা। আবার দেশীয় ফলের মৌসুম থাকায় ভোক্তাদের নজর থাকবে সেদিকেই। এতে আমদানি করা ফলের দাম বেশি হলে চাহিদাও কমে যাবে।