স্টাফ রিপোর্টার :
গত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও নিরানন্দ ঈদের শঙ্কায় জেগেছে ফতুল্লার নিম্নাঞ্চলের মানুষের মাঝে। বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণেই এই শঙ্কা জেগেছে। জানা গেছে, গতকালের বৃষ্টিতে তলিয়েছে ফতুল্লার বিভিন্ন অঞ্চল। রাস্তা ঘাট থেকে শুরু করে নিম্নাঞ্চলে অবস্থিত বাসা বাড়িতেও ঢুকেছে বৃষ্টির পানি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আরো দুই একবার বৃষ্টি হলেই আবারও তলিয়ে যাবে ফতুল্লার লালপুর পৌষার পুকুরপাড় এলাকা। ফলে বিগত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও জলাবদ্ধতায় ডুবে থেকে নিরানন্দ ঈদের শঙ্কায় আছেন বাসিন্দারা।
বুধবার (২০ এপ্রিল) ভোর সকালে ক্ষণিক সময় মুশলধারে বৃষ্টি নামে। এতেই তলিয়ে গেছে ফতুল্লার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলো। ফলে ওইসকল অঞ্চলে জলাবদ্ধতার দূর্ভোগ শুরু হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ‘বর্ষার লাগাতার বৃষ্টি এখনো শুরুই হয়নি। একদিনের ক্ষনিক সময়ের বৃষ্টিতেই বিভিন্ন সড়কে পানি জমেছে। কদিনের মধ্যে আরো দু’একবার বৃষ্টি হলে ঘরের ভেতরেও পানি প্রবেশ করবে।’
ফতুল্লার লালপুর পৌষার পুকুরপাড় এলাকার বাসন্দিা ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, ‘বুধবার সকালের বৃষ্টিতেই লালপুর পৌষার পুকুরপাড় সংলগ্ন পঞ্চবটি সড়কে পানি জমেছে। পৌষার পুকুরের পানিও সড়ক ছুঁই ছুঁই করছে। আর দু’একবার বৃষ্টি হলেই আগের মত পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে যাবে। তখন আবারও সড়কে নৌকা নিয়ে চলাচল করতে হবে। এর থেকে পরিত্রান প্রয়োজন।’
একই এলাকার সোহেল নামে এক বাসিন্দা দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, ‘বিগত কয়েক বছর কোরবানী ঈদের সময় এই এলাকার প্রতিটি রাস্তা ও বাড়ির নীচ তলা জলাবদ্ধতায় ডুবে ছিলো। সড়কে ও বাসা বাড়িতে ছিলো নোংড়া পানির আধিক্য। এতে স্বাভাবিক চলাচল বন্ধ ছিলো। জলাবদ্ধতার কারণে মানুষ নানা রোগে এবং দুর্ভোগে নিমজ্জিত ছিলো। ঈদগুলো কেটেছে নিরানন্দ। এবারও ঈদের প্রাক্কালে বৃষ্টিতে সড়ক তলিয়ে যাবার উপক্রম। এবারও নিরানন্দ ঈদের শঙ্কা জেগেছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে।’
জানা গেছে, ফতুল্লা থানা এলাকাটি নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের আওতায় পড়েছে। এই আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। তিনি প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতা নিরসনের আশ্বাস এবং কার্যকরি উদ্যোগ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। গতবছরও এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তার প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হয়নি আজও।
জানা গেছে, ফতুল্লার লালপুর, ইসদাইর, গাবতলি, টাগারপাড় এলাকা ডিএনডি বাধ অধ্যুষিত হলেও এসব এলাকা ডিএনডির মেগা প্রজেক্টের আওতায় পড়েনি। ফলে ডিএনডির প্রজেক্টের সুফল থেকে বঞ্চিত হবে এসব এলাকার বাসন্দিারা। বিষয়টি গণমাধ্যমের কল্যাণে প্রচারের পর ডিএনডি প্রজেক্টের কাজে দায়িত্ব প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের আন্তরিকতায় গত বছর ওই সকল এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ প্রজেক্টের বাইরে গিয়েও কাজ করেছিল সেনাবাহিনী। ইসদাইরে একটি খালও উদ্ধার এবং খনন করেছিল তারা। এমনকি লালপুর পৌষার পুকুরপাড়ে দুটি সেচ পাম্পও দিয়েছিল। এরপরও জলাবদ্ধতার সমাধান হয়নি।
এরই মধ্যে সাংসদ শামীম ওসমান এলজিইডির ১৭০ কোটি টাকার একটি উন্নয়ন ফান্ডের উপর ভরসা করে বলেছিলেন, ওই অর্থ দ্বারা ফতুল্লার সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হবে। এর মাধ্যমে জলাবদ্ধতা দূর করার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন তিনি। তবে আজও এর বাস্তবায়ন হয়নি। তাই বিগত সময়ের ন্যায় এবারও জলাবদ্ধতা জোড়ালো সম্ভাবনা দেখছেন ফতুল্লাবাসী।