আজ বৃহস্পতিবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তার এলাকায় এত কষ্ট !

সাবিত আল হাসান:

বর্ষাকাল আসে বছর ঘুরে। জলাবদ্ধতার পানি উঠে আসে দুয়ারে দুয়ারে। প্রতিবার শোনা যায় আগামী বছরে আশার বাণী। পানি ভরা অলিগলি আর সড়কে জনসাধারণ খায় নাকানি চুবানি। সংশ্লিষ্টরা দেয় মানুষের অসচেতনতার দোষ। ক্ষুব্ধ জনগণ তাদের ধোলাই সাফাই করে কমায় মনের আক্রোশ।

আর এভাবেই চলছে ডিএনডি বাসীর ভাগ্য বছরের পর বছর। কবে শেষ হবে প্রকল্পের কাজ, আর কবে বর্ষাকালের বৃষ্টি অভিশাপ থেকে আর্শীবাদে রূপ নেবে তা জানেন না কেউই।

নারায়ণগঞ্জে ২টি এরিয়া সবচেয়ে বেশী ঘনবসতিপূর্ন। একটি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন অন্যটি সদর উপজেলা। জলাবদ্ধতাও এই দুইটি স্থানে অধিক মাত্রায় বিরাজমান। তবে সিটি করপোরেশন এলাকার ভেতর যেসকল সড়কে বৃষ্টি পরবর্তী জলাবদ্ধতা দেখা দেয় তা ঘন্টাখানেক পরেই নেমে যায়। যদিও এতেও সন্তুষ্ট নয় শহরের বাসিন্দারা। অথচ ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় একদিনের বৃষ্টিতে ভোগান্তি পোহাতে হয় সপ্তাহেরও বেশী সময় ধরে। নিচু এলাকা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার ভঙ্গুর দশার কারনে ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ গত ২০ বছরের বেশী সময় ধরে ভোগান্তি সহ্য করে আসছে।

দুইটি এলাকা থেকে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের অন্যতম প্রভাবশালী আওয়ামী লীগের সাংসদ শামীম ওসমান। মিডিয়া থেকে শুরু দেশ বিদেশে এত পরিচিতি আর কোন সাংসদের নেই যতটা রয়েছে শামীম ওসমানের। কিন্তু তার এলাকার বাসিন্দাদের যেখানে গর্ব করার কথা সেখানে উল্টো বছরের পর বছর জলাবদ্ধতার ভোগান্তি পোহাচ্ছে। যদিও তিনি এই সমস্যা নিরসনে ডিএনডি প্রজেক্টের কাজ এনে দিয়েছেন বহু অনুরোধ করে, কিন্তু সেই কাজের সময় কেবল বেড়েই চলছে। মাঝে যেই আশার প্রদীপ জ্বলেছিলো বাসিন্দাদের মাঝে তা এখন নিভু নিভু প্রায়।

শামীম ওসমান প্রথম সংসদ সদস্য হন নারায়ণগঞ্জ ৪ আসন থেকে। ক্ষমতার পালাবদলে দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার পর ফিরে এসে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র হবার ইচ্ছা পোষণ করেন। পেয়েও যান দল থেকে নমিনেশন। কিন্তু ভাগ্য সেবার সুপ্রসন্ন ছিল না। মেয়র নির্বাচনের কয়েক বছর পর ৪ আসনে নির্বাচিত হয়ে কতৃত্ব ফিরে পান সুপরিচিত এলাকার। কিন্তু জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পাননি এখানকার বাসিন্দারা। কাঠামোগত বেশ কিছু উন্নয়ন হলেও ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পানি নিষ্কাশন রয়ে গেছে আগের মতই।

স্থানীয়দের দাবী, জলাবদ্ধ এলাকা গুলো যতদিন পর্যন্ত ডিএনডি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন না হচ্ছে ততদিন অস্থায়ী ভাবে পাম্প বসিয়ে পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা করা। একই সাথে এলাকার ড্রেনগুলো আকারে বড় এবং গভীর রূপ দিয়ে স্থায়ী সংস্কার করলে মুক্তি মিলতে পারে বাসিন্দাদের। শামীম ওসমানের মত নেতার কাছে ড্রেনেজ সমস্যার সমাধান খুব কঠিন হবে এমনটা বিশ্বাস করতে চান না কেউই। তার হাত ধরে ডিএনডি প্রজেক্ট আনা সম্ভব হলে এলাকার অলিগলির ড্রেনেজ ব্যবস্থা সুন্দর ও সুশৃঙ্খল করা আরও বেশী সহজ বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।