আজ রবিবার, ২১শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ডিজিটাল বারে এনালগ আইনজীবী

সংবাদচর্চা রিপোর্ট:
নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নব্য নির্মিত বার ভবনকে সর্বদাই আখ্যায়িত করা হয় ডিজিটাল বার ভবন। আইনজীবীদের সর্বাধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত এই ভবন আইনজীবীদের কার্যক্রম এগিয়ে নিবে শতগুণে। আদালতে কর্মরত সহস্রাধিক আইনজীবীর সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নতুন বার ভবন প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরীর অংশ হিসেবেই ডিজিটাল রূপে তৈরীর উদ্যোগ নেয়া হয়। তবে আইনজীবীরা এখনও যে এনালগ যুগেই রয়ে গেছেন তার অন্যতম নজীর তৈরী করলেন ভার্চুয়াল কোর্ট বর্জন করে।
গত ১২ মে হাইকোর্ট থেকে সারাদেশে ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনার অধ্যাদেশ দেয়ার পর বিভিন্ন জেলায় একে একে চালু হতে থাকে কোর্টের কার্যক্রম। কিন্তু প্রযুক্তিগত সুবিধা ও কোর্ট পরিচালনার ক্ষেত্রে আইনজীবীদের অসুবিধা হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে ভার্চুয়াল কোর্ট বর্জন করতে থাকেন আইনজীবীরা। তার ধারাবাহিকতায় ১৩ মে সকালে নারায়ণগঞ্জে ভার্চুয়াল কোর্ট চালু হবার পরেই জেলা আইনজীবী সমিতি থেকে তা বর্জন করা হয়। সেসময় আইনজীবীদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা না থাকার বিষয়টি সামনে তুলে ধরা হয়।
অথচ ডিজিটাল সেবা প্রদানের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতি তাদের পুরাতন ভবন ভেঙ্গে নতুন ডিজিটাল বার ভবন তৈরী করলেও আইনজীবীদের প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়নি। ফলশ্রুতিতে সহজলভ্য সেবা থেকে নিজেরাই নিজেদের বঞ্চিত করে রাখছেন তারা। অথচ ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনায় কাংখিত সেবা প্রদানের জন্য সরকার থেকে যথেষ্ট সুযোগ দেয়া হয়েছিলো। সেই সুযোগ যথাসাধ্য কাজে লাগাতে পারলে নারায়ণগঞ্জে বিচারপ্রার্থীরা সহজেই তাদের বিচারিক বিষয় সম্পন্ন করতে পারতেন।
তবে ভার্চুয়াল কোর্ট বর্জনের পাশাপাশি ব্যতিক্রম উদাহরণও রয়েছে আদালতে। ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনায় এক্সপার্ট অনেকেই তাদের মামলা জট কমিয়ে এনেছেন। তাদের মাধ্যমে অনেকেই শিখে নিচ্ছেন কোর্টে কাজ করার নিয়মাবলী। ফলে ঈদের পূর্বে জামিনের যেই চাপ থাকে আইনজীবীদের উপর সেটি সহজেই মোকাবেলা করতে পারছেন তারা।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক এক সভাপতি বলেন, বার ভবন ডিজিটালাইজড করার পাশাপাশি আইনজীবীদের প্রযুক্তিগত ভাবে দক্ষ করে ফেলা জরুরী। বিগত কমিটির সদস্যরা এই বিষয়ে গুরুত্বারোপ করলে বর্তমান ভার্চুয়াল কোর্ট বর্জন করার প্রয়োজন হতো না। বরং অদূর ভবিষ্যতে করোনার মত দুর্যোগ নেমে এলেও তা মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে পারতো সকলেই।
উল্লেখ, ডিজিটাল বার ভবনের জন্য প্রায় সাড়ে ১৮ শতাংশ জায়গার উপর আইনজীবী সমিতির ৮ তলা ভবনের ৮ হাজার স্কয়ার ফিটের নতুন ভবনের নকশা তৈরি করা হয়। এতে দুটি লিফট এবং সিঁড়ির সুবিধা থাকবে। ভবনের নিচতলায় মুহুরী সমিতি, একটি মসজিদ এবং একটি ক্যান্টিনের জন্য জায়গা বরাদ্দ থাকবে। দ্বিতীয় তলায় থাকবে সুরুজ আলী মিলনায়তন, ডাক্তারের চেম্বার। তৃতীয় তলায় ২৪২ জন (রেগুলার ১৪৯ জন) মহিলা আইনজীবীদের জন্য ১৫০০ স্কয়ার ফিটের কমন রুম এবং লাইব্রেরি থাকবে। পূর্বের ভেঙে ফেলা বার ভবনে আইনজীবীদের যেখানে বসার জন্য ছিলো ১৮০০ স্কয়ারফিট সেখানে নতুন তৈরি করা ভবনে থাকবে ৩৬০০ স্কয়ার ফিট জায়গা। চতুর্থ তলায় আইনজীবীদের জন্য ৬০০০ স্কয়ারফিটের হলরুম থাকবে। ৫ম তলা, ৬ষ্ঠ তলায় প্রায় ২০০টি চেম্বাররুম, ৭ম তলায় হলরুমের উপরে থাকবে ফটোকপি, টাইপসহ লজিস্টিক কাজ করার ব্যবস্থা থাকবে।