আজ বৃহস্পতিবার, ১৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২রা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

ঢেলে সাজানো হবে না.গঞ্জ জেলা মহানগর আ.লীগ

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:

নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির দামামা বেজে উঠছে। যদি ও সম্মেলনের তারিখ এখনো নির্ধারিত হয় নাই। তবে কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আগে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের সম্মেলন করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর সম্মেলন সফল করতে আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক শিক্ষা মন্ত্রী ডাক্তার দিপু মনি ও সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেল নারায়ণগঞ্জ সফরে আসবেন যে কোন সময়।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন কে কেন্দ্র করে পদ প্রত্যাশীরা লবিং শুরু করে দিয়েছে। ধরনা দিচ্ছে মন্ত্রী এমপিদের দ্বারে দ্বারে।

জানা গেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিতে তরুণদের প্রধান্য দেয়া হবে। যাদের নামে ভূমিদস্যুতা চাঁদাবাজি কর্মীদের সাথে খারাপ আচরণ বেফাস মন্তব্য মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে তাদেরকে নতুন কমিটি থেকে বাদ দেয়া হবে।

এবারের জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কারণ এ কমিটির নেতৃত্বেই ২০২০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও ২০২১ সালে বাংলাদেশের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবে।’ আওয়ামীলীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাইছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটিকে ঢেলে সাজাতে । যারা দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ যাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ নেই তাদেরকে নতুন কমিটিতে স্থান দেবেন।

প্রসঙ্গত ২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আনোয়ার হোসেনকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট খোকন সাহাকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করা হয়। এর দুই বছর পর ২০১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে সাত বছর আগে। আনোয়ার হোসেন এবং খোকন সাহার নেতৃত্বে মহানগরের কোন ওয়ার্ডে সম্মেলন হয় নাই। তারা ওয়ার্ডে নতুন নেতৃত্ব তৈরী করতে ব্যর্থ হয়েছেন ।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগ দুটি বলয় রয়েছে। একটি বৃহত অংশ থাকে গাজী আইভীর বলয়ে অপরটি থাকে শামীম ওসমানের বলয়ে।

একটি সুত্রের মাধ্যমে জানা গেছে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে এখন পর্যন্ত দুই জনের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন বর্তমান মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন এবং এড. খোকন সাহা। খোকন সাহা বর্তমানে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশী কয়েক জনের নাম শুনা যাচ্ছে তারা হলেন নরায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল ,সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জিএম আরাফাত। তবে মহানগর কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে পারেন মেয়র আইভীর ছোট ভাই আলী আহাম্মদ রেজা উজ্জল। তিনি বর্তমানে মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তবে এ বিষয়ে তাদের কোন বক্তব্য পাওয়া নি।

এদিকে ২০১৬ সালের ৯ অক্টোবর আবদুল হাইকে সভাপতি, সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সহ সভাপতি এবং আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদ বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট জেলা আওয়ামীলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। ১৩ মাস পর নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ৭৪ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্র। এ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে।

তবে একটি সুত্রের মাধ্যমে জানা গেছে, জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির একাধিক শীর্ষ নেতা বয়সের কারণে বাদ পড়তে পাড়েন। রদ বদল হতে পারে সাধারণ সম্পাদক পদ। তবে জেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে বেশ আলোচনায় রয়েছেন এড.আনিসুর রহমান দিপু, আব্দুল কাদির, কায়সার হাসনাত, সেলিনা হায়াত আইভী এবারের কাউন্সিলে কোন সন্ত্রাসী চাঁদাবাদ বিতর্কীত ব্যক্তি কে কমিটিতে স্থান দেবে না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শক্তিশালী কমিটি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে নারায়ণগঞ্জ ১ আসনের সংসদ সদস্য বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। তিনি বর্তমানে জেলার রাজনীতিতে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রয়েছেন।

নতুন কমিটির বিষয়ে আব্দুল হাই বলেন,  এবারের কমিটিতে প্রতিবারের ন্যায় অনেক প্রবীণ নেতা ঝড়ে পড়বেন এবং অনেক নতুন নেতাকর্মী নতুন কমিটিতে সংযুক্ত হবেন। জেলা কমিটি অনেকই আগেই হয়ে যেত। বাংলাদেশ আওযামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আকস্মি অসুস্থতার কারনে কমিটি পুনঃগঠনে আমরা পিছিয়ে গেছি।

অপর দিকে কমিটির বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, নতুন কমিটিতে কারা আসবেন কারা বাদ পড়বেন এটা একমাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানেন। নতুন কমিটিতে তরুণরা আসবে এবং প্রবীণরা বাদ পড়বেন এটা গণমাধ্যমের মনগড়া কথা । কমিটিতে কারা আসবেন আর কারা বাদ পড়বেন এটার বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

এড. আনিছুর হমান দিপু বলেন, জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ সময় ধরে উপজেলা কমিটির কাউন্সিলগুলো হয়েছে। উপজেলার নেতারা জেলা ও মহানগর কমিটিতে আসতে চায়।

এড. খোকন সাহার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার সংযোগটি বন্ধ পাওয়া যায়।

জি.এম আরাফাত বলেন, প্রধানমন্ত্রী দলের প্রতীক, তিনি নারায়ণগঞ্জে মন্ত্রী দিয়েছেন, তিনিই জানেন নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের শক্তি কোথায়। এবার যে কমিটি হবে সেই কমিটিতে অবশ্যই নবীন ও প্রবীনদের সমন্বয় থাকবে বলে আমি মনে করি। এ ছাড়া এবারের কমিটিতে কোন চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী থাকবে কিনা তা কমিটি গঠন হওয়ার পরেই দেখা যাবে। কারণ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কোন সন্ত্রাসী কিংবা চাঁদাবাজরা নতুন কমিটিতে স্থান পাবে না।