আজ মঙ্গলবার, ৫ই ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে আগস্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জেলা বিএনপির কমিটি নিয়ে গ্রুপিং

 

স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কমিটি ঘিরে তৎপর হয়ে উঠেছেন এই জেলার প্রভাবশালী বিএনপি নেতারা। নিজেদের পছন্দের লোককে গুরুত্বপূর্ন পদে অধিষ্ঠিত করতে চলছে মনস্তাত্ত্বিক লড়াই। স্থানীয় বিএনপিতে মোড়ল রূপ ধারণ করা নেতারা এই লড়াইয়ে সামিল হয়েছেন বলে বেশ কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে।
তথ্য মতে, ২০২৩ সালের ১৭ জুন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলের পরপরই নির্বাচিত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম ফারুক খোকন জেলা বিএনপির প্রস্তাবিত পূর্নাঙ্গ কমিটির খসড়া কেন্দ্রে জমা দেন। তবে আন্দোলন সংগ্রামের কারণে যথা সময়ে জেলা বিএনপির পূর্নাঙ্গ কমিটির ঘোষণা আসেনি। বর্তমানে জেলা বিএনপির পূর্নাঙ্গ কমিটির বিষয়ে নজর দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। চলছে পর্যবেক্ষন। প্রস্তাবিত কমিটিতে থাকা নিষ্ক্রিয়, ক্ষমতাসীন দলের সাথে আঁতাতকারী এবং বিতর্কিত নেতাদের বাদ দিয়ে সময় উপযোগি কমিটি ঘোষণা করার পক্রিয়া চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হবে বলে দলীয় সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, জেলা বিএনপির পূর্নাঙ্গ কমিটিকে কেন্দ্র করে তৎপর হয়ে উঠেছেন বলয় ভিত্তিক নেতারা। এর মধ্যে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আড়াইহাজারের নজরুল ইসলাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য রূপগঞ্জের মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু, কাজী মনিরুজ্জামান মনির, সোনারগাঁয়ের আজহারুল ইসলাম মান্নানসহ প্রভাবশালী কয়েকজন আলোচনায় এসেছেন। যারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন পদে নিজেদের পছন্দের লোককে পদায়ন করতে তৎপর রয়েছেন।
সূত্র বলছে, জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি পদ নিয়ে সবচেয়ে বেশি মনোস্তাত্ত্বিক লড়াই চলছে প্রভাবশালী নেতাদের মধ্যে। এই পদে আড়াইহাজারের বিএনপি নেতা লূৎফুর রহমান আব্দুকে আনতে আসতে পারে।
একই পদে আসতে চেষ্টা চালাচ্ছেন রূপগঞ্জের বিএনপি নেতা শরীফ আহমেদ টুটুল। তার পক্ষে রয়েছে বিএনপি নেতা কাজী মনির। এছাড়াও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর সাথে শরীফ আহমেদ টুটুলের বিশেষ সখ্যতা রয়েছে বলে জানা গেছে।
সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক রূপগঞ্জের নাসির উদ্দীনও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনিও কাজী মনিরের লোক হিসেবে পরিচিত।
এদিকে, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপুও জেলা বিএনপির কমিটিতে তার বলয়ের লোকদের প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন চলছে। তিনি ইতিমধ্যেই জেলা বিএনপির সেক্রেটারি পদে গোলাম ফারুক খোকনকে অধিষ্ঠিত করেছেন।
কমিটির বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন দৈনিক সংবাদচর্চাকে বলেন, ‘সম্মেলন হওয়ার পর আমরা পূর্নাঙ্গ কমিটির একটি প্রস্তাবিত তালিকা কেন্দ্রে প্রেরণ করেছি। তবে আন্দোলন সংগ্রাম চলে আসায় দলের নীতি-নির্ধারকরা আসায় হয়তো কমিটির বিষয়ে নজর দিতে পারেননি। আমাদেরকে নতুন করে কোনো কমিটি কেন্দ্রে জমা দেয়ার বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেননি। পূর্বে জমা দেয়া প্রস্তাবিত কমিটি এখন যাচাই-বাছাই হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতারা অবজারবেশন করছেন। যারা বিতর্কিত ভূমিকা রেখেছেন, আন্দোলন সংগ্রামে নিষ্ক্রীয় ছিলেন এবং সরকারী দলের সাথে আঁতাত করেছেন, তাদের বাদ দিয়ে যোগ্যতা এবং সক্রিয়তার ভিত্তিতে কমিটি করা হবে। কেন্দ্রীয় নেতারা এই কাজটিই করছেন।’
এক প্রশ্নের জবাবে গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমি জেলা বিএনপির দায়িত্বগ্রহণের আগে থেকেই স্থানীয় বিএনপিতে বলয়ভিত্তিক রাজনীতির চর্চা ছিলো। আমি চেষ্টা করেছি এই বলয় ভিত্তিক রাজনীতির অপচর্চা রোধ করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে। আমি এ-ও বলেছি যে, ব্যক্তি হবে দলের আর দল হবে সবার। কোনো ভাইয়ের স্লোগাণ চলবে না। দলের স্লোগাণ দিতে হবে। স্লোগাণ হবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার এবং আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। এখন অনেকেই তো চাইবে তার পছন্দের লোককে পদায়ন করতে। কিন্তু কেন্দ্র এই বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রেখেছে। আমরা আশাবাদি যে, যোগ্য লোকদেরকেই পূর্নাঙ্গ কমিটিতে রাখা হবে।’

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