ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি: ঠাকুরগাঁও জেলার পীরগঞ্জে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই ও কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই চলছে বেশ কয়েকটি ইটভাটা। আর এসব ভাটায় অবাধে কয়লার বদলে পোড়ানো হচ্ছে হাজার হাজার মন কাঠ। স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের বিরদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
জানা যায়, পীরগঞ্জ-বীরগঞ্জ সড়কের উভয় পাশে উপজেলা সদরের ৪ কিলোমিটারের মধ্যেই ফসলি জমিতে বেশ কয়েকটি এবং সিন্দুনা, নসিবগঞ্জ, গনিরহাট, গুয়াগাঁও, ভেলাতৈড়, বিরহলী, বৈরচুনা ও মল্লিকপুরে মিলে ২০টি ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। নীতিমালা লঙ্ঘন করে ওইসব ভাটায় দিনে রাতে পোড়ানো হচ্ছে হাজার হাজার মন কাঠ। ইট তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ফসলি জমির টপ সয়েল। সংশিষ্টদের নজর নেই সেদিকে।
ইটভাটা আইন ২০১৩ অনুযায়ী ইটভাটা নির্মাণের ক্ষেত্রে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কর্তৃক অনুমোদনের পর জেলা প্রশাসকের অনুমোদন থাকতে হবে। লাইসেন্স বিহীন ভাটা পরিচালনা করলে ১ বছরের কারাদন্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। আবাসিক, জনবসতি, সংরক্ষিত, জলাভূমি, বনভূমির মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ভাটা স্থাপন করলে ১ বছরের কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা এবং কয়লার পরিবর্তে কাঠ ব্যবহার করলে ৩ বছরের জেল ও ৩ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়। এক্ষেত্রে কোন নিয়মই মানা হচ্ছে না পীরগঞ্জে।
অভিযোগ আছে স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এসকল ইটভাটা নির্মাণ করে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে অবাধে। এতে একদিকে যেমন গাছপালা উজার হচ্ছে অন্যদিকে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। ইটভাটার নির্গত ছাই এবং আগুনের ফুলকিতে ভাটার আশপাশের বসবাসরতদের শরীরে দেখা দিচ্ছে নানা রোগ।
একটি সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ২০টি ইটভাটার মধ্যে ৪/৫টির লাইসেন্স এবং ফায়ারিং সার্টিফিকেট থাকলেও বাকি ইটভাটাগুলির কোনো অনুমোদন নেই। এমনকি কাগজপত্রও নেই। প্রভাবশালী ভাটা মালিকরা অনুমোদন ছাড়াই চালাচ্ছেন ওইসব ভাটা।
সূত্র আরও জানায়, অনুমোদনহীন এসব ভাটা পরিচালনার জন্য প্রশাসনসহ বিভিন্ন দিক সামাল দিতে ইটভাটা মালিক সমিতিকে প্রায় সোয়া ১ লাখ টাকা করে প্রদান করেছেন ভাটা মালিকরা। ভাটা মালিক সমিতি তাদের হয়ে বিভিন্ন রকম দেন দরবার করে থাকেন।
এ বিষয়ে ইটভাটা মালিক সমিতির সুত্রে জানা যায়, ভাটা চালাতে হলে বিভিন্ন দিক সামাল দিতে হয়। এর জন্য কিছু খরচ পত্রতো লাগেই। তাছাড়া সব ভাটা সমিতিতে পুরো টাকা জমা দেয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এ ডব্লিউ এম রায়হান শাহ বলেন, যে সকল ইটভাটায় কয়লার বদলে কাট পোড়ানো হচ্ছে তাদেও তালিকা দিন । তালিকা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম জানান, অবৈধ ইটভার বিরদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। এরই মধ্যে একটি ভাটা বন্ধ করা হয়েছে।