আজ বুধবার, ১২ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুকের অভাব নেই

এম শিমুল খান, গোপালগঞ্জ  প্রতিনিধি  : একটু আগে একটা লিফলেট দেখলাম ভিক্ষুক মুক্ত টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা কিন্তু পাটগাতী বাজারে আসতেই দেখলাম যেন ভিক্ষুকের অভাব নেই এভাবেই অভিযোগ করেছিল টুঙ্গিপাড়া ঘুরতে আসা এক পর্যটক।

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে গেলে একটি লিফলেট চোখে পরে আর তাতে লেখা ভিক্ষুক মুক্ত টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা। তবে একমাত্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ এলাকা ব্যাতীত পৌরসভার বিভিন্ন হাট বাজারে ভিক্ষুকদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। পৌরসভার ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের মধ্যে পাটগাতী বাজার, বাসস্টান্ড ও চৌরঙ্গী মোড়। পাটগাতী বাজার ও চৌরঙ্গীর ব্যাবসায়ীরা যেন প্রতিদিন ভিক্ষুকদের জন্য দোকান খুলে বসে থাকে। সকালে দোকান খোলার শুরু থেকে বন্ধ করা অবধি কত ভিক্ষুক আসে তার কোন হিসাব নেই। এ ছাড়া দোকানদার দোকান খুলে কোন কিছু বিক্রয় করার আগে থেকেই শুরু হয় ভিক্ষুকদের আনাগোনা। ভিক্ষুকদের পূনর্বাসনের উদ্দেশ্যে সরকার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন উদ্দোগ নিলেও কমছে না ভিক্ষুকের সংখ্যা।

ভিক্ষাবৃত্তি দূর করতে ২০১৮ সালে ভিক্ষুকদের পূনর্বাসনের জন্য সরকার থেকে নানা উপকরন ও সামগ্রী দিলেও সে সম্পর্কে কিছুই জানে না কিছু ভিক্ষুক। আবার কয়েকজন সরকার থেকে সহযোগিতা পাওয়ার পরও ভিক্ষা করছেন।
উপজেলার গওহরডাঙ্গা গ্রামের ভিক্ষুক ঝর্না বেগম জানান, তিনি প্রায় ৫/৭ বছর ধরে ভিক্ষা করছেন কিন্তু সরকার থেকে কোন সহযোগিতা পায়নি।

আবার সিংগীপাড়া গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভিক্ষুক জানান, তিনি সরকার থেকে সহযোগিতা পেয়েছেন। আপনি সহযোগিতা পাওয়ার পরও কেন ভিক্ষা করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি অনেকদিন ধরে অসুস্থ। আমার প্রতিদিন ২০০ টাকার ঔষধ লাগে। তাই এখন ও ভিক্ষা করি।
এদিকে উপজেলা সমাজ সেবা অফিস সুত্রে জানা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৮ জন, ১৬-১৭ অর্থ বছরে ২০ জন, ১৭-১৮ অর্থ বছরে ৯৪ জনের মধ্যে ৫৪ জন ভিক্ষুকের পূনর্বাসন করা হয়েছে। এছাড়া ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১২২ জন ভিক্ষুকের পূনর্বাসনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।

উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মানব রঞ্জন বাছাড় বলেন, জাতীয় সমাজ কল্যান পরিষদের মাধ্যমে আমরা ভিক্ষুক পূনর্বাসনের লক্ষ্যে কাজ করি। সেই ধারাবাহিকতায় টুঙ্গিপাড়া উপজেলায় এ কার্যক্রম চলমান আছে। আমাদের কাছে আবেদন ও জরীপ অনুসারে মোট ৮৫ জন ভিক্ষুককে সহায়তা করা হয়েছে। গত বছরের হিসাব অনুযায়ী ৪০ জন বাকি আছে এবং নতুন করে ৭১ জন নতুন ভিক্ষুক তালিকায় যুক্ত হয়েছে। তাই সমগ্র উপজেলাকে ভিক্ষুক মুক্ত

করতে জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহব্বান জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাকিব হাসান তরফদার বলেন, ভিক্ষুকদের পূনর্বাসনের কার্যক্রম চলমান আছে। যে ভিক্ষুকরা সহযোগিতা পায়নি তাদের সহায়তা করে আমরা শীঘ্রই টুঙ্গিপাড়া উপজেলাকে ভিক্ষুক মুক্ত ঘোষনা করবো।