আজ মঙ্গলবার, ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিতে উত্তাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

নারায়ণগঞ্জ বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর উপর হামলার ঘটনায় উত্তাপ ছড়িয়ে পরেছে বিএনপির রাজনীতিতে। এ ঘটনামামলা পর্যন্ত গড়িয়েছে। টিপু বাদী হয়ে মহানগর বিএনপির বহিস্কৃত নেতা আতাউর রহমানমুকুল ও মহানগর স্বে”ছাসেবক দলের সভাপতি আবুল কাউছার আশাসহ ২’শ জনকে আসামী করেএকটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার খবরে বিএনপিতে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। মামলায় আসামীহওয়ায় নাসিক কাউন্সিলর আবুল কাউছার আশা তার ফেসবুক আইডিতে লিখেন ‘আলহামদুলিল্লাহ,কথিত স্বাধীনদেশেও মামলার আসামী হলাম’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেয়ার পরসমালোচনার ঝড় ওঠে। তবে ঘটনার পর টিপুর পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল হওয়ায় নিয়ে বিএনপিতে নতুনকরে যে উত্তেজনা দেখা দেয়। শহরে এসেও বিশাল কর্মী বাহিনী নিয়ে শোডাউন করেছে আবুলকাউছার আশা। টিপুর উপর হামলার খবরে হাসপাতালে ছুটে এসে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জেলাবিএনপির সভাপতি গিয়াসউদ্দিন আহমেদ। তবে বর্তমান সময়ে দল গুছানোর কথা থাকলেও বিএনপিবিরোধে লিপ্ত হওয়াকে ভালো ভাবে নিচ্ছে না দলটির সাধারণ কর্মীরা। এ বিরোধ দলেরসাংগঠনিক ভীত নড়বড়ে হবে এমন দাবি বিএনপির রাজনীতিতে সংশ্লিষ্টদের। তথ্যমতে, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠনের পরথেকে আতাউর রহমান মুকুল এবং আবুল কাউছার আশার সঙ্গে মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড:শাখাওয়াত হোসেন খান এবং সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুর দূরত্ব শুরু হয়। বিভিন্নসময়ে একে অপরের বিরোধীতা করে প্রকাশ্যে সভা-সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে আসছেন। দীর্ঘদিনেরজমা ক্ষোভ থেকেই টিপুর উপর হামলা হয়েছে এমন দাবি বিএনপির রাজনীতি সংশ্লিষ্টদের। ঘটনার পর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবু আল ইউসুফ খান টিপুরবলেন, ‘শুধু প্রতিহিংসার কারণে আমাকে বহিস্কৃত মুকুল ও পদত্যাগকারী কাওসার আশাআমাকে হত্যা করতে চায়। আমি বন্দর উপজেলা ও বন্দর থানা বিএনপি’র উদ্দ্যেগেদখল,চাঁদাবাজ,সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদ সমাবেশে গতকাল ৬ই সেপ্টেম্বর-২৪ইং দুপুর ৩.৩০মিনিটে কাওসার ও মুকুলের নেতৃত্বে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ওসমান পরিবারের সশস্ত্রবাহিনীকে নিয়ে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে আমাকে বহনকারী অটোরিক্সা উপর হামলা করেএলোপাতালী চাপাতি,রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করতে চায়। কাওসার আমাকে চাপাতি দিয়েমাথার ঘাড়ে কোপ দেয়, আমার ঘাড়ে কোপ লাগে,আল্লাহ আমাকে বাচিয়ে রাখে,তারপর ঘাড়েকোপের কারনে ৪ টি সেলাই লাগে, মুকুল হকিষ্টিক দিয়ে আঘাত করে বাম হাত ভেঙ্গে ফেলে এবংশরীরে বিভিন্ন অংশে রক্তাক্ত জখম করে। আমি বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি ও চিকিৎসাধীন।কাওসার ও মুকুল গত ১৫ বছর বিএনপি’র কোন মিছিল করে নাই ওকোন মামলর আসামী হয় নাই। তারা দু’জন খুনী শামীম ওসমান,ও খুনী সেলিম ওসমানেরদালালি করেছে এবং তাদের দালালী করে বিএনপির’ নেতাকর্মীদের মামলার তালিকা তৈরী করেদিয়েছে। গত ৭ই জানুয়ারী -২৪ইং আ’লীগের পাতানো নির্বাচনে কাওসার ও মুকুল গংরাআ’লীগ ও জাতীয়পার্টির প্রার্থী পক্ষ নির্বাচন করে, তার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ থাকায় মুকুককে দলথেকে বহিস্কার করে কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড।