রাজনৈতিক প্রতিবেদক:
নারায়ণগঞ্জ জেলাকে বলা হতো আন্দোলন সংগ্রামের সূর্য। বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে যে কোন অধিকার ও রাজনৈতিক চাওয়া পাওয়া পরিপূর্ণ করতে ছাত্রদের ভূমিকা ছিল বেশি। আজ সে ছাত্র আন্দোলন ক্রমশ ঝিমিয়ে পড়ছে। আবার অনেক সংগঠন অকেজো হয়ে পড়েছে বেশ কয়েক বছর ধরে। ছাত্রদল বা ছাত্রলীগের কমিটিতে অনেক অছাত্ররা ঢুকে পড়ায় প্রকৃত ছাত্ররা কমিটিতে আসতে পারে না বলে দায়ি করছেন অনেক ছাত্ররা। রাজনীতির মেরুদন্ড ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর কমিটিতে দক্ষতার অভাব ও পারিবারিক কেন্দ্রীক অনেকে বড় বড় পদ দখল করে রাখার কারনে অনেকেই ঠাই করতে পারছেন না কমিটিতে। তোলারাম কলেজের নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ছাত্রদের সাথে কথা বলে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও মহানগর ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ কমিটিতে একই পরিবারের লোকজনসহ এমনকি ছাত্রদল ও ছাত্রলীগ নেতাদের অত্মীয়তার বন্ধনকে কেন্দ্র করে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন। এসব কমিটিতে প্রভাবশালী পরিবারের লোকজনসহ আত্মীয় স্বজনকে কমিটিতে ঠাঁই করে দেয়ায় প্রকৃত ছাত্র ও ত্যাগী নেতানেত্রীদের পরিবারের লোকজন কমিটিতে ঠাঁই পাচ্ছেন না। প্রকৃতভাবে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও মহানগর ছাত্রদল, ছাত্রলীগ কমিটিতে আত্মীয়করন রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনির আত্মীয় মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদের ভাই হন। ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ ও সাধারন সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রাফেল, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, সাধারন সম্পাদক বিন্দু, ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজিব, মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সাহেদ আহাম্মেদ, সাধারন সম্পাদক মমিনুর রহমান বাবু তারা ঘুরে ফিরে প্রভাবশালীদের কজ্বায় বন্দি আত্মীয়তার বন্ধনে রয়েছে বলেই এসব কমিটি পূর্নাঙ্গ হচ্ছে না। ১ বছরের মেয়াদী কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও পূর্নাঙ্গতা পায় নি। যার কারনে অনেকেই রাজনীতির সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন নামে মাত্র। এসব কমিটি পূর্ণাঙ্গতা পেলে অনেক মেধাবী ছাত্ররা ঠাঁই পেতে পারতো কমিটিতে। আর অছাত্ররা ছাত্রলীগ ও ছাত্রদল নেতা বলে দাবিয়ে বেড়াতে পারতেন না।
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়েছে গত ২৯ এপ্রিল। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত জেলা ছাত্রলীগের কমিটিকে এক বছরের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়। এতে জেলা কমিটির সভাপতি করা হয়েছে আজিজুর রহমান আজিজ এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে আশরাফুল ইসমাঈল রাফেলকে। ১০ মে বৃহস্পতিবার এ কমিটি দেয়া হয়। অপরদিকে একই দিন নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রলীগের কমিটিও অনুমোদন দেয়া হয়েছে। হাবিবুর রহমান রিয়াদকে সভাপতি ও হাসনাত রহমান বিন্দুকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য ওই কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়।
গত বছরের (৫ জুন) দুপুরে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন অর রশিদ মামুন ও সাধারন সম্পাদক আকরামুল হাসান স্বাক্ষরিত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। মশিউর রহমান রনিকে সভাপতি ও খাইরুল ইসলাম সজীবকে সাধারণ সম্পাদক করে ১২ সদস্যের নারায়ণগঞ্জে জেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা দেয়া হয়। অপরদিকে সাহেদ আহাম্মেদকে সভাপতি, মমিনুর রহমান বাবুকে সাধারণ সম্পাদক এবং মরিুফুল ইসলাম পাপনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ মহানগর ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। খোজ নিয়ে জানা গেছে, মশিউর রহমান রনি কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য শিল্পপতি শাহ আলমের অনুগত ও খায়রুল ইসলাম সজীব সোনারগাঁ উপজেলা চেয়ারম্যান আজহারুল ইসলাম মান্নানের পুত্র। ছাত্রদলের কমিটিতে পদধারী নেতারা থাকলেও তাদের নেই কোন কার্যক্রম। অপরদিকে ছাত্রলীগের কমিটির নেই পূর্ণতা। দলটি ক্ষমতায় থাকার পরও পুনাঙ্গ কমিটি গঠন না করতে পারায় ছাত্রলীগের ব্যর্থতার দায় রয়েছে বলে মনে করছেন ছাত্ররা। তবে দলের নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি নেই! কমিটিগুলো পূর্ণাঙ্গ রূপ পেতে পারতো বলে জানান পদ প্রার্থীরা। স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ মন্ত্রীর নজরধারী না থাকার কারন রয়েছে বলে বলছেন ছাত্ররা।