শামীম ওসমানের ঈদ জামাত ইসলামের দৃষ্টিতে ঠিক নয়- উজ্জ্বল
ঈদ জামাত নিয়ে উজ্জ্বল ফালতু প্রতিক্রিয়া করেছে – সাজনু
যেখানে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় সেখানে নাচ-গান শরীয়ত সম্মত নয়- মাওলানা ফেরদৌস
সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
বৃহৎ ঈদ জামাতে দ্বন্দ্বের অবসান ঘটতে যাচ্ছে উত্তর-দক্ষিণ মেরুর নেতাকর্মীদের মধ্যে। নারায়ণগঞ্জে মেরুকেন্দ্রীক যে রাজনীতি চলে তা আগামী ঈদ জামাতের মধ্যে দিয়েই শেষ হতে যাচ্ছে। ঠিক এমনটাই ধারণা করেছিলো জেলার সচেতন মহলসহ রাজনৈতিক বোদ্ধামহল। তবে সেই ঈদ জামাতকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্ব এখন আরও চরম আকার ধারণ করেছে। দুই মেরুর নেতাদের মতভেদের কারণে ঈদ জামাতকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
ঈদ জামাত প্রসঙ্গে শহর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীর ছোট ভাই আলী রেজা উজ্জ্বলের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, শামীম ওসমানের ঈদ জামাত শরীয়ত সম্মত নয়! পাশেই একটি ঈদগাহ আছে। যেখানে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে দেখা যাবে দু’দিন পর নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের নাচ-গানের অনুষ্ঠান হবে। আর আমার জানা মতে, ইসলামের দৃষ্টিতে যেখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সেখানে আর কোন অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হতে পারবে না। কিন্তু সেখানে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের নাচ-গানের অনুষ্ঠান, নারায়ণগঞ্জ কলেজের নাচ-গানের অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে, ভবিষ্যতেও হবে।
তার দেয়া এমন প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাওয়া হয় শহর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন ভূইয়া সাজনুর কাছে। তিনি বলেন, এটা একটু ফালতু প্রতিক্রিয়া করা হয়েছে। সেখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে তবে ঈদগাহ’র সাথে সংযোগ করে নেয়া হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের যখন অনুষ্ঠানটা হয়েছিলো তখন ওইখানে কাজ করার সুযোগ ছিলো না, যার জন্য নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের একটা প্রোগাম সেখানে অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। ঈদগাহ’র সাথে মাঠের গ্যাপ থাকলে জামাতটা হবে না। ঈদগাহ, রাস্তা ও স্টোডিয়াম তিনটা এক হয়ে যাবে। সে যেটা বলেছে সেটা না বুঝে বলেছে। না বুঝে কথা বললে তো আর হয়না, জেনে বলতে হবে।
তিনি আরও বলেন, গত বছর সর্বপ্রথম উনি (শামীম ওসমান) যখন ঈদের জামাতটা করে তখন নারায়ণগঞ্জের সকল সিনিয়র মাওলানাদের সাথে কথা বলেই আয়োজন করে। সেখানে তো কোন বিতর্ক উঠে নাই। বিতর্ক তুললে অনেক ভাবেই তোলা যায়। বিরোধীতা করার জন্য যদি বিতর্কের সৃষ্টি করা হয় তাহলে তো আর হয়না। সেখানে নূর মসজিদের মাওলানা সালাম সাহেব ছিলেন এছাড়াও হেফাজতের মাওলানা ফেরদৌস ছিলো। তারা সবাই মিলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো।
উভয় মেরুর দুই নেতার এমন প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হয় হেফাজতে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক মাওলানা ফেরদৌসের কাছে। তিনি বলেন, যেখানে নামাজ হয় সেটা একটি পবিত্র স্থান। আমাদের নবী ছাড়া অন্যান্য নবীদের নির্দিষ্ট জায়গা ছিলো নামাজ পড়ার জন্য। তবে, আমাদের নবীর উম্মতের বৈশিষ্ট্য, গোটা পৃথিবীর জমিনটাই মসজিদ। এটা হলো আমাদের নবীর শ্রেষ্ঠত্ব। সেক্ষেত্রে যেকোন জায়গায় নামাজ হয়। নামাজ হবে কিন্তু এতো বড় ঈদ জামাত, এটাকে সংরক্ষণ করা অতীব জরুরী। যেখানে ঈদ জামাত হয় সেখানে পরবর্তীতে যদি নাচ-গানের অনুষ্ঠান হয়, তাহলে সেটা শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েজ না। যেখানে ঈদ জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে সেখানে নাচ-গান শরীয়ত সম্মত নয়।
বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর ঈদ জামায়াত নারায়ণগঞ্জে অনুষ্ঠিত করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন নারায়ণগঞ্জ- ৪ আসনের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। যার ন্যায় তিনি ইফতার মাহফিল সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও ব্যবসায়ীমহল সর্বোপরী নারায়ণগঞ্জবাসীর দোয়া ও সহযোগীতা কামনা করেছেন। তবে তার এই উদ্যোগে আনন্দের বদৌলতে চলছে মতভেদ সেই সাথে নানান বিতর্ক।