নিজস্ব প্রতিবেদক:
গ্রামের সরকারি প্রাথমিকের শিশুরা সাধারণত দরিদ্র পরিবার থেকে আসে। সকালে ভালোভাবে খেয়ে বিদ্যালয়ে আসতে পারে না তারা। অনেকের আবার বিদ্যালয়ে খাবারের জন্য তেমন কিছু নিয়ে আসারও সুযোগ নেই। তাই এ শিশুরা প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ে দুপুরের দিকে। পেটে ক্ষুধা নিয়ে অমনোযোগী হয়ে পড়ে তারা শ্রেণিতে। পাশাপাশি পুষ্টির অভাবে মানসিক বিকাশেও বাধাগ্রস্ত হয়। এসব চিন্তাভাবনা থেকেই সারাদেশের সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রান্না করা খাবার বিতরণের প্রস্তাব দিয়েছে ‘জাতীয় স্কুল মিল নীতি-২০১৯ প্রণয়ন কমিটি’।
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের সদস্যদের নিয়ে গঠিত কমিটি এই নীতির খসড়া প্রণয়ন করেছে। এই খসড়া নীতি পর্যবেক্ষণ শেষে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে সরকার।
দেশের সব শিশুকে দুপুরে রান্না করা খাবার দিতে মাথাপিছু ১৩ টাকা হিসাবে বছরে প্রয়োজন হবে ৮ হাজার কোটি টাকা।
এ-সংক্রান্ত নীতি প্রণয়ন কমিটির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, বর্তমানে প্রাথমিক পর্যায়ের অধিকাংশ বিদ্যালয় দুই শিফটে চলে। বিদ্যালয়ের কাঙ্ক্ষিত শিখন সফলতা অর্জনের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকদের সংযোগ সময় বৃদ্ধির জন্য এক শিফট চালু করা প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে শিশুদের দীর্ঘ সময়ে বিদ্যালয়ে অবস্থান নিশ্চিত করা এবং ক্ষুধা নিবারণের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
নীতির খসড়ায় বলা হয়েছে, শিশুদের নির্ধারিত খাবার দেওয়া হবে পূর্ণ দিবস বিদ্যালয়ে। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীকে রান্না করা খাবার দেওয়া হবে সপ্তাহে ৫ দিন। একদিন দেওয়া হবে পুষ্টিমানসমৃদ্ধ বিস্কুট। প্রতিদিনের প্রয়োজনীয় শক্তি চাহিদার ৩০ শতাংশ স্কুল মিল থেকে আসা নিশ্চিত করা হবে। অর্ধদিবস বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এ হার হবে ৫০ শতাংশ।
প্রতিদিনের খাদ্যে বৈচিত্র্য থাকবে। পুষ্টি চাল, ডাল, শিম, মটরশুঁটি, পুষ্টি তেল, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত মৌসুমি তাজা সবজি, ডিম, মাংস, মাছ, দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার, বিভিন্ন ধরনের বাদাম ও বিঁচি, ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ ফল দেওয়া হবে। এ খাদ্যগোষ্ঠীর মধ্যে নূ্যনতম চারটি তালিকায় যুক্ত থাকবে।