আজ বৃহস্পতিবার, ৪ঠা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

জামায়াত থাকবে জানলে ঐক্যফ্রন্টে আসতাম না: ড. কামাল

জামায়াত থাকবে জানলে

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে জামায়াত নেতাদের মনোনয়ন দেওয়াটা বোকামি। তারা ধানের শীষ নিয়ে প্রার্থী হবে জানলে ঐক্যফ্রন্টের দায়িত্ব নিতাম না।

বুধবার ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাত্কারে তিনি এই মন্তব্য করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সাক্ষাত্কারটি প্রকাশিত হয়েছে। সাক্ষাত্কারে কামাল হোসেন বলেন, আমি কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঘোষণাকারী নই। আমি ৮০ বছরের একজন বৃদ্ধ। আমি শুধু দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছি। আমি ভোটের দিনের অপেক্ষায় আছি। ভোটের দিন একটি স্বাধীনতার দিন। যদি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয় তাহলে তা হবে দ্বিতীয় স্বাধীনতার দিন। এখন গণতন্ত্র বিপদগ্রস্ত। যদি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়, তাহলে স্বাধীনতা অর্থপূর্ণ হবে।

সাক্ষাত্কারে কামাল হোসেন বলেন, কয়েক মাস আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এসে আমাকে বললেন ফ্রন্টের নেতৃত্ব দিতে। দেশে কি হচ্ছে তা আমি ভালোভাবেই অবগত, তাই রাজি হয়ে গেলাম।

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর ২২ জন নেতার বিএনপি’র প্রতীকে নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, দুঃখের সঙ্গে আমাকে বলতে হচ্ছে যে, জামায়াত নেতাদের মনোনয়ন দেওয়াটা বোকামি। আমি লিখিত দিয়েছি যে, জামায়াতকে কোনো সমর্থন দেওয়া এবং ধর্ম, মৌলবাদ, চরমপন্থাকে সামনে আনা যাবে না। যদি জানতাম জামায়াত নেতারা বিএনপির প্রতীকে নির্বাচন করবেন, তাহলে আমি এতে যোগ দিতাম না। কিন্তু ভবিষ্যত্ সরকারে যদি জামায়াত নেতাদের কোনো ভূমিকা থাকে, তাহলে আমি তাদের সঙ্গে একদিনও থাকবো না।

ভারতের সঙ্গে বিএনপি’র সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতকে বিএনপি বলেছে, তারা ভুল ছিল। বেগম খালেদা জিয়া যখন ভারত গেলেন, তখন তিনি তাদের এটা বলেছেন। এটা তাদের ভুল উপলব্ধির প্রক্রিয়ার অংশ, খালেদা জিয়া নিজেদের অবস্থান সংশোধন শুরু করেছেন। বিএনপি’র সঙ্গে জোট করার বিষয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে এর আগেও ঐক্য হয়েছে। এই দেশ কোনো বিশেষ দল বা পরিবারের নয়। ক্ষমতায় গেলে প্রধানমন্ত্রী হবেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, আমি, হ্যাঁ বা না বলবো না। কিন্তু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কোনো পদ ও বেতন ছাড়াই কাজ করতে আগ্রহী।

দেশের পুলিশ ও প্রশাসনে দলীয়করণের অভিযোগের প্রসঙ্গে কামাল হোসেন বলেন, পুলিশের দিকে দেখুন তারা কী করছে? পুলিশ এখন দলীয় লাঠিয়ালে পরিণত হয়েছে। এর অবসান হওয়া দরকার। আমি পাঁচ দশকের ক্যারিয়ারে এতো বিপুল সংখ্যক গ্রেফতার দেখিনি। এটা ‘সম্পূর্ণ স্বৈরতন্ত্র’। আমরা ভারতের প্রকৃত সহযোগিতা চাই। এ সময় আওয়ামী লীগের দিকে ভারতের ঝুঁকে থাকার ইঙ্গিত দেন তিনি। প্রতিবেদনে কামাল হোসেনের রাজনৈতিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে।