আজ শুক্রবার, ২৬শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ফতুল্লায় গৃহকর্মীকে অমানবিক নির্যাতন

ফতুল্লার দেলপাড়া পেয়ারাবাগান এলাকায় গৃহকর্মী ডালিয়া (১৬) কে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে গৃহকর্তী সেলিনা (৩৫) আক্তারের বিরুদ্ধে । এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে গৃহকর্মী ডালিয়ার বাবা  জামাল উদ্দিন (৭০)।

জানা গেছে, বিগত দেড় বছরের প্রতিটি সময়ই গৃহকর্তীর নির্মম নির্যাতনের খড়ক নেমেছে তার  শরীরে। চুন থেকে পান খশলেই খুন্তি পুড়িয়ে ছ্যাঁকা দিয়ে শাস্তি দেয় হয় গৃহকর্মী ডালিয়াকে। শরীরের নানা অঙ্গে ধারণ করেছে অসংখ্য পোড়া দাগ! মলিন মুখে করুণ চাহনিই যেন বলে দিচ্ছে, হাসতে ভুলে যাওয়া মেয়েটির হৃদয়ের ক্ষতযে আরো কতটা গভীর !

অভিযুক্ত গৃহকর্তীর স্বামী মোঃ বাবু সৌদী আরবে থাকেন। ফতুল্লার দেলপাড়া পেয়ারাবাগান এলাকায় নিজস্ব ৫ তলা বিশিষ্ট ভবনের ২য় তলায় বসবাস করছেন তারা। নিজে দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তানের জননী হলেও মেয়ে সমতুল্য এক তরুণীকে এমন পাশবিক নির্যাতন করে চলেছেন দিনের পর দিন।

জামাল উদ্দিন চাঁদপুরের ছেঙ্গারচর থানাধীন কলাকান্দা ইউনিয়নের শানিরপাড় গ্রামের বাসিন্দা। মেয়েকে এমন নির্যাতনের খবরে গ্রামের বাড়ী থেকে ফতুল্লায় ছুটে এসেছেন তিনি।

অভিযোগে বৃদ্ধ জামাল উদ্দিন বলেন, আমার ৩ মেয়ে ১ ছেলে। ছেলেটি মানসিক প্রতিবন্ধি। স্ত্রী লাইলী বেগমও মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে। আমি কর্মক্ষম না হাওয়ায় আমার ছোট মেয়ে মোসাঃ ডালিয়া (১৬) দেলপাড়া পেয়ারা বাগান এলাকায় সেলিনা বেগমের বাড়ীতে গৃহপরিচারিকার কাজে দেই। প্রায় দেড় বছর ধরে আমার মেয়ে ডালিয়া অভিযুক্ত সেলিনার বাড়ীতে গৃহপরিচারিকার কাজ করছে। কিন্তু সেলিনা অত্যন্ত বদ মেজাজী । বিষয়টি আমাদের জানা ছিলোনা। দেড় বছর ধরে আমার মেয়েকে কারণে অকারণে অমানসিক ভাবে নির্যাতন করে আসছে সেলিনা। সামান্ন কিছু হলেই লোহার খুন্তি পুড়িয়ে আমার মেয়ের শরীরে ছ্যাঁকা নির্যাতন চালায় সে। এমনকি আমার মেয়ে যেন বাসা থেকে বেড়িয়ে যেতে না পারে এবং প্রতিবেশীদের যেন জানাতে না পারে, সে জন্য তাকে ঘরের ভিতরে তালাবদ্ধ করে রাখত। আমার মেয়ের দুই হাতে, পায়ে ও পিঠে অসংখ্য পোড়া এবং কাটা জখম রয়েছে। মেয়ে কান্নাকাটি করলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দিত।

সর্বশেষ গত সোমবার (৪ নভেম্বর) সকাল অনুমান ৯টার দিকে ফ্রিজে দুধ না রাখার মত তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গৃহকর্তী সেলিনা আমার মেয়ের চুল ধরে মারধর করতে থাকে।

এ বিষয়ে ফতুল্লা থানার ওসি আসলাম হোসেন সংবাদচর্চাকে জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে আসামি কঠোর শাস্তি পাবে।

সর্বশেষ সংবাদ