আজ শনিবার, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

না.গঞ্জসহ সারাদেশে রমজানে কঠোরভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণের নির্দেশ

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে রমজান মাসে  কঠোরভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করার নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। বুধবার বিকেলে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ভিডিও কনফারেন্সে সকল রেঞ্জ, মহানগর পুলিশ, বিশেষায়িত ইউনিট ও জেলা পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিয়ের সময়   আইজিপি এ নির্দেশ দেন। এসময় তিনি রমজানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার ব্যাপারেও নির্দেশনা দেন।

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ বলেছেন, পবিত্র রমজান এবার একটি ভিন্ন পরিস্থিতিতে পালিত হবে। রমজানে ধর্মাচার বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করতে হবে। কঠোরভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, যেন পণ্যের মূল্য না বাড়ে। পণ্যের কালোবাজারি রোধ ও খাদ্যে ভেজাল দেওয়া বন্ধ করতে প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হবে।

পুলিশ প্রধান বলেন, পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে হবে। অনেক জেলায় ত্রাণ নিয়ে ট্রাক যাচ্ছে। আসার সময় খালি ট্রাকগুলোতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহণের ব্যবস্থা করতে হবে। আর ত্রাণ বিতরণে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। রিলিফ ও টিসিবি পণ্য এবং ভিজিএফ ও ওএমএস সুবিধা যেনো জনগণের কাছে যথাযথভাবে পৌঁঁছায় সে জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের সাথে সমন্বয় করতে হবে।

হাওরে ধান কাটার শ্রমিক পাঠানোর জন্য বিভিন্ন ইউনিটের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে আইজিপি বলেন, হাওরে হয়তো আরো শ্রমিক পাঠানোর প্রয়োজন হতে পারে। তিনি শ্রমিকদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করার জন্য শ্রমিকবাহী গাড়ির সামনে ব্যানার এবং গাড়িতে শ্রমিকদের তালিকা, সংশ্লিষ্ট ইউনিটের কর্মকর্তাদের নাম ও মোবাইল নম্বার রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন।

আইজিপি বলেন, অসহায় মানুষদের মাঝে ত্রাণ বা ইফতার বিতরণের নামে কেউ যেন জনসমাগম না করে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। তবে ত্রাণ বিতরণে তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে হবে। এসব ক্ষেত্রে অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। রমজানে যেন কোনোভাবেই ফুটপাতে ইফতার তৈরি ও বিক্রি না হয় সে ব্যাপারে তৎপর থাকতে হবে। কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে মানুষের অনাকাঙ্খিত ও অপ্রয়োজনীয় চলাচল বন্ধ করতে হবে।

তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে পুলিশ সদস্যরা নিজেদের সুরক্ষিত রেখে দায়িত্ব পালন করবেন। ইতোমধ্যে সুরক্ষা সামগ্রী কেনার জন্য বিভিন্ন ইউনিটকে পর্যাপ্ত আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের সুরক্ষা সামগ্রী দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো শৈথিল্য দেখানো যাবে না। সব পুলিশের জন্য ভিটামিন সি, ডি এবং জিংক ট্যাবলেট কেনা হচ্ছে। শিগগিরই তা বিভিন্ন ইউনিটে পাঠানো হবে।

আইজিপি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক প্রান্তিক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়তে পারে। অনেকে অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই বাড়তে পারে। এ ধরনের অপরাধ দমনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কেউ যেন ধর্মীয় উস্কানি, গুজব বা করোনা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সে বিষয়ে তৎপর থাকতে হবে। বর্তমান পরিস্থিতিতে জঙ্গিরা যেন কোনভাবেই তৎপরতা চালাতে না পারে, সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে।

বর্তমান পরিস্থিতিতেও যেসব গার্মেন্টস মালিক শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছেন তাদের প্রতি আইজিপি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। আর যারা এখনও দিতে পারেননি, তাদের বেতন পরিশোধের অনুরোধ করেন তিনি। কোনো গার্মেন্টস চালু করতে হলে যথাযথভাবে সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন আইজিপি।

এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কনস্টেবল থেকে থেকে শুরু করে সব পর্যায়ের সদস্যের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন আইজিপি। বুধবার বিকেলে রাজারবাগের পুলিশ অডিটোরিয়ামে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আইজিপি করোনা পরিস্থিতিতে মাঠপর্যায়ে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে তাদের আনন্দ-বেদনার কথা শোনেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশও দেন পুলিশ প্রধান।