আজ বৃহস্পতিবার, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পিতলগঞ্জের রুবেলের জেল

রূপগঞ্জ থানার পিতলগঞ্জ ভক্তাবাড়ী এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে রুবেল (৩১) এর ৫ বছরের জেল হয়েছে । স্কুলে যাওয়া সময় ধর্ষণের শিকার হয় তরুণী। বখাটে বলে দেন, কাউকে জানালে করা হবে হত্যা। কিন্তু কয়েকদিন না যেতেই কুৎসা রটানো হয় মহল্লায়। লজ্জায় গলায় ধর্ষণ হওয়ার ২০ দিন পর ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেন সেই তরুণী। ঘটনাটি ২০০৯ সালের। দীর্ঘ ১১ বছর পর সেই ঘটনায় বখাটের ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। সেই সাথে করেছেন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।
রোববার (১১ অক্টোবর) দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল আদালতের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন উদ্দিন এ রায় প্রদান করেন। এ সময় আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

২০০৯ সালের ৫ মে রূপগঞ্জে থানার ১৩ বছরের এক কিশোরী ধর্ষণের শিকার হওয়া ২০ দিন পর লজ্জায় আত্মহত্যা করেন। তারপর ওই কিশোরীর বাবা নারী ও শিশু দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-০৩) এর ৯ (১) ধারায় রূপগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ২৯২/২০০৯।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, আসামী রুবেল প্রায় সময় ওই কিশোরীকে কুপ্রস্তাব দিতেন। এই কারণে তখন কিশোরীর বাবাএলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের কাছে বিচারও দিয়ে ছিলেন। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। আত্মহত্যার ২০ দিন আগে আসামী রুবেল কিশোরীকে স্কুলের যাওয়ার পথে কাঞ্চন ব্রীজের কাছে নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। তারপর থেকেই আসামী রুবেল এলাকায় বদনাম ছড়াতে থাকে কিশোরীকে নিয়ে। এলাকাবাসী হাসাহাসিসহ কটুক্তি করে ও গভীর রাতে ভিকটিমের বাড়ীতে এসে লোকজন অন্ধকার থেকে বলত ‘ কুমারী মেয়ে মাতা কেন? প্রশাসন জবাব চাই’ বলে বদ আওয়াজ দিত। আসামির সহায়তায় এলাকাবাসী কু-প্রস্তাব এবং ভিকটিমের গর্ভে আসামির ঔরসজাত সন্তান আছে বলে অব্যাহত করলে কিশোরী তা সহ্য করতে না পেরে ৫ মে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করে।
মৃত্যুর তার ঘর তল্লাশী করে রূবেলকে দায় করা একটি চিরকুট পাওয়া যায়। সাথে রুবেলের দেওয়া একটি প্রেম পত্রও।
ঘটনার দিন থানা কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অপমৃত্যুর মামলা নং ০৬/০৯ হিসাবে রূপগঞ্জ থানায় ডায়রী ভুক্ত করেন এবং নুরুন্নাহারে লাশটি নারায়ণগঞ্জ ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। হাসপাতালের রির্পোট আসে নুরুন্নাহার এর পেটে কোনো বাচ্চা ছিল না। তখন নুরুন্নাহার এর বাবার থানা তদন্ত কর্মকর্তার এস আই মো. সাইফুল ইসলামকে মোকাদ্দমা তদন্ত চলাকালীণ অবস্থয় উদ্ধারকৃত লিখিত চিঠি গুলি দেখানো হলেও বিষয়টিকে তারা গুরুত্ব না বাদীর মেয়ের মৃত্যুকে আত্মহত্যা থানায় রির্পোট প্রদান করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
পরে নুরুন্নাহার এর পিতা আদালতে গিয়ে নারী ও শিশু দমন আইনে আত্মহত্যার প্ররোচনার একটি মামলা দায়ের করেন।
এবিষয়ে বেঞ্চ সহকারী ফরহাদ হোসেন শেখ বলেন, ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ বিজ্ঞ আদালত উক্ত আসামিকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত ও অনাদায়ে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।