জ্বীন নামার আগেই অজ্ঞান করা হয় পোশাক কারখানার এক নারী শ্রমিককে। এরপর বেধড়ক পিটিয়ে দেয়া হয় ঝারফুক। জ্বীন নেমেছিল কিনা সেটির হদিস না মিললেও জ্ঞান ফিরে ব্যথার যন্ত্রণায় ছটফট করেছেন রিক্তা বেগম। জ্বীন দিয়ে এমন চিকিৎসার খরচ হিসেবে তাকে দিতে হয়েছে ৪ হাজার টাকা। এমন চিকিৎসার পর গুরুতর অসুস্থ হলে খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় ওই নারীকে। সোমবার রাতে রিক্তা বেগম ফতুল্লা মডেল থানায় ওই কবিরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলে পুলিশ সেই রাতেই কথিত সেই কবিরাজ নূর আলমকে গ্রেপ্তার করে।
ফতুল্লার ফারিহা গার্মেন্টসের ফোল্ডার অপারেটর হিসেবে কাজ করেন রিক্তা বেগম। পা জ্বালাপোড়া, মাথা ব্যথা ও জ্বরসহ শরীরের কালো দাগ জনিত রোগের চিকিৎসার জন্য গিয়েছিলেন কবিরাজ মো. নূর আলমের কাছে। ওই কবিরাজ রোগের সমাধান না করতে পারলেও জ্বীন উছিলায় ওই নারী শ্রমিককে ইচ্ছেমত পিটিয়েছেন অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগী নারী।
৩০ মে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফতুল্লার মাসদাইর এলাকায় মহিউদ্দিনের বাড়ীর একটি ভাড়া বাসায় জ্বীন দিয়ে চিকিৎসার কথা বলে রিক্তা বেগম নামে পোশাক কারখানার ওই নারী শ্রমিককে অজ্ঞান করে বেধরক পিটিয়েছেন কথিত কবিরাজ নূর আলম।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রিজাউক হক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রিক্তা বেগম বাদী হয়ে ভূয়া চিকিৎসক নূর আলমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে গ্রেপ্তার নূর আলমকে আদালতে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
মামলায় বলা হয়, কর্মস্থলের সহকর্মীদের কাছ থেকেই কবিরাজ নূর আলমের জ্বীন দিয়ে মহৎ চিকিৎসার সম্পর্কে জানতে পারেন রিক্তা বেগম। পরে মো. ইউনুছ আলী নামের এক সহকর্মীকে নিয়ে জ্বীনের বাদশা কবিরাজ নূর আলমের মাসদাইরের ভাড়া বাসায় চিকিৎসার জন্য যান ওই নারী। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে, এর জন্য জ্বীন নামিয়ে চিকিৎসা করতে হবে জানিয়ে কথিত কবিরাজ রিক্তা বেগমের কাছে ৫ হাজার টাকা দাবী করেন। প্রথম দিন নগদ ২ হাজার ৫’শ টাকা এবং জ্বীন নামানোর জন্য বিভিন্ন সরঞ্জামাদী বাবদ খরচ করেন আরো ১৫’শ টাকা। এর পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে খাবারের সাথে চেতনাশক খাইয়ে রিক্তা বেগমকে অচেতন করেন। এরপর শুরু হয় বেধরক পিটিয়ে কবিরাজী ঝারফুক। রাত ১টায় জ্ঞান ফিরে পেয়ে কবিবরাজের বাড়ীতেই ব্যাথায় চিৎকার করেন রিক্তা বেগম।