আজ মঙ্গলবার, ৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

চ্যালেঞ্জের মুখে শামীম ওসমান বঞ্চিত হতে পারে দলীয় মনোনয়ন!

চ্যালেঞ্জের মুখে শামীম ওসমান

চ্যালেঞ্জের মুখে শামীম ওসমান সংবাদচর্চা রিপোর্ট: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে নারায়ণগঞ্জ ৪ আসনে বিনা ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। একদিকে সাবেক এমপি গিয়াসউদ্দিন, অন্যদিকে শ্রমিক নেতা কাউসার আহম্মেদ পলাশ, এই দুইজনই এখন শামীম ওসমানের চিন্তার মূল কারণ হয়ে ওঠেছে। আগামী নির্বাচনকে ঘিরে এই দুইজন দুইভাবে এই সাংসদের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাড়িয়েছে।

এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে শামীম ওসমানের মূল প্রতিবন্ধকতা হয়ে দেখা দিয়েছেন জাতীয় শ্রমিক লীগের শ্রমিক উন্নয়ন ও কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহম্মেদ পলাশ। যদিও দুই দফা দু’টি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ শামীম ওসমানের মনোনয়ন নিশ্চিত (?) করে দিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এমন খবরকে ‘গুজব’ বলেই উড়িয়ে দিয়েছে। তাই ধরে নেয়া হচ্ছে, মনোনয়নের ক্ষেত্রে শামীম ওসমানের শক্ত প্রতিপক্ষ এখন কাউসার আহম্মেদ পলাশ।

ধারণা করা যাচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত থাকা কাউসার আহম্মেদ পলাশের মনোনয়ন চাওয়াকে কেন্দ্রীয় পর্যায়েও বেশ গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। বিভিন্ন বির্তকীত কর্মকান্ডের কারণে শামীম ওসমানের উপর আস্থা হারাচ্ছে আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। নিশ্চিত করে এখনই বলা যাচ্ছে না যে শামীম ওসমানই এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন পাচ্ছেন। আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী থেকে ঘোষিত না হওয়া পর্যন্ত কার মনোনয়ন নিশ্চিত হয়েছে বা হয়নি তা ‘গুজবের’ মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।

সূত্রের মতে, কাউসার আহম্মেদ পলাশকে প্রকাশ্যে প্রতিপক্ষ না ভাবলেও এই পলাশই যে শামীম ওসমানের কপালে বলিরেখা টেনে দিয়েছেন সে অনেকের কাছেই স্পষ্ট। কেননা, পলাশই যে মনোনয়ন চাচ্ছেন শুধু তাই নয়, বরং পলাশের পক্ষ হয়ে শামীম ওসমান বিরোধী একটা শক্তি মাঠে নেমেছেন এই সাংসদকে ঠেকানোর জন্য। আর এই পক্ষটি পলাশকেই ‘তুরুপের তাস’ হিসেবে ব্যবহার করছেন। ফলে মনোনয়নের ব্যাপারটি এখনই জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না যে শামীম ওসমানই পাচ্ছেন।

অপরদিকে শামীম ওসমান যদি এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েও যান তারপরও কাকে মোকাবেলা করতে হবে শক্ত এক প্রতিপক্ষের। আর তিনি হলেন সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। রাজনীতির মাঠে বেশ অভিজ্ঞ গিয়াসউদ্দিনই যে এবারের নির্বাচনে বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাচ্ছেন সে নিয়ে তেমন কোনো সন্দেহ নেই। ফলে ভোটের মাঠে এই অভিজ্ঞ রাজনীতিককে মোকাবেলা করে জয়ের মসনদে বসাটা খুব একটা সহজ হবে না এই সাংসদের জন্য।

যদিও শামীম ওসমান এবারের নির্বাচনে তার প্রতিপক্ষ হিসেবে অপেক্ষাকৃত দুর্বল ব্যক্তিকেই প্রত্যাশা করছেন। কিন্তু বিএনপি যদি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসেন তাহলে নারায়ণগঞ্জ-৪ থেকে অভিজ্ঞ গিয়াসউদ্দিনই দলীয় মনোনয়ন পাবেন, এমন সম্ভাবনা এখন ৮০ শতাংশ। আর তৃণমূল থেকেও গিয়াসউদ্দিনকেই এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে চাওয়া হচ্ছে।

সূত্র মতে, নারায়ণগঞ্জের রাজনীতিতে যে কজন অভিজ্ঞ ব্যক্তি রয়েছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন। ইউনিয়ণ পরিষদ থেকে শুরু করে সর্বশেষ জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। ছাত্র রাজনীতি দিয়ে রাজনীতি শুরু করা গিয়াসউদ্দিনের রয়েছে বর্ণাঢ্য এক রাজনৈতিক জীবন। আর এ পর্যন্ত পৌঁছাতে তিনি অর্জন করেছেন ব্যাপক অভিজ্ঞতা। ফলে তিনি বেশ ভালো করেই জানেন ভোটের মাঠের লড়াইটা। আর গিয়াসউদ্দিন যে এই পথে বেশ অভিজ্ঞ সেটিও জানেন বর্তমান সাংসদ শামীম ওসমান। এ কারণেই গিয়াসউদ্দিন এই সাংসদের চিন্তার অন্যতম আরেক কারণে হয়ে ওঠেছেন।