কাওসার ও মুকুল সবসময় বিগত আ’লীগ ও জাতীয় পার্টি র এমপিদেরখুশী রাখার জন্য দলকে বিভক্ত ও দূর্বল করার বিভিন্ন কৌশল চালিয়েছে। গত ৫ই আগষ্ট আ’লীগ সরকারের পতনের পর কাওসার ও মুকুল বন্দর থানায় ও উপজেলায় এলাকায় দলের নামবিক্রি করে দখল,চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্য করে এবং আমাদের দলের যুবদলের নেতা স্বজন গত ৫ইআগষ্ট-২৪ ইং কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলন শহীদ হয় এবং এই হত্যার বাদীকে খুনী ওসমানেরপরিবারের পক্ষ হয়ে কাওসার ও মুকুল গংরা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিয়ে যাচ্ছে ও এখনো অব্যাহত। তাছাড়া গত ৭/৮ বছর কথিত সৌরভ যেখানে আ’লীগ ও জাতীয়পার্টির খান মাসুদ ওদুলাল প্রধানে সন্ত্রাসী বাহিনীর একান্ত সহযোগী ছিল ও বর্তমানে তার নামে হত্যা মামলা হয়।সাখাওয়াত হোসেন খাঁন বলেন, আজকে আমরা হতভম্ব। গত ১৫বছর সন্ত্রাসীরা যে আওয়ামী লীগের দালালি করে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা, নির্যাতন,মামলা-হামলা করেছে আজকে সেই তারাই প্রকাশ্যে এসে বিএনপির রূপ ধারণ করেছে। ওইসন্ত্রাসীরা এখনো মনে করছে এটা আওয়ামী লীগের যুগ। আর এমনিট মনে করেই আজকে আমাদেরমহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাডভোটেক আবু আল ইউসুফ খাঁন টিপুর উপর হামলা চালানোহয়েছে। এর নিন্দা জানানোর আমাদের কোন ভাষা নেই। রাস্তার মধ্যে উৎপেতে থেকে অত্যন্তনির্মমভাবে তাকে প্রহার ও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। সাখাওয়া বলেন, আবু আল ইউসুফ খাঁন টিপুর পিঠে ও ঘাড়েযেভাবে চাপাতি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে ক্ষতগুলোতে ৮-৯টি করে সেলাই লেগেছে। অল্পের জন্য সেপ্রাণে বেঁচে গেচে। আঘাতগুলো আরও ক্ষিপ্র হলে তার মৃত্যুর সম্ভাবনা ছিলো। এ হামলাটিঅত্যন্ত পরিকল্পতি অভিযোগ করে সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আতাউর রহমান মুকুল, আবুকাউসার আশা, সৌরভ, মোস্তক ও রাজীবের নেতৃত্বে নৃশংস ও নেক্কারজনক এ ঘটনাটি সংঘটিতহয়েছে। এ হামলায় যারা জড়িত তারা সকলেই আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী। তাদেরঅবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, নিজেরঅপকর্মের জন্য আতাউর রহমান মুকলকে দল বহিস্কার করেছে। বহিস্কার হওয়ার পরও সে তারঅপকর্ম এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির নাম ভাঙ্গি বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজী ও দখলদারিত্ব করে যাচ্ছে। তার সাথে বিএনপির কোন সম্পর্ক নেই। তাকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারে দাবী জানিয়েছেনতিনি।এদিকে হামলার পর ২৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল কায়সার আশা জানান, উনারা সব কিছুতেআমাদের দেখে। নূর হোসেন নামে আমাদের একজন কর্মী আছে তিনগাঁও এলাকায় বাড়ি। বেশকিছুদিন যাবত তাকে মামলায় ফাঁসানোর কথা বলে ৩ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছিলো।সেই চাঁদা চাওয়ার বিষয়টির কল রেকর্ড রয়েছে। স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিতহয়েছে এ বিষয়ে। সেই নূর হোসেনকে আজকেও তারা মেরে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। তারবাড়িতেও নিরাপত্তা নাই। নূর হোসেন বন্দরের স্থাানীয়, মানুষের যখন ধৈর্য্যে বাধ ভেঙ্গে গেছেতখন নবীগঞ্জ তিনগাঁও এলাকার মানুষ সম্মিলিত ভাবে সেই সকল চাদাঁবাজদের আজকে প্রতিহত করেছে।