সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন,‘পুলিশ প্রশাসন ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থেই নির্বাচন একতরফা করতে সব শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে। ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন মরণকামড় দিচ্ছে। ধানের শীষের প্রার্থীর কর্মী, সমর্থকদের চালুনি দিয়ে ছেঁকে তুলছে। সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দেওয়া হচ্ছে তাদের ধরার জন্য। নেতাকর্মীদেরকে না পেয়ে মহিলা সদস্যসহ পরিবারের লোকজনদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে এবং কোথাও কোথাও বিএনপি নেতাকর্মীকে না পেয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
আজ শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ইসি কর্তৃক তালিকা চূড়ান্ত করার পর প্রার্থিতা বাতিল চরম প্রতারণামূলক। এর দায় ইসিকেই নিতে হবে। মোট কথা ২৭-২৮ তারিখের মধ্যে এ পদ্ধতিতে বেশ কিছু আসনের জয় আওয়ামী লীগ নিশ্চিত করতে চায়।’
রিজভী বলেন, জরিপের বরাত দিয়ে আওয়ামী লীগ দাবি করেছিল, তাঁরা ২২০ আসন নিয়ে সরকার গঠন করবে। সেটা বাস্তবায়নের জন্যই ‘মাস্টারপ্ল্যান করে’ বিএনপি নেতাদের প্রার্থিতা বাতিল এবং প্রার্থীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। বিএনপির এই নেতার আশঙ্কা, জামায়াত নেতার অজুহাত দিয়ে আরো ২২-২৩টি আসনের প্রার্থিতা বাতিল করার পরিকল্পনা চলছে।
এ ছাড়া আগামী ২৭ অথবা ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যেই আওয়ামী লীগ বেশ কিছু আসনে তাদের জয় নিশ্চিত করবে বলে দাবি করেন রিজভী। পাশাপাশি তিনি জানান, তফসিল ঘোষণার পর থেকে গত ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এজাহার বহির্ভূতভাবে ছয় হাজার ৬৭৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, আজ থেকে বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপারেশনের মাত্রা বাড়ানো হবে। এ ক্ষেত্রে বিজিবি ও র্যাবকে বিএনপি নেতাকর্মীদের লিস্ট সরবরাহ করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সারা দেশের স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ওয়ার্ড থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের তালিকা স্থানীয় থানায় এরই মধ্যে জমা দিয়েছে। সেই তালিকাগুলোই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন বিজিবি ও র্যাবের কাছে সরবরাহ করছে। সরবরাহ করা তালিকা ধরে ধরে আজ রাত থেকেই নাকি নেতাকর্মীদের আটক করা হবে।’
রিজভী বলেন, ‘ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট হিসেবে যাদেরকে মনোনীত করা হবে তাদের নির্বাচনের দুই-একদিন আগেই গ্রেপ্তার করা শুরু হবে।’
উপজেলা চেয়ারম্যান পদে থেকে প্রার্থিতা ও ঋণখেলাপী হওয়ার অভিযোগে বিএনপির ১৬ প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করেছে হাইকোর্ট। এ বিষয়ে রিজভী বলেন, ‘নৌকা মার্কার প্রার্থী চিত্রনায়ক ফারুক ঋণখেলাপী হয়েও প্রার্থী হয়েছেন। নৌকা মার্কার আরেক প্রার্থী ক্রিকেটার মাশরাফি সরকারি বেতনভুক্ত। অথচ তিনিও বৈধ প্রার্থী। অসংখ্য দণ্ডিত ও ঋণখেলাপি নৌকা মার্কার প্রার্থী। আসলে ক্ষমতা হাতে থাকলে পাহাড়েও নৌকা ভাসানো যায়।’
সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, সহ-দপ্তর সম্পাদক মুনির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।