আজ রবিবার, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পিতা-পুত্রের কল্যাণে ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাচ্ছে রূপগঞ্জ

নবকুমার:

ঢাকার পার্শ্ববর্তী একটি উপজেলা রূপগঞ্জ। এখানে গড়ে উঠেছে ব্যাপক শিল্পকারখানা। খুবই ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল এটি। করোনাভাইরাস একটি ছোঁয়াচে রোগ। দ্রুত এই ভাইরাস একজনের শরীর থেকে অন্য জনের শরীরে প্রবেশ করে। এই অদৃশ্য দানবের এখন পর্যন্ত কোনো ওষুধ আবিস্কার হয়নি। করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় ঘরে অবস্থান করা এবং পরীক্ষার মাধ্যমে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করে আলাদা রাখা। দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে নারায়ণগঞ্জে। তারপর থেকে নারায়ণগঞ্জ শহরে মহামারি রূপ নিয়েছে করোনাভাইরাস। প্রথমে নারায়ণগঞ্জে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কোনো পিসিআর ল্যাব ছিলো না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারায়ণগঞ্জে ল্যাব স্থাপনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্ব আরোপের প্রেক্ষিতে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের নিজস্ব অর্থায়নে এবং গাজী গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা বিসিবি ও যমুনা ব্যাংকের পরিচালক গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পার উদ্যোগে রূপগঞ্জে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য গাজী কোভিড-১৯ রিয়েল টাইম পিসিআর টেস্ট ল্যাব উদ্বোধন করা হয়েছে। ২৯ এপ্রিল দুপুরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা: জাহিদ মালেক এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক যৌথভাবে কাঞ্চনের বেস্টওয়ে সিটিতে গাজী কোভিড-১৯ রিয়েল টাইম পিসিআর টেস্ট ল্যাব উদ্বোধন করেন। ল্যাবটি স্থাপনের জন্য নারায়ণগঞ্জবাসীর প্রাণের দাবি ছিলো। করোনার হটজোন নারায়ণগঞ্জের প্রথম ল্যাব এটি । এখান থেকে বিনামূল্যে নারায়ণগঞ্জবাসীর করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হচ্ছে । দেশের প্রথম বেসরকারী ল্যাব এটি। গাজী পিসিআর ল্যাবের সুফল পাচ্ছে রূপগঞ্জবাসী। ঘনবসতিপূর্ণ রূপগঞ্জে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। যারা আক্রান্ত হচ্ছে তাদের দ্রুত শনাক্ত করা হচ্ছে গাজী পিসিআর ল্যাবের মাধ্যমে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের আইসোলশনে রাখা হচ্ছে। যে বাড়িতে করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে সেখানে প্রশাসন দ্রুত লকডাউন করতে পারছে । এতে শিল্প অঞ্চল রূপগঞ্জে করোনা রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অন্য এলাকার চেয়ে কম । গত এক সাপ্তাহে রূপগঞ্জে ১ শ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার ল্যাব স্থাপনের ফলে রূপগঞ্জে বেশি বেশি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। রিপোর্ট কম সময়ের মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। আক্রান্ত রোগীদের আলাদা করে রাখা সহজ হচ্ছে। চিকিৎসা নিয়ে বেশ কয়েকজন বাড়ি ফিরে গেছে। মন্ত্রী পিসিআর ল্যাব স্থাপন না করলে রূপগঞ্জে করোনাভাইরাস ভয়াবহ রূপ নিতো। গোলাম দস্তগীর গাজী এবং গাজী গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা বিসিবি ও যমুনা ব্যাংকের পরিচালক গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পার কল্যাণে ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাচ্ছে রূপগঞ্জ। র‌্যাব ,পুলিশ , ম্যাজিস্ট্রেট , চিকিৎসক , জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ গাজী পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করাচ্ছে।

এছাড়া গণমাধ্যমকর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য আলাদাভাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে গাজী গ্রুপ। নারায়ণগঞ্জের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য একসময় ঢাকার উপর নির্ভর করে থাকতে হয়েছে। তাতে অনেক রিপোর্ট দিনের পর দিন ঢাকায় আটকে থেকেছে। সেই দূর্ভোগ দূর হয়েছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ সাঈদ আল মামুন সংবাদচর্চাকে বলেন, গাজী কোভিড-১৯ রিয়েল টাইম পিসিআর টেস্ট ল্যাব উদ্বোধনের ফলে রূপগঞ্জবাসী অনেক সুবিধা পাচ্ছে। আগে ৩/৪ দিন রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। এখন ২৪ ঘন্টার মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি বলেন, রূপগঞ্জে মোট ১৭২ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যুবরণ করেছে ৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশ তারাব পৌরসভা, ভুলতা, মুড়াপাড়া , গোলাকান্দাইল এলাকার ।

এক অনুষ্ঠানে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, প্রতিদিন আমরা বেশি বেশি করে স্যাম্পল দিতে পারছি এবং রোগীদেরকে শনাক্ত করে সেবা দিতে পারছি। উদ্যোগটি নেওয়ার জন্য পাপ্পা ভাইকে অনেক ধন্যবাদ।

এদিকে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক ও তারপুত্র গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।