আজ বুধবার, ২০শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নিষিদ্ধ ৫২টি পণ্য বাজার থেকে সরাতে ব্যর্থ তদারকি প্রতিষ্ঠান!

সংবাদচর্চা রিপোর্ট

নগরীতে বিক্রি হচ্ছে বিএসটিআই থেকে নিষিদ্ধ ৫২টি পণ্য। বাজার থেকে এখনো সম্পূর্নভাবে পণ্যগুলো সড়াতে তদারকি প্রতিষ্ঠান ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন সাধারণ ভোক্তারা। নগরীর নিতাইগঞ্জ এলাকায় নাম বিহীন একটি স্টোরের মুদি দোকানি জামাল মিয়া। প্রতিবেদকের সামনেই বিক্রি করেছেন মোল্লা সল্টের আয়োডিনহীন লবন। যা সম্প্রতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বাজার থেকে উঠিয়ে দেবার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

তবে, নিষিদ্ধ হওয়ার পরও কেন তিনি এই পণ্যটি বিক্রি করছিলেন জানতে চাইলে পণ্যটি নিষিদ্ধ নয় দাবি করে জামাল মিয়া বলেন, আমরা সাধারণ মুদি দোকানদার। অল্প পুজির ব্যবসা, ক্ষুদ্রলাভে পণ্য বিক্রি করি। যদি এই পণ্যটি নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়, তাহলে কোম্পানী আমাদের থেকে কি ফিরত নিবে?

বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) সম্প্রতি নিষিদ্ধ হওয়া ৫২টি পণ্যের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এবং তা অপসারণ করে তা ধ্বংস করার আদেশ দেয়। তবে তদারকি প্রতিষ্ঠান নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর বাজার থেকে এসব নিষিদ্ধ পণ্য সরাতে ব্যর্থ হয়েছেন বলেই অভিযোগ করছেন সাধারণ ভোক্তারা। অসচেতনতায় অনেকেই এখনো এই পণ্য ব্যবহার করছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে। যা ক্ষতির পরিমান বাড়িয়ে দিবে বলেই সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।

সরেজমিন নগরীর বিভিন্ন মুদি মার্কেট ঘুরে বেশ কয়েকটি দোকানেই বিএসটিআইর নিষিদ্ধ পণ্যগুলো বিক্রি করতে দেখা যায়।

কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, নিষিদ্ধ পণ্যগুলো অনেক ব্যবসায়ীই বিক্রি করছেন। তবে কীভাবে এবং কেন এই পণ্য বিক্রি করছেন তা জানতে চাইলে তারা জানান, এ বিষয়ে তারা কিছু জানেন না। ব্যবসায়ীদের অনেকে নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রির জন্য অজুহাত হিসেবে বলেন, রোজার মাসে পণ্যের চাহিদা বাড়তি থাকে। আর এই সময়ই বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে ভেজালবিরোধী অভিযান চালানো হয়। কিন্তু এই পণ্যগুলো তারা রোজার আগে থেকেই মজুদ করেন।

তবে এ বিষয়ে সাধারণ ভোক্তাদের শান্তির বাণী নিয়ে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট জানান, আমরা বাজার মনিটরিংয়ে যথেষ্ট সোচ্চার আছি। যেকোন সাধারণ মানুষ আমাদের অভিযোগ করলে আমরা সরাসরি অভিযান পরিচালনা করে থাকি। প্রায় সময় বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়, তেমন ভাবে আমাদের সেই নিষিদ্ধ পণ্যগুলো চোখে পড়ে নি।

নিষিদ্ধ পণ্যের উপর কি ধরণের আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয় জানতে চাইলে তিনি জানান, মোবাইল কোর্টে সাধারণত অপরাধ বিবেচনা করে ম্যাজিষ্ট্রেট ব্যবস্থা নেন। এতে অনেক সময় জেল-জরিমানা করা হয়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ নারায়ণগঞ্জ জেলার সহকারী পরিচালক তাহমিনা বেগমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রসঙ্গত, বিএসটিআইর মান পরীক্ষার একটি প্রতিবেদন প্রকাশের পর একটি রিট আবেদনে ১২ মে হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ বাজার থেকে ৫২টি পণ্য দ্রুত অপসারণ করে তা ধ্বংস করার আদেশ দেয়। এ ছাড়া আদালতের আদেশে এসব পণ্য মানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ায়  উৎপাদন বন্ধ রাখতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।