আজ সোমবার, ১৮ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৩রা মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পাথরের দখলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সড়ক

মোঃ মোমিনুল ইসলামঃ
সড়কের উপর কিংবা ফুটপাতের উপর নির্মাণ সামগ্রী রাখা দন্ডনীয় অপরাধ হলেও তোয়াক্কা করছেনা অসাধু ব্যক্তিরা। নারায়ণগঞ্জের সদর উপজেলাধীন নাসিক ১৩নং ওয়ার্ডের ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের উপর ও সড়কের পাশের ফুটপাতে রাখা নির্মাণ সামগ্রী ইট, পাথর, সিমেন্ট সহ নানা উপরকণের কারনে যে কোনো সময় ঘটতে পারে গুরুত্বর সড়ক দুর্ঘটনা এমনটাই আশংকা করছে স্থানীয়বাসীন্দা সহ এই সড়কে সাধারণ যাত্রী ও পথচারীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের আর্মী মার্কেট সংলগ্ন সোহাগ কাউন্টারের সামনে কতিপয় কিছু অসাধু ব্যক্তিদের নির্মানাধীন ভবনের পাথরের স্তুপ ঢাকা-নরায়ণগঞ্জ লিংক রোডের উপর ফেলে রাখা হয়েছে। কে বা কারা এই পাথরের স্তুপ ফেলে রেখেছে সেই বিষয়ে কোন সন্ধান পাওয়া যায় নি। আর্মি মার্কেটের বেশ কিছু বাসকাউন্টারে গিয়ে পাথরের স্তুপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তাঁরা বলেন, বেশ কিছুদিন আগে সকাল আনুমানিক ১০ টার সময় একটি ট্রাক যোগে পাথর আসে এবং সেই পাথর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের উপর ফেলতে থাকে। এমন সময় ট্রাফিক পুলিশের রেকার এসে সেই গাড়ীটিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে কর্মরত শ্রমীকরা একে অপরের সাথে আলোচনা করে যে এই পাথর এমপির লোকের পাথর, এই গাড়ী নিয়া কোথায় যাবে? পাথর গুলো কোথায় নিয়ে যাওয়া হয় কিংবা কে বা কারা এর পর্যবেক্ষন করে এমন কথা জিজ্ঞেস করলে কাউন্টারের লোকজন এই প্রতিবেদককে কিছু জানেনা বলে জানায়।

নগরবাসীর মতে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের বিভিন্ন স্থানে সড়কের ওপর ফেলে রাখা হচ্ছে নির্মাণ সামগ্রী। কোথাও কোথাও সড়ক দখল করেই চলছে নির্মাণ কাজ। এতে সংকুচিত হয়ে উঠেছে সড়কগুলো। সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। ঘটছে দুর্ঘটনা। নগরীর রাস্তা ও সড়কে যত্রতত্রভাবে বালু ও পাথরের মতো নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রাখার কারনে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছে নগরবাসী। রাস্তায় রাখা এসব নির্মাণ সামগ্রী থেকে ধুলো উড়ছে প্রতিনিয়ত। ফলে সর্দি-কাশি সহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নগরীর বাসিন্দারা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সড়কের উপর ও ফুটপাতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পাথরের স্তুপ রাখায় জনদূর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি যেকোন মুহুর্তে দূর্ঘটনা ঘটারও শঙ্কা রয়েছে। এমনকি পাথরের স্তুপের কারণে হেটে চলার জায়গাতো দূরের কথা গাড়ি চলাচলেও মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে থাকে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে যেকোন মুহুর্তে পাথরের কংক্রিটের উপর গাড়ি পিচলিয়ে উল্টে যেতে পারে।

উত্তর চাষাড়ার একজন স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ রহিম জানান, এমনিতেই আমাদের নারায়ণগঞ্জে যানজট এখন নিত্য সঙ্গি। সকাল থেকে সন্ধ্যা ব্যাপক যানজটের মধ্যে দিয়ে আমাদের দিন অতিবাহিত করতে হয়। এই নাকাল যানজটের মধ্যেই যদি কেউ সড়কের অর্ধ রাস্তা দখল করে পাথরের কংক্রিট ফেলে রাখে তাহলে দূর্ঘটনার পাশাপাশি বিস্তৃর্ণ যানজটও দেখবে নগরবাসী। মোঃ রহিম নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার দিকে আঙ্গুল তুলে বলেন, শহরের মূল প্রবেশপথে বিভিন্ন ভবন মালিকরা তাঁদের নির্মাণাধীন ভবনের নির্মাণ সামগ্রী যত্রতত্র ফেলে রাখছে। এ সকল অসাধু ব্যক্তিরা যাতে সড়কের উপর এ সকল নির্মাণ সামগ্রী না রাখে সেই বিষয়ে ট্রাফিক পুলিশ কি করছে? তাঁরা কি এ সকল বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারে না? আর শুধু ট্রাফিক পুলিশের একার পক্ষে কোন কিছু বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়, যেহেতু এটা নাসিক ১৩নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত সেহেতু সিটি কর্পোরেশনের উপর দায় বর্তায়। সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার সহ স্থানীয়দেরও সচেতন হতে হবে।