সংবাদচর্চা রিপোর্টঃ
প্রসূতি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলে অবস্থা গুরুত্বর বলে পরিচিত প্রাইভেট ক্লিনিকে দ্রুত অপারেশন করতে পরামর্শ দিয়ে চার ঘন্টা পর অপারেশন করেন চিকিৎসক। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক হয়েও ক্লিনিকে ব্যবসা ঠিক রাখতে বিলম্ব করে অপারেশন করাতে মৃত্যু হয় ওই প্রসূতির এমন অভিযোগ উঠেছে নারাণগঞ্জ ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের গাইনী বিভাগের সিনিয়র কনসল্টেন্ট ডা. জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার (৫ মে) রাত ১২ টা পর্যন্ত শহরের চাষাড়ার জেনারেল হাসপাতালে অবরুদ্ধ করে রাখে নিহত কবিতার স্বজনরা।
নিহতের বড় ভাই তাইজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, সকালে বোনকে খানপুরের ৩০০ শয্যা হাসপাতালে চেক-আপের জন্য নিয়ে গেলে ডাক্তার জাহাঙ্গীর আলম রিপোর্ট দেখে ১ ঘন্টার মধ্যে অপারেশন করতে হবে বলে জানান। তিনি পার্শ্ববর্তী ‘ইউনিক হাসপাতাল’ নামে এক প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। চিকিৎসকের কথামতো হাসপাতালে নিয়ে গেলে অপারেশনের জন্য ১৫ হাজার জমা টাকা জমা দিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টায় ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় রোগীকে। এদিকে চিকিৎসক এক ঘন্টার কথা বলে হাসপাতালে আসেন বিকাল ৪টায়। এসেই অপারেশন কক্ষে প্রবেশ করে ১৫ মিনিটরে মধ্যে বেরিয়ে সফল অপারেশন হয়েছে এবং মা ও বাচ্চা সুস্থ আছে জানান। পরবর্তীতে হাসপতাল থেকে তরিঘড়ি করে বেরিয়ে যান। অমার বোন সুস্থ আছে বলার এক ঘন্টা পর ডাক্তার ফোন দিয়ে বলে রোগীর অবস্থা ভালো না জরুরী ভাবে ‘ও’ নেগেটিভ রক্ত লাগবে। ১৫ মিনিট পর রক্ত জোগাড় করে এসে দেখি আমার বোন মারা গেছে।
নিহতের ভাই তাইজুল অভিযোগ করে বলেন, ডাক্তারের গাফিলতিতে আমার বোন আগেই মারা গিয়েছিল। কিন্তু তারা বিষয়টি ধামাপাচা দিতে এই নাটক সাজিয়েছে।
এদিকে অভিযুক্ত চিকিৎসক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অপারেশনের পর রোগী ও বাচ্চা দুজনেই সুস্থ ছিলো। পরে আমি চলে যাবার পর কি হয়েছে সেটা বলতে পারবো না।
ঘটনার পর ক্ষুব্দ স্বজনরা চিকিৎসক জাহাঙ্গীর অলমের কাছে কৈফিয়ত চাইলে তিনি পালিয়ে শহরের চাষাড়ার প্রাইম জেনারেল হাসপাতালে আশ্রয় নেন। পরে স্বজনরা সেখানে এসে জড়ো হন এবং চিকিৎসককে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে রাত সাড়ে ১১ টার দিকে খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পঠিয়েছিলাম। নিহতের স্বজনরা চিকিৎসককে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে তারা শান্ত হয়েছেন কিন্তু তারা কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ হলে ব্যবস্থা নেয়া যাবে।